নিউ নর্মাল
দেবশ্রী সরকার বিশ্বাস
স্বর্গে মা দুর্গা খুবই ব্যাস্ত,হাতে আর তো মাত্র কটা দিন বাকি,এর মধ্যেই সব কাজ সারতে হবে।'সরু ও সরু মা যেমন মাপ বলে দিয়েছি সেই মাপে কাপড়ের টুকরো গুলো তাড়াতাড়ি কাট মা',সরু অথাৎ সরস্বতী মায়ের কথা মত কাজ শুরু করে।মা দুর্গা সরুর কাটা কাপড়গুলি জুরে মাস্ক বানানোর কাজে লেগে পড়েন।সবার আলাদা আলাদা,চার দিনে চারটি করে লাগবে,ওই র্সাজিকাল নাকি বলে ও পড়ে সারা দিন রাত থাকা যাবে না,বদ্ধ প্যান্ডেল তায় পাখা নেই দম বন্ধ হয়ে যাবে যে,তাই মা নিজের হাতে নরম কাপড়ের মাস্ক বানাচ্ছেন সবার জন্য। কিন্তু গণুর মাস্ক নিয়ে পড়লেন মুস্কিলে, কিভাবে বানাবেন?নাক এক হাত আগে তো মুখ এক হাত পিছনে,সমস্যা গম্ভীর;কাতু অর্থাৎ কার্তিক হঠাৎ বলে উঠল 'অাচ্ছা মা পাস বালিসের ওয়ার ওটা কেমন হবে চলবে না?'ওহ্ ,মা যেন হালে পানি পেলেন ' তাইতো ,কাতু তো কথাটা মন্দ বলেনি,যাক এ সমস্যাটা তবে মিটল বোধহয়'।কিন্তু 'লকু টা গেল কোথায়,সেই কখন বিষ্ণু দেবের কাছে নেশা মুক্তির ওষুধ অানতে গেছে ফেরার নাম গন্ধ নেই,ফাঁকি মারতে মেয়েটা একেবারে ওস্তাদ;বুড়োর যা নেশা,ওই গাঁজা-ভাঁঙের নেশা না ছাড়াতে পারলে মর্ত্যে নিয়ে যাই কি করে?এমন এক রোগ জুটেছে যা আবার নাকি বুড়ো-রুগ্ন আর নেশাগ্রস্ত দের আগে ধরে,আর ওই মহাদেব বুড়ো কে না নিয়ে গেলেও তো আবার চলবে না,এই যা!অাবার বুড়োটার নাম নিয়ে ফেললাম,আমার হয়েছে যত জ্বালা!'
ভাবলাম 'এ বছরটা বুঝি রেহাই দিলে, তা না আবার মণ্ডম বেঁধে ডাকাডাকি শুরু করলে,এখন এই ছেলে পুলে,বুড়ো বর নিয়ে আবার চলো'।
এমন সময় এক ফেরিওয়ালা এসে হাঁকাহাঁকি শুরু করল 'স্যানিটাইজার লাগবে নাকি মা জননী?' 'দাঁড়াও গো লাগবে' ঘর থেকে হাঁক পারলেন মা।অনলাইনে তো অনেক দিন অর্ডার দিয়েছি,এখানে সার্ভিস খুব খারাপ মর্ত্যের মতো নয়,এর কাছেই কিনে নিই গে,অাধ ঘন্টা ছাড়াছাড়া,তায় আমার আবার দশ হাত,তিন-চার বোতল লাগবে নিশ্চই,'চারটে দাও বুঝলে',অবশেষে চার বোতল স্যানিটাইজার বগলে নিয়ে মা ঘরে এলেন।'গণু-এই গণেশ ব্যাগ টা গোছানোয় অামায় একটু সাহায্য কর বাবা,আর যে পারিনে!'
' মুখে মাস্ক আর হাতে স্যানিটাইজার মেখে কি যে পুজো হবে তা তো বাপু বুঝিনে! তবু যেতে তো হবেই।অাবার কি যেন নাম দিয়েছে-নিউ নর্মাল নাকি?'
'চল সবাই মিলে একবার দেখেই আসি এই নিউ নর্মাল ব্যাপারটা আসলে কি।'
---------------------------
দেবশ্রী সরকার বিশ্বাস
আরামবাগ, হুগলী