প্রবন্ধ ।। আমার চোখে আমার দেশ ।। জয়শ্রী বন্দ্যোপাধ্যায়
0
ডিসেম্বর ০১, ২০২৪
আমার চোখে আমার দেশ
জয়শ্রী বন্দ্যোপাধ্যায়
সাগর পাড়ে দাঁড়ালেই যেমন বোঝা যায় না তার গভীরতা কত! তেমনি যোধপুর প্যালেস , তাজমহল কি ইন্ডিয়া গেটের সামনে বেড়াতে গিয়ে দাঁড়িয়ে সেলফি তুললেই সারা ভারত বর্ষ কে বুঝে ফেলা যায়না। ভারতবর্ষকে বুঝতে হলে ভারতবর্ষের ভিতরে ভারতবর্ষকে খুঁজতে হয়। অমৃত কুম্ভের সন্ধানে বেরিয়ে পড়তে হয় প্রান্তে প্রান্তে !
অনেকেই বেড়িয়ে পড়েন, কেউ নিছকই ভ্রমণের আনন্দের নেশায়, কেউ আবার অন্য দের বেড়ানোর জায়গা,তার ইতিহাস জীবন যাত্রা এসব দেখানোর চেয়ে নিজের সাজ সজ্জা , ট্রেনে কি প্লেনে ওঠা থেকে শুরু করে ব্রাশ করা , স্নান করা ব্রেকফাস্ট করা , মেকআপ করা ,পোশাক আশাক, দামী হোটেল ,দামী খাবার কি কি কিনেছে এসব দেখাতে খুবই ভালোবাসেন । সস্তা নেশার মতো সস্তায় সো কল্ড সাহসী মেয়েরা আবার বেড়াতে গিয়ে স্বল্প পোশাক পরিহিতা হয়ে ফটো পোস্ট করতেই ভাল বাসেন ।জায়গা না নিজেকে ঐ পোশাকে কেমন লাগছে সেটা জাহির করতেই ব্যাকুলা।
এরা ভারত ভ্রমণ, বিদেশে ভ্রমণ করতে যান ঠিকই
তাদের কাছে জায়গার ইতিহাস ভূগোল কিছু জানা যায়না । এগুলো দেখে কিছুই অনুভূতি আসেনা মনে । সেখান থেকে দার্শনিক ধারণা প্রাপ্তি অনেক দূরের কথা ! বিদেশে বেড়াতে গিয়ে , বা কর্ম সূত্রে কিছু বছর কাটিয়ে এসে , বা অনেকে দেশ থেকে বিদেশে স্থায়ী ভাবে চলে যান যাঁরা, তাঁরা ভারতবর্ষ কে অনেক বাঁকা চোখে দেখেন , দেশ নিয়ে অনেক সমালোচনা ,ঘৃণা, তাচ্ছিল্য বর্ষিত হয় তাঁদের কথায় ,
ভারতের কিছুই যেন ভালো না যাদের ভাবনা এমন, আসলেই এরা নিজের দেশের কিছুই জানে না । কোনোদিন জানার বা বোঝার চেষ্টা করেনি ,দরকারও মনে করেনি আর কিছু করার তাগিদ ও মনে করেনি শুধুই দেশের কিছু বিখ্যাত জায়গা কি বিদেশ যাওয়ার ব্যাপার টা সকলের কাছে পরিবেশন করার এক উন্মত্ত দেখনদারির নেশাতেই তারা আচ্ছন্ন।
সেই যেমন করে পূর্ণ সন্ন্যাসীর পথে অবতীর্ণ হতে হলে দেশ কে জানার জন্য কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারিকা পাড়ি দিতে হয় ! সন্ন্যাসী যদি নাও হয় ,যদি দেশ কে সত্যি জানার জন্য কিছু করার জন্য দেশ চিনতে জানতে জ্ঞান অন্বেষণে অরুণাচল থেকে আমেদাবাদ , যোধপুর থেকে জঙ্গল মহল ,হিমালয় থেকে হিংলাজ, হরপ্পা থেকে হরিদ্বার কিংবা মহেঞ্জোদারো থেকে মণিপুর,দিল্লী থেকে দেবদারু পথে বা কুম্ভমেলা থেকে কলকাতা বইমেলা অথবা সিন্ধু, গঙ্গা থেকে মানস সরোবর , ভারত মহাসাগরের তীরে তীরে যেমন করে ঘোরে কেউ !
যে জীবন বোধের সন্ধান খুঁজে বেড়ায় কোনো বাউন্ডুলে কি লেখক ।যে ভারতীয় দর্শন যে আধ্যাত্মিকতা খুঁজে পেতে ঘর ছেড়ে ছিলেন একদা গৌতম বুদ্ধ, মহাবীর,শ্রী চৈতন্য , আদি শঙ্করাচার্য,বিবেকানন্দ ..
