কথাটা যে গোপন রাখা যাবে না, এটা সে ভালো করেই জানত। মনে ভয় ছিলো খুব। তবু সে চেষ্টার কোন ত্রুটি রাখেনি।
সকাল থেকে আকাশের মুখ কালো মেঘে ঢাকা দেখে ফতিমা তাড়াতাড়ি বাইরে আসে। তার অন্ধ বৃদ্ধা শাশুড়ি আজকাল তাকে কেমন সন্দেহ করে। থেকে থেকে নিজের দুই হাতের দিকে চেয়ে চেয়ে দেখে আর বলে- আমার হাতে এত রক্ত কোথা থেকে এলো মা? এত রক্ত......
আর তখনই তার দু'চোখ থেকে নেমে আসে নীরব অশ্রু ধারা। মিনমিনে গলায় বারান্দা থেকে চিৎকার করে বলে - ও বউ সালাম ফিরল? রাত কত হলো বউ?
অপ্রস্তুত ফতিমা বুকে পাথর বেঁধে অভ্যাস বশতঃ বলে - এই তো এসে পড়বে মা। তুমি আবার এসময় বারান্দা থেকে নেমে এলে কেন?
বৃদ্ধা কান পেতে শোনে। কতদিন বাড়িতে মোটর বাইক ঢোকাবার বা বেরোবার আওয়াজ শোনেনি। অথচ ছেলেটা গাড়ি চালাতে কি না ভালোবাসতো। বউটা কি তাকে সব কথা বলে! সালামটা কেন যে এত দেরী করে কে জানে!
ও বাড়ির কচির মা বলে- ছেলে বড় হলে মাকে ভুলে যায়, তখন বউ হলো তার সবচেয়ে আপনার জন। তার সালাম তো সেরকম নয়। তবু আজ তার মন বড় কেঁদে ওঠে।
বৃদ্ধা কর গুনে গুনে বলে- বউ আজ কদিন হলো রে?
-কী?
-সালাম হাসপাতালে......
সহসা আকাশ ফাটিয়ে মেঘের তীব্র গর্জন ও বিদ্যুৎ ঝলকানিতে সালামের বউ চমকে ওঠে।
------------