প্রয়োজন
অঞ্জনা দেব রায়
রুবি হাসপাতাল থেকে গরিহাটের দিকে যেতে বোসপুকুর মেইন রোডের কাছে একটি ফ্ল্যাটে থাকে রুমা তার স্বামী তমাল ও তাদের মেয়ে পাখি।
রুমা ও তমালকে দেখে সুখী কাপল বলে মনে হয়।কিন্তু মাঝেমধ্যে রুমের ফ্ল্যাট থেকে চেঁচামেচি শোনা যায় আর কান্নার আওয়াজ ভেসে আসে। রুমার বিয়ে হয়েছে ত্রিশ বছর হল । বিয়ের পর পর তমাল রুমাকে খুব ভালবাসত আর সব সময় রুমার খেয়াল রাখতো । রুমাও তমালকে খুব ভালবাসত ও বিশ্বাস করত । তারপর কয়েক বছর পর ওদের মেয়ে হল । মেয়েকে নিয়ে তমাল ও রুমার আনন্দের সংসার খুব ভালো চলছিল। তমালের যাতায়াতের সুবিধার জন্য অফিসের কাছে কলকাতায় ফ্ল্যাট কিনে রুমারা চলে এসেছিল । কলকাতায় এসে তমাল একটু একটু করে পাল্টে গেল । তমাল ও রুমা দুজনেই গান করত । কলকাতায় এসে তমাল অফিসের পর গানের চর্চা করত , আর মাঝেমধ্যে গানের অনেক প্রোগ্রামও করত । কিন্তু রুমা মেয়ের দায়িত্ব পালন ও সংসারের কাজ কর্মের জন্য গানের চর্চা করার সময় পেত না । তারপর আবার তমাল তার মায়ের কথায় ঘরে মাঝে মধ্যে অশান্তি করত । তমালের মা ছিল অহংকারী ও দুষ্টু বুদ্ধি সম্পন্ন মহিলা । ছেলে বউ এর ভালো থাকা উনি সহ্য করতে পারতেন না । ফোন করে ছেলের কানে বানিয়ে বানিয়ে বউ এমনকি নাতনির নামে নালিশ করতে দ্বিধা করতেন না । তমালের অন্য ভাইয়েরা খুব ভালো, তারা মায়ের নালিশ শুনে ঘরে ঝগড়া না করে বউ ও ছেলে মেয়ের সাথে ভালো ব্যবহার করত আর খুব ভালো ও বাসত । কিন্তু তমালের কাছে তার মায়ের সব কথাই বেদবাক্য ছিল । ফলে তমাল মায়ের কথা শুনে ঘরে বউ ও মেয়েকে টিপ্পনি দিয়ে কথা শোনাতো আর ঝগড়া করত । তমালের মায়ের কথা ছিল বউরা হলো পরের বাড়ির মেয়ে , আর বউদের কোন কথা যেন ছেলেরা না শোনে । বউরা শুধু ঘরের কাজ করবে, উনাদের কথায় উঠবে বসবে আর ওনাদের সেবা করবে । কিন্তু তমালের বউ রুমা হল নিজে শিক্ষিত ও শিক্ষিত পরিবারের বড় লোকের মেয়ে । ফলেে রুমা কোন অন্যায় কথাা মেনে নিতে পারত না আর তার জন্য অশান্তি হতো ঘরে। । রুমাা কিন্তু বিয়ের পর শ্বশুরবাড়ির সবাইকে শ্রদ্ধা ও সম্মাান করে ও সবাইকে আপন করে নিজেকে সবার কাছে প্রিয় করে রাখতে চেয়েছিল । কিন্ত বিয়ের ত্রিশ বছর পর এসে দেখল ও বুুঝল রুমা ছিল তমাল ও তার পরিবারের কাছে শুধুই প্রয়োজন মাত্র ।
তারিখ- ১২/১০/২০২০
ঠিকানা- ৫৫৩, পি মজুমদার রোড, কলকাতা - ৭৮
ফোন নম্বর - ৯৩৩০৬১৭১২৮/৯৪৩২১৬০১০৯