যে ভারত কে ভালোবেসে স্বাধীনতা - সংকল্পে ব্রতী হয়েছিলেন সুভাষচন্দ্র, দুঃসাহস দেখিয়েছিলেন বাঘা যতীন,ক্ষুদিরাম , প্রফুল্ল চাকী, মাস্টার দা, বিনয় বাদল দিনেশ ,যতীন দাসের মতো স্বদেশী রা ।
পরাধীনতার বিপ্লবে সামিল হয়েছিলেন ভগৎ সিং, বিনায়ক দামোদর ,সাভারকর ,রাসবিহারী বোস , ঋষি অরবিন্দ, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় প্রমুখেরা ।
ঋদ্ধ হতে চেয়েছিলেন যে দর্শনে রবীন্দ্রনাথ ,যে ভক্তিধারায় পরমহংস রামকৃষ্ণ যে দেশের ভাল চেয়ে সংস্কার সাধনে সমাজ সেবায় এগিয়ে এসেছিলেন বিদ্যাসাগর,রামমোহন রায় দয়ানন্দ সরস্বতী।
ভারত আধ্যাত্মিক প্রজ্ঞা ও বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের দেশ। ভারতের ধর্মীয় দর্শনের সার মর্ম হলো ঈশ্বর ও নিজেকে পৃথক করে না দেখা । যেখানে এই বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের সকল দৃষ্টি কে শ্রদ্ধা আর উপাসনার চোখে দেখা হয়। তাই সূর্য চাঁদ তারা মন্ডলী , গ্রহ ব্রহ্মাণ্ড,আকাশ পৃথিবী ,মাটি বৃক্ষ নদী সমুদ্র পর্বত, গ্রন্থ কলম জীব জন্তু সকলেই পূজা পায়।সকলের মধ্যেই প্রাণ আছে । ঈশ্বর বর্তমান । এই সুন্দর চিন্তাধারা আমাদের ভারতেই বর্তমান ।
যেখানে আর্য শুধু একটা জাতি না একটা মানসিকতা।যে অঞ্চলে মানুষের জীবন যাত্রা নির্দিষ্ট উপায়ে মানিয়ে চলার মানসিকতা আছে । যে ক্ষেত্রকে ভগবান বেছে নিয়েছেন ন্যায় সত্য ও ধর্ম সঙ্কটে অবতার রূপে অবতীর্ণ হবার জন্য ।
যে ভূমি আত্মদর্শন, জ্ঞান আর ধ্যানের উপযুক্ত জায়গা।
যেখানে বিশ্বের সু প্রাচীন হিন্দু ধর্মের উদ্ভব সেখান থেকে শাখা হিসাবে জৈন,বৌদ্ধ শিখ ধর্মের উৎপত্তি যেখানে আদিবাসী সারনা ধর্ম গড়ে উঠেছে সেই আমার ভারত বর্ষ। যেখানে মন্দির মূর্তির সংস্কৃতি হাজার হাজার ধ্বংসের পরেও বিরাজমান যেখানে বহু তীর্থস্থান, যেখানে স্থাপত্য ,শিল্প কলা, ভাস্কর্য , স্মৃতি সৌধ,রাজপ্রাসাদ দুর্গ, ভেঙে দেওয়া প্রাচীন গৌরবের বিশ্ববিদ্যালয় আজও তাৎপর্য পূর্ণ ইতিহাসের স্বাক্ষর বহন করে চলেছে সেই আমার নিজের দেশ আমার ভারত ।যার আধ্যাত্মিক সমৃদ্ধি তার বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি ভুক্ত ঐতিহ্য বাহী শিল্প , ধ্রুপদী সাহিত্য , নৃত্য, গীতে ।
বহু ভাষার দেশ ভারত বর্ষের ভাষার দিকে তাকাই যদি ,এখানে সংস্কৃত ,তামিল ( সেমোলি) তেলেগু, কন্নড়, মালয়ালম এবং ওড়িয়া (ওদ্রা)এই ছয়টি ভাষাকে ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা দেওয়া হয়েছে । এই মর্যাদা দেওয়া প্রথম ভাষা হল তামিল। আবার এদের সাথে বর্তমানে অসমীয়া, বাংলা, মারাঠি ( অভিজাতা), আর প্রাচীন পালি, প্রাকৃত যুক্ত করে শাস্ত্রীয় ভাষার মর্যাদা দিয়ে এই ভাষা সমূহ কে ঐতিহাসিক পটভূমি সমৃদ্ধ সাহিত্য এবং অনন্য সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ভাষা বলে মনে করা হয়।
আবার ভারতে সব থেকে বেশি যে ভাষায় কথা বলা হয় তা হলো হিন্দি । হিন্দি কে সারা ভারতের যোগাযোগ এর একটা মাধ্যম ভাষা হিসেবে ধরা হয় ।
