ছোটগল্প।। সৌন্দর্য।। জয়শ্রী ব্যানার্জী চক্রবর্তী ।। কথাকাহিনি ২৬; ১লা এপ্রিল ২০২১;
বিয়ে বাড়ীর এক কোণে একটু চুপচাপ বসেছিল অবন্তী । পাশে আট বছরের মেয়ে বৈদিকা । সে দেখছিল তার বেশ কিছু আত্মীয় স্বজন অন্য এক আত্মীয়র মেয়েকে নিয়ে হইচই করছে । সে বৈদিকার বয়সী । ভীষণ ফর্সা আর সুন্দর । বৈদিকা শ্যাম বর্ণের । মুখ মিষ্টি আর মায়াবী চোখ হলেও ওই আত্মীয়র মেয়েটির মত ভীষণ সুন্দর দেখতে না । তার এক মাসী ওই মেয়েকে নিয়ে খুব আদর করছে ওর মেয়ের দিকে ফিরেও তাকাচ্ছে না । বৈদিকাও দেখছে সেটা । অবন্তীর বুকটা মোচড় দিলো কষ্টে । সে নিজে না ভাবলেও লোকে তাকে ফর্সা ও সুন্দরী বলেই গণ্য করে ।কিন্তু মেয়ে হয়েছে তার বাবার মতো শ্যাম বর্ণের। মুখের আদলেও বাবার ছোঁয়া !যদিও নিন্দুক রা সেকথাও স্বীকার করে না । দু একজন আত্মীয় ছাড়া আর কোনো আত্মীয়, কি পাড়া প্রতিবেশী, স্কুল ,নাচের ক্লাস, কোনো জায়গাতে ই তার মেয়ে আদর ভালোবাসা পায়না । অনেকে সরাসরি ব্যাঙ্গ করে । নানান সমালোচনা করে। কিছু ম্যাম রাও তার অন্য সুন্দরী ছাত্রী দের ই ভালোবাসে ,মেতে থাকে তাদের নিয়ে ।আবার কিছু ম্যাম ,স্যার তাকে সত্যি স্নেহ করেন ।কিন্তু বৈদিকার আচরন ও মানসিকতা এখন কার সমবয়সী ছেলে মেয়ে দের থেকে অনেক আলাদা । । অবন্তী লক্ষ্য করে এ মেয়ে অন্য রকম! কিন্তু ওই একটা জায়গায় ...! দীর্ঘশ্বাস পড়লো অবন্তীর!এমন সময় কেউ ডাকাতে মাসী উঠতে গেলো আর কাপড়এর সাথে চেয়ার এর পায়া কিভাবে লেগে যেনো তিনি একদম উল্টে পড়ে গেলেন । হাততালি দিয়ে উঠলো অন্য আত্মীয়র সুন্দরী মেয়েটি । খিলখিল করে হাসি তার মাসীর পড়ে যাওয়া দেখে । আর বৈদিকা নিমেষে ছুটে গেলো তার মাসিদিদাকে তুলতে ...! অবন্তী তার মেয়ের সৌন্দর্য কে দুচোখ ভোরে দেখলো। দু ফোঁটা জল তাড়াতাড়ি মুছে নেয় রুমালে করে ,কেউ দেখে ফেলার আগে ।
ছবিঋণ- ইন্টারনেট ।