সিকিমের সৌন্দর্য
পাহাড় ঘেরা শৈলশহর গ্যাংটক আমার অত্যন্ত পছন্দের , ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি যেন বছরে একবার হলেও গ্যাংটক ভ্রমণ করতে যেতে পারি । ৬ই অক্টোবর ২০১৭ শুক্রবার এর ঠিক ছয় বছর পর ৩০ শে মার্চ ২০২৩ বৃহস্পতিবার ঠিক সন্ধ্যে সাতটায় আবারো বাড়ি থেকে স্করপিও গাড়িতে চড়ে কলকাতা গৌহাটি এক্সপ্রেস বেরিয়ে পড়লাম সিকিমের উদ্দেশ্যে। এই যাত্রা আনন্দদায়ক হলেও পরে যেন ভয়ংকর রূপ নিল আমার কাছে। কলকাতা গৌহাটি এক্সপ্রেস ট্রেনটি ছাড়ার সময় ছিল কলকাতা স্টেশন অর্থাৎ শ্যামবাজার থেকে ঠিক রাত ৯ টা বেজে চল্লিশ মিনিটে, কিন্তু রামনবমী ও প্রচন্ড বৃষ্টির কারণে আমরা ট্রাফিক জ্যামে আটকে পড়ি ফলে স্টেশনে পৌঁছতে অনেক দেরি হয়ে যায় । অবশেষে আমরা অবশেষে আমরা স্টেশনে পৌঁছাই ঠিক রাত নয়টা বেজে ৩৫ , আমার তো ভয়ে গা-হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যায় । আমার কনিষ্ঠা কন্যার হাত ধরে ট্রলি ব্যাগটা কোনরকম টানতে শুরু করি হঠাৎই সেটি উল্টে গিয়ে আমার পেশিতে জোরে টান লাগে হাত অবশ হয়ে আসে । যাইহোক করে চলন্ত সিঁড়ি দিয়ে নেমে দেখি ট্রেনটির হুইসেল বেজে গেছে তখন যাইহোক করে একটি জেনারেল কামরায় উঠে পড়ি তারপর ভিড়ে ঠেলাঠেলি করে আস্তে আস্তে এসি কামড়ায় পৌঁছে যাই । কিন্তু আমার হাতে থাকা ট্রলি ব্যাগটি হঠাৎ যেন নিরুদ্দেশ হয়ে যায়, আমার স্বামী ও ভাইপো গিয়ে সেটা উদ্ধার করে নিয়ে আসে। আমার খুব ভয় পেয়ে যেন সারা শরীর কাঁপতে শুরু করে ও তার সাথে দমের কষ্ট শুরু হয়। আমি কাঁদতে শুরু করি, জল খেয়ে আপাতত কিছুটা স্বস্তি বোধ হয়।
এবার আমরা নিজেদের মধ্যে কথোপকথন চালিয়ে যেতে থাকি রাত এগারোটা বেজে গেছে এবার রাতের খাবার পালা। আমি লুচি আলুর তরকারি করে নিয়ে গিয়েছিলাম , ভাইপরা রুটি আলু ভাজা ও বড়দা বৌদি রুমাল রুটি ও তড়কা নিয়ে গিয়েছিল আমরা সবাই মিলে এগুলো দিয়ে খেতে শুরু করলাম , খাওয়া দাওয়া শেষ করে যে যার মতন ট্রেনে কম্বল ও বালিশ নিয়ে শুয়ে পড়লাম। আমার সারারাত কিছুতেই ঘুম আসছিল না, তাই আমি মাঝে মাঝে ট্রেনের জানালা দিয়ে দেখতে দেখতে রাত কাটিয়ে দিলাম। হঠাৎ ভোরের দিকে চোখ লেগে গিয়েছিল তারপর যখন ঘুম ভাঙলো সকাল ছটা বেজে গেছে ; উঠে দেখি সবুজ শস্য শ্যামলা ধান খেত ছুটে চলেছে , ছুটে চলেছে ভুট্টা গাছের সাড়ি, ছুটে চলেছে পদ্ম ফুলের মেলা, ট্রেন ছুটছে।