ইংরেজ শাসনের জন্য অফিসিয়ালি কাজে ইংলিশ এর ব্যবহার থেকে গেছে।সাথে হিন্দি ও অবশ্যই আছে ।
এগুলো ছাড়াও গুজরাটি, পাঞ্জাবি ,কাশ্মীরি, সিন্ধি, উর্দু ,মনিপুরী, স্থানীয় মৈথিলী,ভোজপুরি হিন্দি বা রাজস্থানী হিন্দি, নেপালি প্রচলিত। আছে কিছু আঞ্চলিক ,আদিবাসী বা উপজাতিক ভাষা যেমন - কঙ্কনি, কচ্ছি, কাথিয়াওয়ারি,সাঁওতালি, বোরো, ডোগরি , টোটো।
একদম প্রাচীন ভারতের ভাষা নিয়ে যদি চর্চা করা হয় সেখানে দেখি প্রাচীন আর্য ভারতীয় ভাষা থেকে
বৈদিক ভাষা, তার পরিমার্জিত রূপ ই হলো সংস্কৃত ।
হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মে এই ভাষা কে অত্যন্ত পবিত্র ও দেবভাষা হিসেবে মানা হয়। এর হরফ কে দেবনাগরী বলে অভিহিত করা হয়। এটি বিশ্বের প্রাচীনতম ভাষার একটি ,এর নথি হল বেদ,বেদান্ত ।
আবার পালি প্রাকৃত ভাষা নিয়ে দেখলে জানতে পারি পালি ভাষায় উপদেশ দিতেন গৌতম বুদ্ধ তার শিষ্যদের। খ্রিস্টীয় তৃতীয় শতাব্দীর আশেপাশে র স্থানীয় প্রাকৃত ভাষার সংমিশ্রণ । পালি কথাটি মগধের প্রাচীন নাম পলাস বা রাজধানী পাটলিপুত্র থেকে আসতে পারে ।
প্রাকৃত ভাষা হল ভারতীয় উপমহাদেশে প্রচলিত লোক মুখের ভাষা । একে অপভ্রংশ নামে অভিহিত করা হয় ।এর তিনটি আঞ্চলিক রূপ ।
মাগধী প্রাকৃত ভাষা থেকে বাংলা, অসমীয়া, বিহারী, ও ওড়িয়া ভাষা; শৌরসেনী প্রাকৃত ভাষা থেকে পশ্চিমী হিন্দি ও পাঞ্জাবি ভাষা; অর্ধমাগধী প্রাকৃত ভাষা থেকে পূর্বী হিন্দি; এবং মহারাষ্ট্রী প্রাকৃত থেকে মারাঠি ভাষার উদ্ভব হয়েছে বলে মনে করা হয়।
প্রাচীন মাগধী ভাষা ,যে ভাষায় গৌতম বুদ্ধ কথা বলতেন ,তার সাথে বিহারের ভোজপুরি ও মিথিলার( নেপাল) মৈথিলী ভাষা ঘনিষ্ঠ ভাবে সংযুক্ত। কবি বিদ্যাপতি ছিলেন মৈথিলী ভাষার বিখ্যাত ব্যক্তি।
আবার প্রাচীন কাশ্মীরি ভাষা ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা পরিবারের ইন্দো-ইরানীয় শাখার দার্দীয় দলের একটি ভাষা।
বর্তমান ভারতের জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের অন্যতম সরকারি ভাষা। কাশ্মীরি ভাষাভাষীদের সংখ্যা প্রায় ৭১ লক্ষ। কাশ্মীরি ভাষাকে স্থানীয়ভাবে "কোশুর" নামেও ডাকা হয়।
কাশ্মীরি ভাষার শব্দভাণ্ডারে ডার্ডিক, সংস্কৃত, পাঞ্জাবি, এবং ফার্সি উপাদান রয়েছে।
কাশ্মীরি ভাষার বর্তমানে ফার্সি লিপি ব্যবহৃত হলেও, এর প্রকৃত লিপি শারদা।
এছাড়া সিন্ধি ভাষা পাকিস্তান ও ভারতের সিন্ধি জনগণের দ্বারা ব্যবহৃত একটি ভাষা। এটি একটি ইন্দো-আর্য ভাষা, বিশেষ করে উত্তর-পশ্চিম ইন্দো-আর্য ভাষার সিন্ধিক গোষ্ঠীর মধ্যে। এটি পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশ ও ভারতের রাজস্থানের একটি সরকারি ভাষা। গুজরাটের কচ্ছ ও মহারাষ্ট্রের উল্লাস নগরে ও প্রচলিত আছে।
ভারতীয় প্রাচীন লিপি গুলো নিয়ে গবেষণায় উঠে আসে ব্রাহ্মী ও খরোষ্ঠী লিপির কথা ।
ব্রাহ্মী একটি প্রাচীন দক্ষিণ এশীয় লিখন পদ্ধতি। অধিকাংশ প্রাকৃত শিলালিপি ব্রাহ্মী লিপিতে লেখা হয়েছিল। ...
