দুই বোন
আশিস ভট্টাচার্য্য
কাকলি ও শ্যামলী দুই বোন । লেখাপড়া শেখেনি, কিন্তু রং ফর্সা, চেহারায় জৌলুস আছে। ছোটবেলা থেকে উচ্চাকাঙ্খী। দুই বোনেরই প্রথম বরের সাথে ছাড়াছাড়ি হয়েছে। দ্বিতীয়বার বিয়ে করেছে। কাকলির বর ধনঞ্জয় মদ ও গাঁজার ব্যবসা করে। শ্যামলীর বর কুমুদ পুলিশের খোঁচর। দুজনের বরই খুব রাগী, মাঝে মাঝে তাদের আচ্ছা করে মারধর করে। ওদের শখ হল নামডাক হবে, টাকা হবে ,গাড়ি হবে। অনেক চেষ্টা চরিত্র করে "জল দানব"টিভি সিরিয়ালের পার্ট পাবার সুযোগ পেল। দুই বোন দুই লাখ টাকা উটটোকন দিল প্রযোজকের সিরিয়ালেসুযোগটা পাওয়ার জন্য। পুরীর সমুদ্রের ধারে শুটিং। ছোট্ট পার্ট সমুদ্রের তীরে নির্জনে একদল দুষ্কৃতী তাদের ধর্ ষণ করে খুন করবে । সেইমতো শুটিং হল। খলনায়ক কিংশুক প্ররোচিত হলো। তার ইশারায় তার দুই সাগরেদ দুই বোনকে অপহরণ করে চাদিপুরের এর এক নির্জন হোটেলে নিয়ে গেল।দুই সাগরেদ সহ খলনায়ক রাতের অন্ধকারে তাদের কামনা চরিতার্থ করে ওদের মদের সাথে কড়া ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অজ্ঞান করে ফেলল। তারপর সাগরেদদের নির্দেশ দিল ওদের সমুদ্রের ধারে ফেলে দিয়ে তোরা কলকাতায় চলে যা।হোটেলের বিল চুকিয়ে দিয়ে মোটরসাইকেলে ওদের তুলে নির্জন সাগরের তীরে ফেলে রেখে ওরা পালিয়ে গেল। তখন ভাঁটা। কয়েক ঘণ্টা বাদে জোয়ারের ধাক্কায় ওদের ঘুম ভেঙে গেল। ওরা ফ্যালফ্যাল করে তাকাচ্ছে আর ভাবছে তারা এই বালির ওপর পড়ে আছে কেন? ওদিকে সিরিয়াল পার্টিতে হৈচৈ পড়ে গেছে । দুই যুবতী নিরুদ্দেশ।পুলিশ ওদের উদ্ধার করে প্রযোজকের কাছে হাজির করেছে। ওদিকে ধনঞ্জয় ও কুমুদের মোবাইলে চাঁদিপুরের নির্জন হোটেলের ভেতর ওদের যাবতীয় ভিডিও ভেসে উঠল। ওরা দুজনে লজ্জায় আত্মহত্যা করল। এদিকে দুইবোন সর্বস্ব খুইয়ে যখন নিজেদের বাড়ি ফিরে এলো তখন ওদের দুই বরের পোস্টমর্টেম শেষ করে শ্মশানে দাহ কাজ শেষ হয়েছে। গোটা পাড়ার লোক ঘিরে আছে ওদের বাড়ির চারপাশে। দুই বোন পাড়ায় ঢুকতেই নিন্দামন্দ, গালাগালির বন্যা বয়ে গেল। দুজনের পা ছড়িয়ে কাঁদতে বসল।
আশিস ভট্টাচার্য্য
রামকানাই গোস্বামী রোড, শান্তিপুর,নদীয়া-৭৪১৪০৪
যোগাযোগ-৬২৯৫৩০০৫৮৫