Click the image to explore all Offers

মুক্তগদ্য ।। গাঁয়ের পথ ।। অঙ্কিতা পাল (বিশ্বাস)

 
 
গাঁয়ের পথ 

 অঙ্কিতা পাল (বিশ্বাস) 



গরমের ছুটি পরেছে দেখতে দেখতে আজ ২৫ টা দিন। কচিকাঁচাদের  আর সময় কাটেনা ; পড়াশোনায় আর মন বসে না। কী করবে? এত বড় ছুটি  সারাদিন, দুষ্টুমি আর দুষ্টুমি। তাদের আবদার sea beach দেখতে যাবো তাই সমুদ্র সৈকত বলতে যার কথা আগে মনে পরে সেটি হলো - দীঘা। বেড়াতে যেতে কার না ভালো লাগে, তাই আর বিলম্ব না করে দীঘায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত টা নিয়েই ফেললাম। এবারের দীঘার মূল আকর্ষণ হলো -জগন্নাথ দেবের মন্দির। মেয়েরা কতো আনন্দের সাথে ট্রলি ব্যাগে নিজেদের জামাকাপড় গুছিয়ে নিলো তার সাথে বেলুন খেলনা নিতেও ভুললো  না কিন্তু। যাইহোক দুর্ভাগ্যবশত সেই স্থানে যাওয়া সম্ভব হলো না। পরবর্তীতে স্থির করা হলো  ইকো পার্কে ভ্রমণ করতে যাবো। বাচ্চাদের মন খারাপ থাকলেও তারা সেখানে যেতে আগ্রহ প্রকাশ করেছিলো;  শারীরিক অসুস্থতার কারণে সেটিও  বাতিল হয়ে গেলো।  বাচ্চারা খুব কান্নাকাটি করতে শুরু করেছিলো তাদের বাবা তাদেরকে অনেক বুঝিয়ে বললেন, অবশেষে একটি ছোট্ট গ্রাম চিলেতলা সেখানে একটি ফুলের বাগানে ঘুরতে যাওয়া হয়েছিলো এক অপরাহ্ন বেলায়।
আমার বাড়ি থেকে টোটোর সংযোগের সেখানকার দূরত্ব প্রায় ৩০ মিনিট। গ্রামটির ছোট্ট হলেও ছবির মতন সাজানো। বিশেষত শীতকালে গাঁদা ফুলের মেলার অপরূপ শোভা দেখার মতন। এবারে ততটা গাঁদার মেলা না থাকলেও ছিলো সবুজ  ধান ক্ষেত, পটল ও ঝিঙ্গার ক্ষেত দেখে মনে হচ্ছিলো সবুজের সমাবেশ।
পশ্চিম আকাশের ওই লাল সূর্যের আভা যখন কোমল সবুজ ধানের ওপরে পরেছে তখন চারিপাশ যেন লাবণ্যমন্ডিত হয়ে উঠেছিলো। গ্রামের সরু পথ ধরে চলেছি আর দেখছি গরুর পাল,  কাঁচা বাড়ি, ইটভাঁটা, খালের উপর কচুরিপানা ভেসে যাচ্ছে, নাম না জানা জংলি বাহারি ফুল, বৃহৎ আকৃতির বটবৃক্ষ, জলকর আবার কতগুলি মানুষ নৌকার মতো কাঠের তৈরি পাটাতনে ভাসতে ভাসতে চলেছে।।
এবার টোটো এসে দাঁড়ালো এক দোতলা বাড়ির সামনে বাড়িটির দক্ষিণ দিকে একটি সুন্দর ব্যালকানি আর পূর্ব পাশে বিরাট এক ফুলের নার্সারি, কতো সুন্দর সুন্দর ফুল ও ফলের গাছ।
রংবেরঙের প্রজাপতি, লাল রঙ্গনের মাঝে গোলাপি সাদা কাগজ ফুলের দল, সাদা ও হলুদ অলকানন্দা। একটু এগিয়ে গেলেই পাত্রে রাখা শতদলের চারিপাশে একগুচ্ছ অ্যাডেনিয়াম। কত রকমের ঝাউ থেকে স্নেক প্ল্যান। নাক চম্পা,  গোলাপ দত্তপ্রিয়া আরো কতো  রংবেরঙের ফুল। তারই মধ্যে পছন্দ হলো হলুদ অলকানন্দা, সবুজ ঝাউ, একটি হলুদ রঙের জবা, আমার পছন্দের কাগজ ফুল। কিভাবে যে এক ঘন্টা অতিবাহিত হয়ে গেলো বুঝতেই পারলাম না।
আমার এই জায়গাটা খুব পছন্দের মন খারাপের এক প্রকার ঔষধ। জায়গাটি দীঘা পুরী র মতো সুন্দর না হলেও মনের কাছে রবি ঠাকুরের -  " একটি ধানের শীষের ওপর একটি শিশির বিন্দু "।।
==================

ভাঙ্গড় দক্ষিণ ২৪ পরগনা

 


Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.