খরোষ্ঠী লিপি ছিল একটি প্রাচীন ভারতীয় লিপি যা ভারতীয় উপমহাদেশ এবং বর্তমান পূর্ব আফগানিস্তানের অঞ্চলে খাসা, সাকা এবং ইউয়েঝি সম্প্রদায়ের দ্বারা ব্যবহৃত হত। এটি ডান দিক থেকে বাম দিকে লেখা হতো।
জেমস প্রিন্সেপ ১৮৩৭ খ্রিস্টাব্দে এই দুটি লিপির পাঠ উদ্ধার করেন ।
ব্রাহ্মী লিপি বামদিক থেকে ডানদিকে লেখা হত এর স্বরবর্ণ ,ব্যঞ্জন বর্ণ আলাদা ।ভারতের ২৫ টা লিপির প্রধান ১৪ টা লিপির ১২ টাই হল এখান থেকে উৎপত্তি। এখান থেকে বংশধর হিসেবে উৎপত্তি দেব নাগরী ও নন্দীনাগরী।দেব নাগরী যা সংস্কৃত ,হিন্দি মারাঠি নেপালি,কঙ্কনি বোরো কেন্দ্রীয় ইন্দো আর্য ভাষাতে ব্যাপক ভাবে গৃহীত হয় । মূল অশোকন ব্রাহ্মী থেকে আধুনিক ভারতীয় লিপি গুলি বহু শতাব্দী ধরে বিবর্তিত আছে ।তামিল বা ধামিলি ব্রাহ্মী লিপি র আগে অন্য কোনো লিপি তামিল নাড়ুতে আবিষ্কৃত হয়নি এখনও ।
ব্রাহ্মী লিপির উৎপত্তি সম্পর্কে একটি প্রশ্ন এই পদ্ধতিটি অন্য লিপি থেকে উদ্ভূত নাকি এটি একটি দেশীয় উদ্ভাবন ছিল তার সাথে সম্পর্কিত ? 19 শতকের শেষের দিকে, Georg Bühler এই ধারণাটি অগ্রসর করেছিলেন যে ব্রাহ্মী সেমেটিক লিপি থেকে উদ্ভূত হয়েছিল এবং ব্রাহ্মণ পণ্ডিতদের দ্বারা সংস্কৃত ও প্রাকৃতের ধ্বনিগতের সাথে মানানসই। ভারতে মনে করা হয় সিন্ধু সভ্যতার অনাবিষ্কৃত প্রাচীন লিপির অংশ বিশেষ আবার পশ্চিমা ঐতিহাসিক দের মতে সেমিটিক লিপির সাথে মিল আছে
। সংস্কৃত , পালি প্রাকৃত তামিল শক তোখরিও, এলু
ভাষা ব্রাহ্মীর অন্তর্ভুক্ত। আর এর সাথে দেবনাগরী লিপি , গৌড়ী লিপির মধ্যে বাংলা ,অসমীয়া, কৈথি লিপির মধ্যে গুজরাটি লিপি, শারদা লিপির মধ্যে লন্ডা লিপি , মিশরীয় লিপি, প্রত্ন সিনাই লিপির মিল আছে ।
জৈন ধর্মে মনে করা হয় তীর্থঙ্কর ঋষভ নাথের দুই কন্যা ব্রাহ্মী ও সুন্দরী এর মধ্যে জ্যেষ্ঠার নামে নামকরণ করা হয়েছিল । যাকে লিপির ব্রাহ্মিক পরিবার হিসেবে মান্যতা দেওয়া হয়।
তাহলে দেখা যাচ্ছে ভারতের কথ্য ভাষা আর লিপি নিয়ে কত না ইতিহাস আমাদের দেশে ! কত না রহস্য!
এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত অব্দি জ্ঞান ,দর্শন আধ্যাত্মিকতা বিবিধ ভাষা সংস্কৃতি জীবনযাত্রা নিয়ে যে ঐতিহ্যে র ভারত বর্ষ গড়ে উঠেছে সেই বিপুল ভান্ডারের রত্ন রাজি ছড়িয়ে রেখেছেন ভারত মাতা। যেন বলছেন সেগুলো সংগ্রহ করো যত্নে, ঋদ্ধ হও
আর যদি কেউ যেতে না পারে সারা ভারত বর্ষ ঘুরতে, সেও পারে এই কর্ম যজ্ঞে সামিল হতে সে তার ভারত সম্পর্কে অধ্যয়ন জ্ঞান আরোহণ আর ভারত আর ভারতবাসী কে ভালোবেসে সৎকর্মের মধ্য দিয়ে তাদের জন্য কিছু করার তাগিদ থেকে ।
এই দেশ বেদ বেদান্তের রামায়ণ মহাভারতের দেশ !
