----------------------------
অনেক দিন থেকেই জুঁই ভাবছে মা গঙ্গা পাবলিকেশন্স -এ যাবে । এতো চাপ অফিসে ,সময় বের করাই মুশকিল হয়ে পড়েছে । তারউপর দুজন স্টাফ ছুটিতে , এমনিতেই অফিস গুলোতে লোক নেই ! প্রতিদিন অফিসের ব্যাগে টিফিন বক্সের পাশে স্ক্রিপ্টের দলা টা নিয়ে বেরোয় জুঁই সেন । লিটিল ম্যাগাজিনে লিখছে ইদানিং । মাঝে মাঝে দু একটা কবিতা দৈনিক গুলোর সাময়িকীতে দেখা যায় । একটি কবিতার বই প্রকাশ করবে বলেঅনেকদিনের ইচ্ছে । শহরের একজন সিনিয়র লেখক দাদা ওই পাবলিকেশনের নামটা দিয়েছে জুঁইকে ।
অফিসের টিফিন পিরিয়ডে অনল দা এসে বলল আজ তোমার একটি কবিতা দেখলাম কবি সমাচার ম্যাগাজিনে । সকালে ওই পত্রিকার সম্পাদক মানস দত্ত এসেছিল । পত্রিকা দিয়ে দুশ টাকা নিয়ে গেলো । অবশ্য মানস আমার ছোটবেলার বন্ধু। দুশ টাকা ?কেন ওই পত্রিকার দাম তো দশ টাকা ! রুটির শেষ টুকরো কামড় দিয়ে জুঁই বলে ।
অনল বলল -না না ওই একটু হেল্প আর কী ?লিটিল ম্যাগ গুলো তো এভাবেই বন্ধু নির্ভর ! বিজ্ঞাপন তো আর জোটে না ,হয় কেউ ডোনেট করে নইলে নিজের জমানো টাকায় বের করে !
জুঁই অনলের কথা শুনে অবাক হয় অথচ সেদিন এই লিটিল ম্যাগ নিয়ে কতই না বিদ্রুপ করেছিল ।
অনল হয়তো বুঝতে পেরেছে তাই বলে বসলো অবাক হলে জুঁই ? সেদিন আমি বিভাস কে চটাতে ওই ধরনের কথা গুলো বলেছিলাম।
জুঁই বলল এই লিটিল ম্যাগ আছে বলেই বড় পত্রিকা তৈরি করা লেখক পায় নইলে ......!
লিটিল ম্যাগ লেখক তৈরি করে । আজ যত নামকরা লেখক আছেন কে না লেখেনি লিটিল ম্যাগে ? কোচবিহারের লেখক অমিয় ভূষণ মজুমদার তো লিটিল ম্যাগে লিখেই ফেমাস !উনি বড় পত্রিকার ধার ঘেঁষে চলেননি কোনদিন বরং তারাই এসেছে তাঁর কাছে..
আজ ঠিক যাবে মা গঙ্গা পাবলিকেশন্স -এ l অনল কে এই টিফিন পিরিয়ডেই বলে রাখলো ।
অফিস থেকে ঠিক চারটেরসময় বেরিয়ে পড়ল জুঁই l কলেজ স্ট্রিট । ওখানে সুজয় থাকে বুক হাউসে l ওকে ফোন করে নিতে হবে lকেননা মা গঙ্গা পাবলিকেশন্স এর অফিসটি একটু গলির ভেতর । কলকাতায় তো খুব বেশিদিন হয়নি তাই ঠিক মতো সব চেনাও হয়নি । আর কলকাতাতে যারা দীর্ঘদিন থেকে আছে তারাও কি সবটা চেনে ?