এভাবে দেখতে দেখতে হঠাৎ একটা কণ্ঠস্বর কানে ভেসে এলো চা নেবে গো চা নেবে, ও নেবু চা দুধ চা। একটু চা পান করে আবারও অবাক দৃষ্টিতে বাইরের জাললায় তাকিয়ে থাকলাম , লাল সূর্য টা যেন আস্তে ভেসে উঠছে এবার আরো একটা বড় অবাক করা দৃশ্য দেখলাম কত সারিসারি চা গাছের সাড়ি চলে গেল , তার সাথে গা মিলিয়ে চলে গেল আনারসের সাড়ি। এবার তো নামার পালা ট্রেন এসে হাজির হলো এনজিপি অর্থাৎ নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে তখন ঘড়ির কাঁটা ঠিক নটা বেজে ৩০ মিনিট।
সেখানে কিছু হালকা টিফিন করে আবারো উঠে পড়লাম মারুতি গাড়িতে, সেখান থেকে প্রায় ৬ ঘন্টার পথ । আবার ও কৌতুহলবশত জানলার কাঁচ নামিয়ে দিয়ে দেখতে দেখতে যাচ্ছি , আস্তে আস্তে পার হয়ে যাচ্ছে নর্থ বেঙ্গল ফরেস্ট ; কি অপূর্ব সবুজ জঙ্গল কেউ চাক্ষুষ না দেখলে বিশ্বাস করতে পারবে না । জঙ্গল টা পার হয়ে যেন আবহাওয়ার কিছুটা পরিবর্তন লক্ষ্য করলাম শরীরে যেন একটা হালকা শীতের আমের চলে এলো। যাইহোক গাড়িতে গান বাজছে আর বাইরের অপূর্ব দৃশ্যটা দেখছি । গাড়িটা একটি রেল লাইন পার করে যেতে যেতেই দূর থেকে পাহাড়ের রেখা দেখতে পেলাম ওহ কি আনন্দ মনে হল এবার স্বর্গে আছি। চলন্ত গাড়িতে নীলাভ তিস্তা নদীকে দেখছি আর শুনছি ওনার গুরু গম্ভীর গর্জন। কোথাও কোথাও হালকা বৃষ্টি পড়ছে এভাবেই এঁকেবেঁকে আমাদের গাড়িটি পাহাড়ের রাস্তাধরে যাচ্ছে । হঠাৎ তিস্তা নদীর বুকে লক্ষ্য করলাম কতগুলো লোকজন যেন ছোট ছোট প্লাস্টিকের নৌকায় নদীর বক্ষ মাঝে বোটিং করছে সঙ্গে সঙ্গে আমার জ্যেষ্ঠা কন্যা বলল , How funny Baba. চলো আমরা সবাই মিলে বোটিং করে আছি। আমিও বুঝলাম ব্যাপারটি খুব মজাদার। ওর বাবা তখন বলল - ওখানে ছোটদের পারমিশন নেই। বেচারা মুখটা কাচুমাচু করে ঘুমিয়ে পড়ল। এইভাবে আস্তে আস্তে চলেছি গ্যাংটকের পথে.............
