অঙ্কিতা পাল
সোমনাথ বাবু বিদেশে থাকেন। প্রায় ত্রিশ বছর পর দেশে ফিরলেন। কলকাতা বিমানবন্দর থেকে ট্যাক্সি করে ২০ নং লেনের ভবানীপুরে সেই পুরনো হলদে রংয়ের বাড়িতে। কলিং বেল দিতে না দিতেই একজন বছর পঁয়ত্রিশের যুবক বেরিয়ে এলেন।
সোমনাথ বাবু তাকে দেখে জিজ্ঞাসা করলেন, মৃণাল আছে? তুই মৃণালের বড় ছেলে বিজয় না? হ্যাঁ ঠিক চিনেছি। কত বড় হয়ে গেছিস তুই বাবা।
সোমনাথ বাবুর কথা শুনে বিজয় অবাক হলো, কারণ এই মৃণাল শব্দটি তার পূর্ব পরিচিত। তাই বিজয় কিছুক্ষণ সোমনাথ বাবুর দিকে তাকিয়ে রইল।
সোমনাথ বাবু হেসে বললেন _ কি রে বিজু। বিয়ে থাওয়া করলি ? বিজয় কিছুক্ষণ ভাবনাচিন্তার পর বলল, ও ছোট মামু? কেমন আছেন? কতদিন দেখিনি। আসুন ভিতরে আসুন।
বিজয় তার ছোট মামুকে দেখে অত্যন্ত আনন্দিত হলো। ও মা....মা, দেখো কে এসেছেন। ছোট মামু যে। শিপ্রা ও শিপ্রা শিগগির এসো। তার চিৎকারে তার মা মৃণালিনী, স্ত্রী শিপ্রা ও কন্যা রূপকথা বাইরে বেরিয়ে এলো। মৃণাল ভাই বলে কাঁদতে শুরু করল - ভাই তোকে কত বছর দেখিনি। শিপ্রা সোমনাথ বাবুকে দক্ষিণের ঘরে থাকার জায়গা করে দিল।
শিপ্রা সোমনাথ বাবুকে অত্যন্ত স্নেহের সাথে বললো- মামাবাবু আমি তো গরীব ঘর থেকে এসেছি। আমার কোন দাদা নেই আমরা দুই বোন। তাই ভাইফোঁটা কী জিনিস কখনো দেখা হয়নি। তাই আপনার কাছে একটু আবদার করতে এসেছি।
সোমনাথ বাবু শিপ্রার মাথায় হাত দিয়ে বললেন - তুমি আমার মেয়ের মত। বলো তোমার কি আবদার আমি রাখার চেষ্টা করব।
শিপ্রা সবিনয় বলল, মামা বাবু আজ যে ভাইফোঁটা, শুভ দিন। আমি কখনো ভাইফোঁটা দেখিনি। আমরা প্রত্যেকেই চাই মা আপনাকে ভাইফোঁটা দিক। সেই জন্য আমি ছোট্ট করে ভাইফোঁটার আয়োজন করেছি।
মৃণালিনী দেবী এত বছর পর ভাইফোঁটা দিতে পেরে খুব আনন্দিত। সোমনাথ বাবু শিপ্রা কে আশীর্বাদ করলেন।
সেদিন মৃণালিনী দেবী সোমনাথ বাবুকে ভাইফোঁটা দিলেন। এক সুন্দর মুহূর্তে অনুভূত হলো।
----------