এ দেশ মুনি ঋষি দের দেশ । সিন্ধু সভ্যতার দেশ । ব্রহ্মা, বিষ্ণু মহেশ্বরের দেশ , রাম এর দেশ ,কৃষ্ণের দেশ , সূর্য্য রাজের দেশ । সিদ্ধিদাতা, দেব সেনাপতির দেশ। দুর্গা,কালী,লক্ষ্মী সরস্বতী র দেশ । শক্তি আরাধনার দেশ । অশোক চক্রের দেশ ।
পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ দর্শন গীতার দেশ । ভগবত গীতায় শ্রীকৃষ্ণ দর্শন ও ধর্মের শিখর সম্পর্কে যে শিক্ষা দিয়েছেন তা নিঃসন্দেহে বিশ্বের যে কোনো স্থানে উপলব্ধ বাস্তবতার সবচেয়ে সম্পূর্ণ পরিশীলিত ও বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা। সেখানে ঈশ্বর নিজের সম্পর্কে,আত্মা আর জগৎ সম্বন্ধে যে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন তাতে বোঝা যায় কিভাবে এরা আন্তঃসম্পর্কিত।
ভারতবর্ষ হলো আদি মানব সংস্কৃতির ভূমি । বৈদিক সংস্কৃতি র ইতিহাসের লক্ষ লক্ষ বছর আগের । বৈদিক সাহিত্য মানবজাতির কাছে পরিচিত আধ্যাত্মিক ও বস্তুগত উভয় ধরনের জ্ঞানের বৃহত্তম সংস্থা । এখানেই কাশ্যপ, ভরদ্বাজ, শান্ডিল্য, ব্যাসদেব,অগস্ত্য, বশিষ্ঠ, বিশ্বামিত্র , যাজ্ঞবল্ক্য,অত্রি, কনাদ, জৈমিনি,পতঞ্জলি , কপিল ,বাল্মীকি কত না পূণ্যত্মা ঋষি দের আবির্ভাব ঘটেছে । তাঁদের সুগভীর জ্ঞানে ভারত বর্ষ গৌরবের শিখরে পৌঁছেছিল।
আবার গার্গী মৈত্রেয়ী, অপালা,লোপামুদ্রা ক্ষণা, ঘোষা, জুহু বৈদিক যুগের বিদুষী নারী থেকে বীরাঙ্গনা রানী দুর্গাবতী ,রানী লক্ষ্মীবাঈ , শাসিকা হিসাবে রাজিয়া সুলতানা ,নূরজাহান ইন্দিরা গান্ধী সহ অন্যান্য অনেক নারী গণ দেশ সেবায় ,সমাজ কর্মী হিসেবে বা সমাজের বিভিন্ন ভালো দিকে নিজ প্রতিভায় যোগ্যতার ছাপ রেখেছেন।
এখানেই আমরা দেখি কত বীর সম্রাট ও রাজা দের বীর গাঁথা। সম্রাট চন্দ্র গুপ্ত মৌর্য, রাজা পুরু ,রাজা দাহির, সম্রাট কণিষ্ক, ইন্দো - গ্রিক রাজ মিনান্দার, সম্রাট অশোক,সম্রাট আকবর, রাজপুত রাজ রানা প্রতাপ , বীর পৃথ্বীরাজ চৌহান,সম্রাট রাজেন্দ্র চোল , রাষ্ট্রকূট রাজ প্রথম অমোঘবর্ষ ,রাজা কৃষ্ণদেব রায়
সম্রাট হর্ষবর্ধন , গৌড় অধিপতি শশাঙ্ক, সেনরাজা বিজয় সেন ,পালরাজ দেবপাল, বাংলার সুলতান হুসেন শাহ, নবাব সিরাজউদ্দৌলা, বাজিরাও, শিবাজি ইত্যাদি বিখ্যাত শাসক ইতিহাসে নাম লিখে গেছেন।
পেয়েছি সম্রাট রাজা দের গড়ে তুলতে বা সেনাপতি হিসেবে সহায়তা করতে বিখ্যাত কিছু নাম যেমন পণ্ডিত চাণক্য,( চন্দ্র গুপ্ত মৌর্য কে সম্রাট হিসেবে গড়ে তুলেছিলেন তিনি )বৈরাম খাঁ, ( আকবরের প্রধান উপদেষ্টা ও হুমায়ুনের অবর্তমানে অভিভাবক ছিলেন )রাজা মান সিং ,(আকবর এর প্রধান সেনাপতি ) , আকবরের সাথে বিখ্যাত পানিপথ যুদ্ধ' এর রাজা হিমু ( আফগান শাসক আদিল শাহ সুরির প্রধান মন্ত্রী ও সেনাপতি) ইত্যাদি
এ দেশেই অসাধারণ পুরাণ ইতিহাস রচনা হয়েছিল যা আজও আর কোনো কথা সাহিত্যিক রচনা করতে পারেননি।