এবার গাড়িটা কিছুক্ষণ চলার পর একটু দাঁড়ালো সেখানে চা ও জল খাবার খাওয়া হলো , জলখাবার বলতে চাওমিন। সেখানকার চাওমিন এতটাই জঘন্য ছিল যে খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের সবার বমি শুরু হয়ে যায়। যাইহোক এভাবেঠিক বিকেল চারটেতে আমরা গ্যাংটকে পৌঁছলাম। সেখানে প্রচন্ড বর্ষণের আমার মনে খুব ঠান্ডা লাগছিল মেয়েরা কাঁপতে শুরু করল সঙ্গে সঙ্গে গাড়ি থেকে নেমে তাদের টুপি সোয়েটার পরিয়ে দিলাম । এবার আরেকটি ট্যাক্সি ধরে অবশেষে হোটেল সিলভার ফেয়ারে পৌঁছে গেলাম।
সেখানে সামান্য গা হাত পা ধুয়ে ভাত ডাল সবজি মাছ ও কুলের চাটনি খেলাম । রাস্তায় এত ধকল নেওয়ার পর শরীর অস্বস্তি বোধ করল , খানিকক্ষণ শুয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম , সন্ধ্যেবেলার চা ও পকোড়া খাওয়া হলো। সেদিন রাতের খাবার ছিল ফ্রাইড রাইস ও চিলি চিকেন, খাওয়ার ইচ্ছেটা ছিল না বলে তেমন কিছু খাওয়া হয়নি , ঘুমিয়ে পড়তে হল।
পরের দিন ভোরবেলা উঠে চা বিস্কুট খেয়ে স্নান করে। রুটি ও তরকা টিফিন করে বেরিয়ে পড়লাম লাচেনর উদ্দেশ্যে , গ্যাংটক থেকে প্রায় ১৮০ কিলোমিটার দূরে লাচেন। পথ যেন আর শেষ হয় না এদিকে সোয়েটার পরেও ঠান্ডা লাগছে খুব , দুপুর দুটো নাগাদ একটি রেস্টুরেন্টের সামনে গাড়ি দাঁড়ালো সেখানে ডিমের তরকারি ও ভাত খাওয়া হলো । আবারো গাড়ি চলতে শুরু করল অজানা রাস্তার উদ্দেশ্যে পথে দেখা পেলাম এক সুন্দরী ঝরনার সাথে নাম তার - সেভেন সিস্টার ফলস, সাতটি ঝরনার সমাবেশ একত্রিত হয়ে যেন নেমে এসেছে ধরিত্রীর বুকে। সেখানে অনেক ছবি তোলার পর কফি ও চিকেন মোমো খাওয়া হলো । প্রচন্ড ঠান্ডা ও তার সাথে টিপটপ করে বৃষ্টি পড়ছিল সেখানে। আবার গাড়িতে উঠে চলেছি সন্ধ্যেবেলা এক জায়গায় দাঁড়িয়ে চা খেলাম, সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দাদের জিজ্ঞেস করলাম , লাচেন পৌঁছতে আর কত সময় লাগবে । তারা বললেন - এখনো দেড় ঘন্টা, পৌঁছতে সাতটা বেজে যাবে আর সেখানে খুব ঠান্ডা আপনারা বড়ফ দেখতে পাবেন। সত্যি সত্যি সেখানে পৌঁছতে প্রায় রাত আটটা বেজে গেল , সেখানে প্রচন্ড বৃষ্টির কারনে খুব ঠান্ডায় আমরা গাড়ি থেকে নেমে কাঁপতে শুরু করলাম । সেদিন সেখানকার তাপমাত্রা ছিল দুই থেকে তিন। সেদিন রাতে সোয়াবিনের তরকারি ডাল ডিম সিদ্ধ খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম কারণ পরদিন পরদিন ভোর পাঁচটায় বেরহতে হবে।
