এর থেকে মেয়েটি যদি সুমঙ্গলের গালে ঠাস করে একটা চড় কশাত তাহলেও এত লাগত না। সুমঙ্গলের চার বছরের শিক্ষক জীবনের জৌলুসকে মেয়েটি এক লহমায় ম্লান করে দিল । এমন জানলে সে এ বাড়ির চৌকাঠ মাড়াত না। সে তো আগে থেকেই পঞ্চাকাকাকে বলে রেখেছিল। পঞ্চাকাকা সেই মতো কথাবার্তা এগিয়ে রেখেছিলেন । তবে আজকে এরকম আচরণের কারণ কী! সুমঙ্গলের সমস্ত রাগ গিয়ে পড়ল মেয়েটির বাবা-মার উপর। তাঁদের আস্কারাতেই মেয়েটি এমন অসভ্য হয়ে উঠেছে , গুরুজন মানে না , মাস্টারকে মানে না , ছি ! তার কী দরকার ছিল সি এল নিয়ে এ বাড়িতে আসার ।
নাম কী ? মাধ্যমিক কোন সালে ? কীসে অনার্স ছিল ? মাস্টার ডিগ্রি কোন ইউনিভার্সিটি থেকে ? পড়াশোনার বাইরে আর কী কী করতে ভালো লাগে ? এসব জিজ্ঞাসার যথাযথ উত্তর দিতে দেরি করেনি বিতস্তা । হঠাৎ করে যে এই বাধ্য মেয়েটি এমন বেকায়দায় ফেলবে ভাবেনি সুমঙ্গল । মাস্টারমশাই আমার একটা জিজ্ঞাসা ছিল, আপনার ওজন কত যদি দয়া করে বলেন ?
---- ৭০ কেজি
---- বাবা আমার পড়ার টেবিল থেকে ক্যালকুলেটরটা একটু দাও তো ।
বিতস্তার বাবা বাধ্য ছেলের মতো ক্যালকুলেটরটা তার হাতে তুলে দেন ।
সুমঙ্গল বলে --- আরে ক্যালকুলেটর নিয়ে আবার কীসের হিসাব কষছেন ?
---- একমিনিট সময় দিন বলছি ।
সুমঙ্গল সাতপাঁচ ভাবতে থাকে l ভাবে যাক, মেয়েটি বেশ ম্যাচিওর!
---- হ্যাঁ হয়ে গেছে সাত হাজার একশো বেয়াল্লিশ টাকার মতো ।
---- এসব কিসের হিসাব শোনাচ্ছেন আমাকে ?
বিতস্তা তীব্র শ্লেষের ঝংকার তুলে জানায় --- আপনার ঘটক জানিয়েছিলেন আপনার দাম পাঁচ লাখ টাকা । আমি তাই হিসাব করে দেখলাম হাইস্কুলের মাস্টারের মাংসের কেজি কত করে চলছে ?
---------------------
লেখক------চন্দন মিত্র