বহু চিন্তা ধারার প্রবর্তক এই ভারতবর্ষে যে বিশেষ ছটি চিন্তা ধারা স্বীকৃত সেই বৈশেষিক, ন্যায় , মীমাংসা, যোগ, সাংখ্য, বেদান্ত তে জীবন কি তার উদ্দেশ্য ,পরমাণু, বিজ্ঞান ,অধিবিদ্যা,রাজনীতি , নীতি শাস্ত্র, সূর্য্য,সৌরমণ্ডল , বিশ্বব্রহ্মাণ্ড, ব্রাহ্মণ্য ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করেছেন।
মহাজাগতিক পবিত্র রহস্য বেদান্ত বা উপনিষদ আকারে প্রকাশিত । যেখানে সর্বোচ্চ সত্য স্রষ্টা বা ব্রহ্মের প্রকৃতি, মানুষের মোক্ষ বা আধ্যাত্মিক মুক্তি লাভের উপায়, ব্রহ্ম ও তাঁর সৃষ্টি নিয়ে আলোচনা, দার্শনিক অনুমান , আত্মা আচার এসব বর্ণিত হয়েছে সুন্দর ভাবে ।
মনুর মনুসংহিতা, চার্বাক মুনির চার্বাক দর্শন, পাণিনির ব্যাকরণ অষ্টাধ্যায়ী , কলহনের রাজতরঙ্গিনী, ঈশ্বর চন্দ্রের কৌমুদী ব্যাকরণ ইত্যাদি ইত্যাদি কত না অমূল্য গ্রন্থ এর রচনা হয়েছে এখানেই ।
এই ভারতেই যুক্তিবিদ্যা , স্থাপত্য, ভাস্কর্য কলা ,রসায়ন তত্ত্ব ,রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রবর্তিত ও বিবর্তিত হয়েছে।
যেখানে দশমিক প্রথা , শুন্য এর আবিষ্কার ,যেখানে
ভারতীয় জ্যোতির্বিদ্যায়, গুপ্ত যুগে আর্যভট্ট সাইন ফাংশন, কোসাইন ফাংশন, এবং ভার্সাইন ফাংশন আবিষ্কার করেছিলেন।
এই ভারতেই প্রাচীন যুগ থেকে কত না বিখ্যাত গণিতবিদ এর জন্ম ।ব্রহ্মগুপ্ত,আর্যভট্ট, ভাস্করাচর্য ,বৌদ্ধায়ন , মাধব সঙ্গমগ্রাম, সত্যেন্দ্রনাথ বোস, শ্রীনিবাস রামানুজন, বৈদিকযুগে র লীলাবতী থেকে আধুনিক যুগের শকুন্তলা দেবী । আবার যদি চিকিৎসা বিজ্ঞানের দিকে তাকাই প্রাচীন কাল থেকে ধন্বন্তরি , চরক, সুশ্রুত, জীবক, উপেন্দ্রনাথ ব্রহ্মচারী, ডঃ বিধান চন্দ্র রায় ডঃ সুভাষ মুখোপাধ্যায়, ডঃ দেবী শেঠি কত না নাম!
ভারতের নোবেল পুরস্কার বিজয়ীদের তালিকা তে দেখি
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
স্যার সিভি রমন
এইচ. খোরানা
মাদার টেরেসা
এস. চন্দ্রশেখর
অমর্ত্য সেন
ভি. রামকৃষ্ণান
কৈলাশ সত্যার্থী
অভিজিৎ ব্যানার্জি
এনাদের নাম কি কম গৌরবের! তেমনই ভারতীয় বংশভূত ব্রিটিশ লেখক ভি এস নাইপলের সাহিত্যে তাঁর ' হাফ এ লাইফ ' গ্রন্থ টির জন্য নোবেল প্রাইজ লাভ সেটাও আনন্দের ।
অপর ভারতীয় বংশভূত ব্রিটিশ - আমেরিকান লেখক সলমন রুশদির দ্বিতীয় উপন্যাস মিডনাইটস চিলড্রেন ১৯৮১ সালে ম্যান বুকার পুরস্কার অর্জন করেছিল। তাঁর লেখার অনেকটা অংশ জুড়েই থাকে ভারতীয় উপমহাদেশ।
আবার ঐতিহাসিক রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায় তিনি না থাকলে জানতেই পারতাম না মাটির তলায় আস্ত এক সভ্যতা ঘুমিয়ে আছে । আস্ত দুটো নগর মাটির নীচে সেই আমাদের ভারতের প্রাচীন সিন্ধু সভ্যতা । কুর্নিশ জানাই ওনাকে।
অন্যদিকে রাধানাথ শিকদার যিনি অঙ্ক কষে এভারেস্টের উচ্চতা মেপেছিলেন। ভুলি কি করে এনাদের কথা !