সুজয় কে বার বার রিং করেও উত্তর পেলনা জুঁই। তবে কি একাই যাবে ? ভাবতে ভাবতে চলেই এলো কলেজ স্ট্রিটে।এবার বর্ণমালার পাশ দিয়ে যে গলিটা বেরিয়ে গেছে সেখান থেকে একটু এগিয়ে গিয়ে মা গঙ্গার অফিস ।
ইষ্ট দেবতার নাম নিয়ে ঢুকে পড়ল গলিতে। কিছুদূর এগিয়ে গিয়ে একজন কে জিজ্ঞেস করতে সে দেখিয়ে দিলো । কাঠের দোতালা । নড়বড়ে সিঁড়ি । সিঁড়ি দিয়ে উঠতে গা কাঁপছে জুঁই এর । সিঁড়ির বাঁক ঘুরতেই একটা গন্ধ নাকে এলো ! ঠিক পাতা পোড়া গন্ধের মতো । অনেক চেষ্টা করলো কিন্তু গন্ধটা বুঝতে পারলো না। দরজার পর্দা সরিয়ে জুঁই দেখলো একজন প্রবীণ মানুষ এক মনে টেবিলে রাখা কী যেন পড়ছেন ।
জুঁই অতি সন্তর্পণে বললে আসব ?
দু বার বলার পর মাথা নেড়ে ভিতরে আসার সম্মতি দিলেন ।
মস্তবড় কাঠের টেবিলের সামনে হাতল ছাড়া দুটি চেয়ার রাখা আছে । হাতের ইশারায় ভদ্রলোক বললেন বসো ।
প্রায় মিনিট পাঁচেক জুঁই বসে রইলো । জুঁই কে উসখুস করতে দেখে ভদ্রলোকটি এবার মুখ খুললেন -কী ব্যাপার ?বই টই নাকি ?
এত গম্ভীর গলা শুনে জুঁই একটু ভয়ই পেলো তবে পরের কথা গুলো শুনে অনেকটা হালকা হয়ে বললে আমি একটি কবিতার বই বের করব বলে এসেছি।
প্রথম ?
হ্যাঁ !
কবে থেকে লিখছো ?
তা বছর সাতেক !
দেখি কী এনেছো ?বলে পাবলিশার ভদ্রলোকটি জুঁই র দিকে হাত বাড়ায় ।
জুঁই ব্যাগ থেকে কবিতার দলা পাকানো স্ক্রিপ্ট টা দেয়।
টেবিলে রাখা কলিং বেল টিপতেই এক ছোকরা এলো এবং তাকে দু কাপ চা আনতে বললো ।
ঘড়ির দিকে তাকালো জুঁই সাড়ে পাঁচটা হয়ে গেলো ! অবশ্য বড়দিনের বেলা তাই আরও আধ ঘন্টা পরিষ্কার আলো পাওয়া যাবে ফিরতে অসুবিধা হবেনা ।
ছোকরাটা দুকাপ চা রেখেচলে গেলো l মাটির ভাঁড়ে । এখানে দোতালায় উঠতে নিচে দেখেছিল একটা চায়ের দোকান। মাটির ভাঁড়ে সবাই চা খাচ্ছে । সেই চা ই হবে তা হোক। অফিস ফেরত !এখন একটু চা ভালো লাগবে , মনে মনে ভাবলো জুঁই । কিন্তু ভদ্রলোকের তো চায়ের দিকে ভ্রুক্ষেপ নেই ! জুঁই ভয়ে ভয়ে বললো -চা ঠান্ডা হলো যে !
আরও কিছুক্ষণ চোখ বুলিয়ে এক ঢোকে চা টা খেয়ে নিয়ে বললেন l হবে না ।
এই বই আমি করতে পারব না ।
জুঁই বললো কেন ? কবিতা হয়নি ?
হয়েছে ! তবে তোমার কবিতা ছাপা যাবে না তাহলে আমার সাথে একজনের ঝগড়া বেঁধে যাবে যে পরকালে গিয়ে।
জুঁই বেশ দ্বন্দ্বে পড়ে গেলো ! কী বলছেন তিনি !