যথারীতি চারটের সময় এলাম বাজলো, তড়িঘড়ি উঠে বেরিয়ে পড়লাম গুরুগানবার লেকের উদ্দেশ্যে । শুনেছি সেখানে প্রচন্ড ঠান্ডা তার সাথে অক্সিজেনের ঘাটতি চোখে পড়ে , দুর্ভাগ্যবশত আমাদের সেখানে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি । কারণ কিছু দূরে যেতে না আমাদের শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে যায় ,দুটো বাচ্চা থাকায় আমরা আর যেতে সাহস দেখাতে পারলাম না । যেতে চারিদিকেএত বরফ দেখে চক্ষু সার্থক করে ফেলি গাছের গায়ে বরফ গুলোকে দেখে মনে হচ্ছিল কেউ যেন আঠা দিয়ে আটকে রেখেছে । আমরা গাড়ি ড্রাইভারকে এক জায়গায় দাঁড়াতে বলি সেখানে অপূর্ব বরফ দেখে মনে হচ্ছিল এ যেন এক অঙ্কিত ছবি যেন স্বপ্ন দেখছি। সেখানে কিছুক্ষণ বরফ নিয়ে খেলা শুরু হল বরফগুলো যেন গুড়ো গুড়ো মিছরির দানার মত সেখানে আমরা ছোট ছোট বরফের ঘর তৈরি করে নানা ধরনের ছবি তুলতে শুরু করি , বেশ মজাদার লাগছিল জায়গাটি। এরই মাঝে হঠাৎ আমার মাথা ঘোরাও বমি বমি ভাব শুরু হয়, আমরা আবার লাচেন র হোটেলে ফিরে যাই। সেখানে গিয়ে জানতে পারি, গুরু গাম্ভার লেকের ওখানে কিছু সেনাবাহিনী মারা গিয়েছে ; আর খবরটি শুনেই খুব খারাপ লাগে।
দুপুরে কিছু খাওয়া-দাওয়া শেষ করে বিশ্রাম নিয়েএবার বেরিয়ে পড়ি লাচুং এর উদ্দেশ্যে। লাচেন থেকে লাচুং এর দূরত্ব প্রায় তিন ঘণ্টার মতো আমরা সন্ধ্যের মধ্যেই সেখানে পৌঁছে যাই।যাওয়ার পথে দেখা পেলাম এক লম্বা ঝরনার সাথে - তার নাম অমিতাভ বচ্চন ফলস । এত প্রচন্ড লম্বা যে তাকে ভালোবেসে অমিতাভ বচ্চনের তুলনা করা হয় , এত ঠান্ডা ছিল যে কিছু লোকজন সেখানে বন ফায়ার করছিল । অবশেষে লাচেন পৌঁছানো হলো সেখানে লাচেনের মতো এত অস্বাভাবিক ঠান্ডা ছিল না তাই হোটেলের ঘরে বন্দি থাকতেও আর মন চাইলো না। সামান্য বৃষ্টিতে ও ছাতা নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম সন্ধ্যের প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখার উদ্দেশ্যে , সমস্যা বৈদ্যুতিক সমস্যা থাকায় ভালো করে ঘোরা না হলেও ঝরনার কল কল শব্দ ও নদীর গর্জন কানে ভেসে এলো। এক মহিলা কিছু সিঙ্গারা ও মোমো বিক্রি করছিলেন এগুলি খেয়ে আবার হোটেলে ঘরে এলাম। হোটেলে বসে বসে আমি ছোট মেয়ে বড় মেয়েও বৌমা ফোনে লুডু খেলছিলাম। তারপর আমার ছোট মেয়ে ও বড় মেয়ে ম্যাগি খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ল। আমরাও কিছুক্ষণ পর ভাত মাংসদিয়ে রাতের খাবার সেড়ে নিলাম। ছোট মেয়েটার শরীর খারাপ করার কারণে আমি দুই মেয়ে ও বৌমা ইয়ংথাম ভ্যালিতে যেতে পারলাম না। ছেলেরা সব পরদিন সকালে সেখানে ঘুরতে গেলআসা-যাওয়া নিয়ে মোট চার ঘন্টা রাস্তা। আমরা টিফিনে জ্যাম পাউরুটি খেয়ে লাচুনের আশে পাশে দিনের আলোয় প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করলাম। সেখানে দেখা যাচ্ছিলএক বিরাট রূপময়ী রুপালী রংয়ের পর্বত শিখা, যাকে ক্যামেরা বন্দি না করে থাকতেই পারলাম না। এছাড়া টুকটাক সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়ে কিছু ছবি তোলা হল। সেখানে মধ্যান্য ভোজন শেষ করে আমরা আবার গ্যাংটকের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম সেখান থেকে গ্যাংটক প্রায় ছ ঘন্টার রাস্তা। আমরা গ্যাংটক এ সন্ধ্যের মধ্যেই পৌঁছে গেলাম, এবার আবহাওয়াটা ভালো থাকায় খুব আনন্দ পেলাম। তারপর আমরা খানিকক্ষণ এমজি মার্কেট ঘুরে মন শান্ত করে হোটেলের ঘরে ফিরেএলাম।