যুগে যুগে এই দেশে জন্ম নিয়েছেন কত না মহাপুরুষ , বিভিন্ন দিকে কত না বিখ্যাত ব্যক্তি ! ভারত ভূমি ধন্য তাদের কীর্তিতে। গর্বিত আমরা তাঁদের জেনে ।
কত মুনি ঋষি , শাস্ত্র ও ধর্ম গ্রন্থ প্রণেতা,সাধক , সম্রাট, রাজা ,সৈনিক ,দেশপ্রেমিক , সমাজসেবী , গণিতবিদ , বিজ্ঞানী , সাহিত্যিক , ঐতিহাসিক,জ্যোতির্বিজ্ঞানী , পরিচালক ,অভিনেতা গায়ক , নৃত্য শিল্পী চিত্র শিল্পী , শিক্ষক , চিকিৎসক , রাজনীতিবিদ, খেলোয়াড় ব্যবসায়ী ইত্যাদি কত দিকেই না সফল ব্যক্তিদের আবির্ভাব ঘটেছে । দেশের মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে ।
স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে পেয়েছি লাল বাহাদুর শাস্ত্রী, সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল, আব্দুল কালাম আজাদ, অটলবিহারী বাজপেয়ী, রাজীব গান্ধী, নরেন্দ্র মোদী ,এস জয় শংকর , অজিত ডোভাল,রতন টাটার মতো ব্যক্তিদের। একদা প্রাচীন ভারত যেমন ঐতিহ্যে সংস্কৃতি তে স্বমহিমায় উজ্জ্বল ভাবে অবস্থান করত তেমনই আজকের ভারতও আমেরিকার চোখে চোখ রেখে কথা বলতে পারে । চীন কে ঠান্ডা রাখতে জানে ।যে ইংরেজরা একদা ভারত বর্ষ তে উপনিবেশ গড়ে গেছিলো , ভারতের অর্থ সম্পদ লুট করে নিয়ে গেছিল আজ তাদের কে পিছিয়ে দিতে জানে ইন্ডিয়া। প্রতিবেশী শত্রু পাকিস্তান বাংলাদেশ হিংসুক শ্রীলঙ্কা মালদ্বীপ , কি অবুঝ নেপাল কে শায়েস্তা করতে জানে। রাশিয়া ইজরায়েল এর দিকে নিজের অবস্থান সম্পর্কে দৃঢ় থাকতে জানে। বিশ্ব রাজনীতির মোড় ঘোরাতে পারে আজকের ভারত বর্ষ। কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ফ্রান্স, উত্তর কোরিয়ার সাথে যুঝতে পারে।
ভারতের সেনাবাহিনী আমাদের গর্ব। মহাকাশ কেন্দ্র ইসরো আমাদের গর্ব। ভারতের মহাকাশ চারি রাকেশ শর্মা,কল্পনা চাওলা ,ভারতীয় গুজরাতি বংশভূত নাসার সুনীতা উইলিয়ামস আমাদের গর্ব ।
ভারতের চন্দ্রযান ,মঙ্গল যান পাঠানোর উদ্যোগ ,সফলতা, অ্যান্টার্কটিকা অভিযান ও গবেষণা, এভারেস্ট জয় , ক্রিকেট হকিতে বিশ্বকাপ জয় বা অন্য খেলাতে আন্তর্জাতিক পদক লাভ এগুলো ও আমাদের গর্বের বিষয়।ভারত বিশ্বে বিজনেসে উল্লেখ যোগ্য স্থান লাভ করছে । বিশ্ব রাজনীতিতে এখন অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মুখ ভারতের হয়ে উঠছে ।
সুতরাং ভারত কে বুঝতে হলে প্রান্তে প্রান্তে ভারত বর্ষকে খুঁজতে হয় । দেশটার দায় দায়িত্ব শুধুই পলিটিক্যাল পার্টির হাতে ছেড়ে না দিয়ে নিজেকেও কিছু করার তাগিদ রাখতে হয় । কত বিলুপ্ত কি বিলুপ্ত হতে চলা ভাষা ,শিল্প ,ঐতিহ্য, সংস্কৃতি বা প্রান্তিক জীবন যাত্রা , কি তাদের অসুবিধা ,কোথায় কোন সমস্যা , কোথাও কোনো অরাজকতা , অসামাজিকতা এসব নিয়েও একটু সোচ্চার হতে হয় বা মানুষের কাছে তুলে ধরতে হয় অনেক অজানা তথ্য ,বা যাদের হয়ে বলার কেউ নেই তাদের কথাও জানাতে হয় বা তাদের নিয়ে কাজ করতে হয় ।
আমার নিজের দিক থেকে ভারত নিয়ে বিভিন্ন মহাপুরুষ দের লেখা বা অন্য কারো বিখ্যাত গ্রন্থ থেকে অনুপ্রেরণা ছাড়াও বর্তমানে সময়ের দিকে যদি চোখ তুলে দেখি, এই সময় পরিচালক, লেখক/কবি রাজাদিত্য বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর সিনেমা ও লেখায় ভীষণ ভাবে তুলে ধরছেন এই সব অনেক কিছু জিনিস বা তথ্য যা ভাবতে শেখায়,কিছু করার তাগিদ শেখায় । একই সাথে জীবন বোধের দর্শন ও বললে অত্যুক্তি হবে না । মৃত্যুর জীবন দর্শন নিয়ে বেনারস ঘাট, বাঁধ সমস্যা , বিলুপ্ত হতে চলা ভাষা ,শিল্প ,পেশা প্রান্তিক জীবন যাত্রা ,সামাজিক সমস্যা , অস্ফূট কষ্ট ,বর্তমান সমাজ আর দেশ নিয়ে বলতে চায় যেনো"ভাবো ভাবো ভাবা প্র্যাকটিস করো"!