তাহলে দিন আমি যাই ! সন্ধ্যে হলে যেতে অসুবিধা হবে ।
হোক না ! আমি কি বাঘ ? যে তুমি অতো ভয় পাচ্ছো ?
এবার আবার কলিং বেল টিপলেন আবার সেই ছোকরা এলো, বলো কী খাবে ? চাউমিন না কচুরি ?
না না আমি কিছু খাবো না বলে জুঁই উঠে দাঁড়ায় ।
ছোকরা টাকে চারটে কচুরি আর চা আনতে বলে বললো তোমার বই ছাপা হবে মা তবে একটি শর্ত আছে !
শর্ত টা খুব সামান্য ! আমি একটি প্রশ্ন করব তুমি হ্যাঁ বা না বলবে । এতে আর অন্য কিছু থাকবে না ! এই বলে তিনি আবার আগাগোড়া কবিতা গুলো পড়লেন । ভালো করে বায়োডাটাটাও দেখে নিলেন ।
এর ফাঁকে কচুরি চা এলো । সেগুলো খেয়ে আবার বললেন এবার শর্ত টা বলি ?
তোমার কবিতা পড়ে আমার খুব ভালো লেগেছে । তুমি তো বিয়ে করনি মনে হচ্ছে । তা আমার একটি ছেলে আছে, ওর জন্য আমি লেখক পাত্রী খুঁজছি ! তুমি যদি রাজি থাকো তো তোমার অবিভাবকদের সাথে কথা বলি।
কী বলবে বুঝে উঠতে পারছিলো না জুঁই। এতো রীতিমত ব্লাকমেইল করা । তবু বললো আমি ভেবে দেখে জানাব ,আমার পাণ্ডুলিপি টা দিন !
কেন বই ছাপবে না ?
না । পরে আপনার সাথে যোগাযোগ করব । কী মা ভয় পেলে ? ঠিক আছে তুমি যাও। পাণ্ডুলিপিতে তো তোমার অ্যাড্রেস আছে । ফোন নম্বরও আছে আমি যোগাযোগ করে নেবো। যদি চাও পরে ফেরত দিয়ে আসব ।
জুঁই দেখলো পরিস্থিতি টা কেমন জানি ! এখান থেকে বের হতে হবে তাড়াতাড়ি । বললো আসি !
মাসির বাড়িতে থেকে অফিস করে জুঁই । প্রথম পোস্টিং একেবারে খোদ কলকাতায় । না করেনি কারণ এখানে থাকলে ওর লেখালিখি টা ভালো হবে আর কলকাতার সুবিধা টা পাওয়া যাবে । তার উপর মাসির ছেলেপুলে নেই ।
দরজায় টোকা দিতে মাসিই দরজা খুলে দিলো ! একেবারে সোজা সোফায় বসে বললো মাসি এক গ্লাস জল দাও তো ?
কি রে এতো ঘামছিস কেন ?
বলছি বলছি ! জল টা আগে খেয়ে নি ! বাপরে কী লোক গো ?
আমাকে কি না ছেলের বৌ করবে । লেখক পাত্রী চাই !
মাসি জল এনে বললো কে, কে রে লেখক পাত্রী চায় ?
জুঁই ধীরে সুস্থে সব কথা মাসিকে বললে মাসি উত্তরে বললো তা ভালোই তো সেই ঘরে বিয়ে হলে আপনার তো ভালোই হবে বছরে বারটা কবিতার বই বেরুবে । মন্দ কি ?দাঁড়া আজ রাতেই তোর মাকে ফোন করব ।
মাসি তুমি যে কী না ! ভদ্রলোককে দেখেতো সুবিধার মনে হয়নি তবে খারাপ অভিসন্ধি সেটিও বলা যাবে না । কী জানি পাগল হতে পারে ! কেননা লেখা পাগল মানুষ তো !
