Click the image to explore all Offers

অণুগল্প।। বচনবাগীশ ।। রমলা মুখার্জী



 
 
সুমন দুম করে উপমাকে বিয়ে করে নিয়ে এল। মীরাদেবী মনে খুব আঘাত পেলেন। কিন্তু সুমন নিচুশ্রেণীর মেয়ে উপমাকে বিয়ে করার কথা মাকে বলেনি কারণ সে জানত প্রাচীনপন্থী মীরাদেবী কখনই এই বিয়েতে মত দেবেন না।  তাই মীরাদেবীর যত রাগ গিয়ে পড়ল বৌমা উপমার ওপর।
নিচু জাত বলে উঠতে বসতে তিনি হেনস্থা করতেন উপমাকে।        
       পাঁচ বছর হয়ে গেল উপমার সন্তান আসছে না। বাক্যবাগীশ মীরাদেবী উপমাকে প্রায়ই কথা শোনাতেন। বেশি কথাবলাই ছিল মীরাদেবীর একমাত্র দোষ। সারাদিন অনর্গল কথা বলতেন তিনি। বাঁজা বলে উপমাকে অপমান করতেও ছাড়তেন না। উপমাও দু-চার কথা ইদানীং শুনিয়ে দিত, প্রায়ই অশান্তি লেগে যেত দুজনকার।
     অনেক চেষ্টা করে উপমার ছেলে হল। উপমার চাকরি বজায় রাখার জন্য আয়া রাখা হল। আয়ার সামনে পদে পদে অপমান উপমা কিছুতেই মেনে নেবে না। তাই বাক‍্যবাগীশ  মীরাদেবীর স্থান হল বৃদ্ধাশ্রম। 
  সুমনের ছেলে  অনুপম বড় হচ্ছে কিন্তু কথা বলতে পারছে না। ডাক্তারবাবু বললেন ছেলের সঙ্গে সবসময় কথা বলা দরকার যা নিজের জন ছাড়া অসম্ভব। সুমন কি যে করবে ভেবে পেল না। তার এই সংকটে তার মায়ের কথাই মনে পড়তে লাগল। সে উপমার অমতেই প্রায় জোর করে মীরাদেবীকে বৃদ্ধাশ্রম থেকে বাড়িতে নিয়ে এল। 
    বাকপটু মীরাদেবীর সহায়তায় সুমনের ছেলে অনুপমের মুখে আধো আধো বোল অচিরেই ফুটল। মীরাদেবীও বকবক করার নতুন সঙ্গী পেয়ে খুব খুশি। উপমাও নিশ্চিত মনে চাকরি করতে যেতে পারল। তাদের আর আয়া রাখারও প্রয়োজন হল না, কারণ অনুপমের দেখভাল মীরাদেবী স্বেচ্ছায় কাঁধে তুলে নিলেন। তিনি বললেন, "কত আশার নাতি আমার , আর সে কিনা মানুষ হবে আয়ার কাছে! কভি নেহি!"
------------------------------

ঠিকানা   বৈঁচী, বিবেকানন্দপল্লী, 
জেলা হুগলী, পিন 712134


Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.