, নৈশ ভোজনে দেওয়া হল বাঁধাকপির তরকারিও চিকেন। পরের দিনে দেখার বিষয় , হনুমানের মন্দির , গণেশ মন্দির , দুটো বৌদ্ধ মন্দির , টাওয়ার , ফুলের বাগান , বোটানিক্যাল গার্ডেন, রোপওয়ে , মিউজিয়াম ও পার্ক সমৃদ্ধ সুন্দরী ঝর্ণা। পার্ক সমৃদ্ধ সুন্দরী ঝরনাটি আমার কাছে স্বপ্নের মতন মনে হচ্ছিল আমরা ঝরনার সামনে অনেক ছবি তুললাম । গণেশ টকে গিয়ে ড্রেস পরে বিভিন্ন রকমের ছবি তুললাম। কত আনন্দ হচ্ছিল সেদিন বলে ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না , ভুটানের রাজা ও রানী গ্যাংটক এ উপস্থিত ছিলেন সেই কারণে রোপওয়ে ও মিউজিয়াম বন্ধ ছিল। বাকিগুলি দেখে আমরা আমার হোটেলে চলে এলাম।ফিরে এসে এক ঘটনা শুনে আমরা রীতিমতো চমকে উঠলাম , সেদিন সকালে ছাঙ্গু লেকে তুষারঝরে আটকে পড়েন নাপ্রায় দেড়শো জন পর্যটক এবং আট জন প্রাণ হারান। আমাদের পাশের ঘরে একজন ব্যক্তি ছিলন উনারা হাত পা ঘাড় ভেঙে হাসপাতালে একদিন থাকার পর হোটেলে ফিরে আসেন।তাদের মুখে ঘটনার বর্ণনা শুনে রীতিমতো স্তব্ধ হয়ে গেলাম যেন তারা নতুন জীবন লাভ করেছে । পরদিন আমাদের ছাঙ্গু ও বাবা মন্দিরে যাওয়ার কথা ছিল কিন্তু দুর্ঘটনার কারণে ছাঙ্গু লেগ ও বাবা মন্দির পর্যটকদের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয় । যাই হোক সেদিন আর কোথাও যাওয়া হলো না, আমরা সকাল থেকেই এমজি মার্কেট এ কেনাকাটায় ব্যস্ত হয়ে পড়লাম কিছুটা সময় সেখানে অতিবাহিত হয়ে গেল , সেদিন মধ্যাহ্ন ভোজনে ছিল মাছের ঝোল ভাত । আবার বিকেল বেলায় মার্কেটের কোন এক রেস্টুরেন্টে বসে চাওমিন মোমো খাওয়া হলো এবং বিভিন্ন সেলফি ও ছবি তোলা হলো।
সিকিমের সাত সাতটি দিন স্বপ্নের মতো কেটে গেল , এবার পরদিন বাড়ি ফেরার পালা , সেখানে প্রাতঃভোজন এ লুচি তরকারি খেয়ে আবার বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলাম । প্রায় দু-তিন ঘন্টা চলার পর গাড়ি এক চাইনিজ হোটেলে এসে দাঁড়ালো । সেখানে ফ্রাইড রাইস ও চিলি চিকেন দিয়ে মধ্যাহ্ন ভোজন সাড়া হল , ৫ টা ৩৭ নাগাদ এনজিপি স্টেশনে পৌঁছানো হলো। সেখান থেকে রাতের খাবার তোলা হলো, রাত সাড়ে আটটায় ট্রেন। প্রায় আড়াই ঘণ্টা প্রতীক্ষার পর পদাতিক এক্সপ্রেস এর চড়ে পরের দিন সকাল ৭ টায় শিয়ালদাহ স্টেশনে উপস্থিত হলাম। তারপর সেখান থেকে গাড়িতে করে বাড়ি ফেরা হল।
প্রতিটি ভ্রমণের মধ্যে ভালো মন্দ উভয় দিকে রয়েছে। আমার কাছে সিকিমের তিন নম্বর ভ্রমণ স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
=====================
অঙ্কিতা পাল
ভাঙ্গড়, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা