প্রীতম কর্মসূত্রে বিদেশে যাবে, সে বিমান বন্দরে বসে আছে। কিছুক্ষণ পরে তার ফ্লাই। সে খুব মনোযোগ সহকারে তার ব্যাগ থেকে একটা ম্যাগাজিন বের করে পড়ছে। এমন সময় হঠাৎ এক গোলাপি শাড়ি পরা ভদ্রমহিলা পাশের চেয়ারে বসলেন, খুব সুন্দর পারফিউমের গন্ধ বেরোচ্ছে গন্ধটা যেন কতদিনের চেনা কত পরিচিত। সে কৌতূহলবশত ম্যাগাজিনটা নামিয়ে মুখের দিকে তাকিয়ে দেখে, অবাক হয়ে যায় একি এই এতো মেঘনা।
মেঘনাকে দেখে তার মন ভেঙে গেল, গলা শুকিয়ে গেল,মনে পড়ে সেই অতীত স্মৃতি _ একদিন বাবার বন্ধু সুভাষ কাকু তার একমাত্র মেয়ে মেঘনাকে নিয়ে আমাদের বাড়িতে এলেন। মেঘনা অপরূপ সুন্দরী টানা টানা তার চোখ, তার ওই দুটো চোখ দেখেই আমি প্রেমে পড়ে যাই। কিন্তু এই প্রেম ছিল শুধুমাত্র একতরফা, কিন্তু সেদিন মেঘনার মনে আমার জন্য কোন জায়গায় ছিলনা। কিছুদিনের মধ্যেই মেঘনার বিয়ে হয়ে যায় বিখ্যাত ব্যবসায়ী ইন্দ্রনীল বসাকের সাথে। এই ভেবে মন খারাপ হয়ে যায়, চোখে জল আসে যে তার ভালোবাসা পূর্ণতা পেল না।
এবার মেঘনা হঠাৎ করেই প্রীতম কে দেখতে পায়, তারপর মৃদু হেসে বলে_ কেমন আছো প্রীতম? প্রীতম দুঃখ-কষ্টকে চেপে রেখে বলে_ ভালো। তারপর বল কি খবর? মেঘনার মন খারাপ বলে_ বাবা হঠাৎ মারা গেছেন। ইন্দ্রনীলের ব্যবসা ভালো চলছে না। প্রীতম উত্তেজিত হয়ে মেঘনাকে আবার জিজ্ঞেস করে_ কি করে সুভাষ কাকু মারা গেলেন? মেঘনা কেদে কেদে উত্তর করে _ আত্যহত্যা। প্রীতম মেঘনাকে প্রথম দেখেই বুঝতে পারে যে তার জৌলুসতা যেন অনেকটাই মলিন হয়ে গেছে। তাই সে আবার প্রশ্ন করে কিভাবে কেন? তুমি কি সুখী হও নি?
মেঘনা মাথা নামিয়ে উত্তর করে _যদি বলি না? প্রীতম আবার প্রশ্ন করে কেন কোথায় যাচ্ছো তবে? মেঘনা দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলে বলে _সে অনেক কথা, আমি যাচ্ছি ইন্দ্রের সাথে দেখা করতে। প্রীতম কৌতুহলী হয়ে বলে _ইন্দ্র কোথায়? মেঘনার চোখে জল টল টল করে সে বলে _ বিয়ের পরে জানতে পারলাম ইন্দ্রের সাথে একাধিক মহিলার সম্পর্ক আছে, সেজন্য সে আমায় ছেড়ে বিদেশে চলে গেছে। প্রীতম মৃদু হেসে বলে _ যে যায় সে কি ফিরে আসে কখনো? মেঘনা কেঁদে ফেলে বলে_ বাবা মারা গেছেন তাই খবর দিতে যাচ্ছি। প্রীতম আবার কৌতুহলী হয়ে জিজ্ঞেস করে _তোমাদের কি বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে? মেঘনা উত্তর দেয়_ হ্যাঁ।
প্রীতম তখন মেঘনার হাত দুটো ধরে বলে _ সবকিছু কি নতুন করে শুরু করা সম্ভব?
মেঘনা নীরবে তাকিয়ে থাকে প্রীতমের দিকে।
------------