ভারত কে নিয়ে ভাবতে শেখায় তাঁর সৃষ্টি । জীবনের বিভিন্ন দিক বুঝতে শেখায়। ভারতের পথে প্রান্তে অমৃত কুম্ভের সন্ধানে থাকা মানুষ টি ভয়েস অফ ভয়েস লেস নিয়ে কাজ করতে ভালোবাসেন তাঁর লেখা আর ছবির গভীরতা এই সমাজ এবং দেশ নিয়ে আমায় ব্যক্তিগত ভাবে ভীষণ অনুপ্রাণিত করে ।
এই জীবন টা ফালতু রিলস বানানোর জন্য না । অর্থহীন সাজ ,বিলাসিতা ,দেখনদারি আর অশ্লীল জনপ্রিয়তার পিছনে ছুটে কাটিয়ে দেবার জন্য না ।
দেশের প্রতি আমাদের দায় বদ্ধতা আমরা অস্বীকার করতে পারিনা । বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক,আয়তনে সপ্তম আর প্রায় ১৪০ কোটি জনসংখ্যার দেশ কে অশিক্ষিত , কোলাহল পূর্ণ বলে দাগিয়ে দিতে পারি না । ইউরোপের আয়তনে ছোট দেশ কম জনসংখ্যার দেশ গুলির সাথে তুলনা করা যায়না ।এখানেও নিরবতা আছে । নির্জনতা আছে ।খুঁজে নিতে হয় । এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য স্থাপত্য ভাস্কর্য ইউরোপ আমেরিকার দেশ গুলির থেকে কম কিছু নেই ।
অশিক্ষা থাকলে কোথায় গলদ , শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্বাস্থ্য দপ্তর এ কোথায় গাফিলতি , ভারতের জিডিপি বৃদ্ধি র হার কত , আর্থিক উন্নতি কোন পথে আরো ভালো হবে , রাজ্যে কি দেশে কোন সরকার এর কি কাজ করছেন কোন পথে এগোচ্ছে রাজ্য দেশ , বর্ধিত জনসংখ্যা কে কীভাবে বাঁধা যাবে
ইত্যাদি বিষয়ে নলেজ রাখা বা সমীক্ষার প্রয়োজন ।
একটা বাড়িতে অনেক লোক থাকলে সেখানে কোলাহল হয় আর আর্থিক দিক থেকেও তাদের পিছনে খরচ বেশি হয় । সেটা কাটানো যায় সবার রোজগার যখন ঠিক থাকবে । উন্নত হবে । বা লোক সংখ্যা কম হলে সেখানে জীবন যাত্রার মান টাও উন্নত হয়।
তাই পারলে রাজনৈতিক দলের উপরে ভরসা না করে দেশ আর সমাজের ভালোর জন্য আর অসহায় ,অনাথ, অত্যাচারিত, অবহেলিত মানুষের জন্য নিজ উদ্যোগেও কিছু পদক্ষেপ নেওয়া দরকার । শুধু নিরাপদ এসি ঘরে বসে দেশের বিখ্যাত জায়গা কি বিদেশ ঘুরে এসে ঠিক সময়ে সরকারি চাকরির মাইনে টা ব্যাগে ভরে বিলাসিতায় থেকে আর স্বার্থপর হয়ে মুখ বাঁকিয়ে বললে হয়না এই দেশটাতে কিছু নেই, একেবারে অশিক্ষিত, রাস্তায় কোলাহল ,লজ্জা লাগে বাইরে ইন্ডিয়ান বলতে ,আরো ২০০ বছর ইংরেজ শাসন থাকলে ভারতবাসী হয়তো কিছু ম্যানার্স শিখতো। এই ধরণের মানসিকতার লোক জন দের প্রতি আমার একরাশ ঘৃণা আর ধীৎকার। তারা দেশের কিছু ই জানে না।
কখনও কি এই প্রশ্ন মাথায় এসেছে এই দেশের সুপ্রাচীন সভ্যতা আর একটা সুপ্রাচীন ধর্ম বার বার নানা দিক থেকে আঘাত প্রাপ্ত হয়ে , ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে কিভাবে আজও মাথা তুলে আছে !
টুকরো হয়েছে ,কত কিছু ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে , অন্ধকারে রাখার চেষ্টা চলেছে । মান সম্মান ডুবিয়ে দেবার ,ছোট করার কত খেলা চলেছে ,দেশের সংস্কৃতি , ঐতিহ্য, আধ্যাত্মিকতাকে ভাঙার কত প্রচেষ্টা চলেছে বা চলছে সব আজও ..তবু কিসে তার গরিমা ! কিসের এত মহিমা!
=================
ঠিকানা - পাল্লারোড পূর্ব বর্ধমান