Click the image to explore all Offers

অণুগল্প ।। সৌতি ।। অনিন্দ্য পাল

ছবিঋন- ইন্টারনেট
 
সৌতি  
 অনিন্দ্য পাল 
 
সৌতি চমকে উঠলো। আকাশটা চিরে ফালা ফালা করা আগুনরেখাটা ততক্ষণে মেঘের আড়ালে কোথায় যেন হারিয়ে গেছে। জলের একটা ফোঁটা বাঁ চিবুকে এসে থমকে গেল। নিহারও থমকে গেছে। ঠিক যখন সৌতি তার সমস্ত দরজা খুলে অস্থির অপেক্ষায়, তখনি নিহার কুয়াশা হয়ে গেল। কড় কড় কড়াৎ! আকাশ ফাটানো শব্দটা এবার সৌতিকে ছুঁয়ে গেল। অন্ধকার এত সুন্দর হতে পারে! আজ আলোর ঝলকানি সহ্য হচ্ছে না তার। কানে গম্ভীর শব্দের রেশ নিয়ে উঠে দাঁড়ালো সৌতি। আজই বৈশাখ শেষ হয়ে যাবে। একটা মাসের শেষ থেকে পরেরটার শুরু। সেও কি তবে শেষ বৈশাখের মতই আর নিহার পরের মাসে পৌঁছে গেছে বলেই কি তাদের এক হওয়া হল না? উত্তর কে দেবে? সবার তো একটাই প্রশ্ন,' আগে জানতিস না?' না, সত্যিই জানতো না সৌতি। দিন শেষে রাত তো রোজই আসে, কিন্তু কোন রাত নক্ষত্রের আলো গিলে নিয়ে বোবা হয়ে যাবে সেটা কি কেউ বলতে পারে? সৌতিও পারেনি। অথচ সবাই তাকেই দুষছে, দু-বছরের সম্পর্ক তোদের, একটুও খোঁজ খবর নিবি না? কি করে নেবে সৌতি? প্রেম কি সার্টিফিকেট দেখতে চায়? না কি প্রেমিকের কাছে জানতে চাওয়া যায় তুমি সার্টিফিকেট জাল করে চাকরি পাওনি তো? 
  নিহার আত্মহত্যা করেনি। কিন্তু দু'টো জীবন মারা গেছে, একটা সম্পর্ক একটু আগে আকাশে ঝলসে ওঠা বাজটার মত জ্বলে উঠে অন্ধকারের জঠরে হারিয়ে গেছে। হঠাৎ দূর থেকে ভেসে এলো ট্রেনের হুইসল। এই স্টেশনে এখন একজন লোক ও নেই, ট্রেন এখানে দাঁড়ায় না। চারদিকের ধু ধু মাঠে শুধু স্তূপাকৃতি অন্ধকার। এগিয়ে গেল সৌতি। পেট ভর্তি মানুষ নিয়ে অন্ধকার চিরে দুরন্ত গতিতে এগিয়ে আসছে যন্ত্রদানবটা। ঠিক তখনি আবার আকাশটা আলো হয়ে উঠলো, সেই আলোয় সৌতির চোখ দুটোতে দুটো রুপোলি বিন্দু চিক চিক করে উঠল। 
=======================

অনিন্দ্য পাল 
প্রজত্নে -- বিশ্বনাথ পাল 
গ্রাম -- জাফরপুর 
পোঃ-- চম্পাহাটিি 
থানা -- সোনারপুর 
জেলা -- দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা 
পশ্চিমবঙ্গ, ভারত 

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.