জুঁই ভাবে পাণ্ডুলিপি তো রেখে এলাম ওগুলো ফেরত নেবো কী করে ? আবার সুজয়ের কথা মনে এলো । মোবাইল টা নিয়ে সুজয়কে রিং করতেই পেয়ে গেলো । হ্যাঁ জুঁই বল !তখন আমি ফোন টা ধরতে পারিনি রে ! ব্যস্ত ছিলাম ।
সে হোক ! এখন যা বলছি তা মন দিয়ে শোন ! আমি মা গঙ্গা পাবলিকেশন্স -এ গিয়েছিলাম ! তিনি তো এক অদ্ভুত মানুষ!
ঠিক বলেছিস জুঁই সত্যি তিনি অদ্ভুত এবং ভালো মানুষ !
দুর্ শোনই আগে এই বলে জুঁই বলে -জানিস আমার বই ছাপানো র শর্ত কি !
কী দিয়েছেন ভদ্র লোক ?
ওই ভদ্রলোকের ছেলের সাথে আমার বিয়ে হলে তবে তিনি ছাপাবেন ! উনি নাকি একজন লেখক পাত্রী খুঁজছিলেন !
সেকি রে ! এমন প্রস্তাব গ্রহণ করিস নি ?
রাখ তো হেয়ালি ! তুই কাল গিয়ে আমার হয়ে ওই ভদ্রলোকের কাছ থেকে আমার পাণ্ডুলিপি এনে দিবি ! কাল এটাই তোর প্রথম কাজ হবে বুঝলি ?
অফিসে গিয়ে প্রথমেই অনল দার মুখোমুখি হতে হলো জুঁইয়ের । কী কবিতার বই হলো জুঁই ?
নিজের বসার টেবিলটা ডাস্টার দিয়ে ঝাড়তে ঝাড়তে উত্তর দিলো -আর কবিতার বই !
কেন ? খুঁজে পাওনি ?
না না খুঁজে পাব না কেন ?
পাবলিশার একজন অদ্ভুত মানুষ !
আমাকে বই ছাপানোর শর্ত কী দিলেন জানেন ? তাঁর ছেলের বৌ হতে হবে !তাঁর খুব পছন্দ হয়েছে আমাকে ! তিনি নাকি লেখক পাত্রী খুঁজছিলেন !
তাহলে তো তোমার পোয়াবারো জুঁই !
এই বলে অনল নিজের চেয়ারে বসে পড়ল । লোকটি রসিক , কি বলো ?
জুঁই বললো আমি আর যাচ্ছি না বাপু ।
পাণ্ডুলিপি টা রেখে দিয়েছেন ।
তাহলে ছাপাবেন দেখো ।
আপনি ক্ষেপেছেন অনল দা ! ওটা একটা কায়দা করলেন যাতে আমি আর একদিন যাই ! আমাকে তো ভাবতে বলেছেন।
এমন সময় টেবিলে রাখা মোবাইল ফোনটা বেজে উঠলো ।
কানে নিতেই সুজয়ের গলা পেলো জুঁই ।
হ্যাল জুঁই ?
হ্যাঁ , বল ?
এতো উপন্যাসের প্লট রে !
কেন ?
আমি সেই পাবলিশার ভদ্রলোকের কাছে তোর পাণ্ডুলিপি চাইতে গেছিলাম । সে কত কৈফিয়ত !তুমি কে ?ওই মেটা র সাথে কী সম্পর্ক ?তুমি কেন আসলে ! আমি কারো পাণ্ডুলিপি কারোকে দিই না । তবে ওকে বলো আমাকে যেন হ্যাঁ বা না জানায় ।
সেকি ? পাণ্ডুলিপি দেয়নি ?
