Click the image to explore all Offers

অণুগল্প ।। আবার হারিয়ে গেল ।। মহা রফিক শেখ


আবার হারিয়ে গেল
মহা রফিক শেখ

বাস থেকে নামতেই হকচকিয়ে গেল রাকেশ। ওড়নার শেষ প্রান্ত টা তার মুখের উপর দিয়ে যেতেই সেই চেনা গন্ধটা হঠাৎ জেগে উঠল। সেই ওড়না, সেই রং ,সেই গন্ধ এখনও আছে। তাহলে কে সেই ?
ভাবতে ভাবতেই চোখের পুরু চশমাটা খুলে আবার চোখে পড়ে নিলো।গত সাত বছরে  দৃষ্টি অনেক টাই কমেছে। হ্যাঁ, রাকেশ ঠিকই সনাক্ত করেছে। হঠাৎ হারিয়ে যাওয়া তার প্রেমিকা - সালমা।
আগের থেকে অনেক সুন্দর লাগছে। কিছুটা মোটাসোটা এবং বেশ লম্বাও। সেই আগের মতই উদ্ভিন্নযৌবনা। কোন প্রসাধনী বা মেকআপ নেই।  তবে নীল চুড়িদারের  সাথে হালকা নীল টিপ আর পায়ের নূপুর টা বেশ মানিয়েছে। বরাবরের মত জানালার সিট এর দিকে বসা অভ্যাস তার।
হাতে একটা কবিতার বই " স্বপ্ন কিরণে দিশানী"। সম্পূর্ণ ভাবে মনোনিবেশ ঐ বই তে।
ভুলেও চোখ তুলে তাকাচ্ছে না একবারও।
সদ্য শ্যাম্পু করা চুলগুলো অনিয়ন্ত্রিত ভাবে মুখের উপর পড়ছে।যেন হাওয়ার সাথে চুলের সেই আদ্যিকালের প্রেম প্রেম যুগলবন্দী খেলা।

প্রায় সাত বছর ধরে সালমাকে পাগলের মত খুঁজেছে। কিন্তু পাই নি। আগের পুরানো নম্বরটাও পাল্টে গেছে।
আজ হঠাৎ তার হারিয়ে যাওয়া প্রেমিকা কে দেখে মন খুশিতে ভরে যায়। কী করবে - কীভাবে কথা বলবে - ভেবে পাচ্ছে না। আনন্দে একদম আত্মহারা।
কাছে যেতেই বাস টা হঠাৎ করে ছেড়ে দিলো। কয়েক সেকন্ডে বাসের গতি এত জোরে বেড়ে গেল যে - রাকেশ কোনো মতেই বাস টাকে ধরতে পারলো না। দৌড়ে গিয়ে শুধু হাঁফাতে লাগলো।
নিমেষে চোখের পলকে মিলিয়ে গেল সালমাসহ বাসটি। আবারও সেই না পাওয়ার বেদনা তাকে গ্রাস করতে লাগলো।হারিয়ে যাওয়ার অব্যক্ত ব্যথা আবারও দ্বিগুণ হলো।
হতবাক, হতাশ হয়ে মাঝ রাস্তায় দাঁড়িয়ে গেলো রাকেশ।
সবে সূর্যটা অস্তাচলে গিয়েছে। গাঢ় অন্ধকার ধীরে ধীরে মাথার উপর নামতে থাকলো। গভীর অন্ধকারে তলিয়ে গেল রাকেশ..... একা .... নীরবে।  নিঃশব্দে।।
===================

 
মহিসার, খড়গ্রাম, মুর্শিদাবাদ।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.