না । তবে একটি ক্লু পেয়েছি ওনার টেবিলে । রাতের মধ্যেই তোর বইটি প্রেসে দিয়েছেন । আমি প্রচ্ছদ দেখলাম ! নীরব প্রেম /জুঁই সেন । মনে হচ্ছে ভদ্রলোক তোকে সারপ্রাইজ দেবে ।
দুর্ ! কিযে বলিস ! তবে মানুষটি কিন্তু ভালো !
কী যে দেখলি তুই ওঁর ভালো !
ঠিক আছে রাখ । পরে কথা হবে ।
অফিস শেষে বাড়ি ফিরে অবাক । কী কাণ্ড !একদম ভুতুড়ে কাণ্ড ।
বসবার ঘরের টেবিলের উপর রাখা পাঁচ খানি কবিতার বই ।
মাসি বললেন একটু আগে একটি রোগা পাতলা ছেলে এসে বই গুলো দিয়ে বলে গেল বাকি বই উনি যেন নিজে গিয়ে নিয়ে আসেন । সাথে একটি মুখ বন্ধ খাম ।
নিজের লেখা কবিতার বই দেখে মনে মনে ভীষণ খুশি হলো তারপর খামটি খুলে দেখলো একটি চিঠি । চিঠিটি হাতে নিয়ে খুলে পড়ল -প্রিয় কবি জুঁই ,তোমার কবিতার বই প্রকাশ করতে পেরে আমি খুশি ! কেননা তোমার বাবার কাছে আমার একটি ঋণ ছিলো । আজ আমি তাঁর জন্য এই জায়গায় এসেছি ! তিনি বেঁচে থাকলে খুশি হতেন । কোচবিহারে আমরা এক সাথে বড় হয়েছি । অনেক ঘটনা l লিখে শেষ হবে না । তবে জেনে নাও তাঁর প্রবল ইচ্ছে ছিলো আমার ছোট শ্রীমানের সাথে তার মেয়ের বিয়ে দেবে । তোমার বায়োডাটা দেখে কথাটি বলেছিলাম !আমাকে ভুল বুঝ না । তুমি কোচবিহারের দেবীবাড়ির নিতাই সেনের মেয়ে তো !
জুঁই অনেকক্ষন চিঠিটার দিকে তাকিয়ে রইলো !কিছুতেই হিসাব মিলাতে পারছিলো না ।
রাতে মা কে ফোন করলে তিনি সব কথাই বললেন । আর বললেন গগনের খোঁজ পেয়েছিস ! শুনেছিলাম ও একটি পাবলিশিং সংস্থা খুলেছে কলেজ স্ট্রিটে । তোর বাবা ওকে প্রেস করার টাকা দিয়েছিল । অনেকদিন যোগাযোগ নেই ।
জুঁই রাতে বিছানায় শুয়ে নিজের লেখা প্রথম কবিতার বই হাতে নিয়ে দেখছে । কিছুতেই ঘুম আসছে না কেবল মা গঙ্গা পাবলিশার মহাশয়ের কথাটি বারবার মনে পড়ছে ! পৃথিবীতে এমন মানুষও হয় । ভাবতে ভাবতে একসময় ঘুমিয়েই পড়ল ।
সানাই বাজছে চারদিকে হইচই !এর মাঝে বাবা এসে সেই পাবলিশার ভদ্রলোকটিকে বললেন -কি হে অবনী বলেছিলাম না তোর ছেলের সাথে আমার মেয়ের বিয়ে হবেই ....দেখলি তো ...!
কিরে ? উঠবি না ? কত বেলা হল ,অফিস নেই ?
জুঁই ধরমর করে উঠে দেখে মাসি ডাকছে কোথায় বাবা কোথায় বিয়ে বাড়ি !..পাশে রাখা কবিতার বইটিতে চোখ পড়ল --নীরব প্রেম /জুঁই সেন । মা গঙ্গা পাবলিকেশন , কলকাতা --
---------------------------------------------------------
শুভাশিস দাশ
দিনহাটা
কোচবিহার
মো :9932966949