বিস্তারিত জানতে ছবিতে ক্লিক করুন :

ভ্রমণকথা ।। এয়ারক্রাফ মিউজিয়াম ।। অঙ্কিতা পাল (বিশ্বাস)

 

 ভ্রমণকথা : এয়ারক্রাফ মিউজিয়াম 

অঙ্কিতা পাল (বিশ্বাস)


দেখতে দেখতে দুর্ঘটনার একমাস অতিক্রান্ত হয়ে গেলো.....................

শনিবার রাখি বন্ধন উৎসব শেষ করে মধ্যাহ্ন ভোজন সেরে  বিকেলে বেরিয়ে পরলাম নিউটনের উদ্দেশ্যে, গন্তব্য এয়ারক্রাফ মিউজিয়াম। বাড়ি থেকে এটার দূরত্ব প্রায় কুড়ি কিলোমিটার।
আমি ঘুরতে খুব ভালোবাসি তাই পরিবেশকে সাক্ষী রেখেই একটি টোটো সংযোগে চললাম " আমি" আমার গন্তব্যে  ; সঙ্গে ছিলো দুই কন্যা, কর্তা মহাশয়, দুই ভাই ও চালক।
কি সুন্দর! পড়ন্ত বিকালে লাল সূর্যকিরণ আমাদের সাথে গল্পের ছলে চলতে লাগলো। গ্রামের পথ ধরে এগিয়ে এসেছি................
          কখন যে হাতিশালা পার হলো বুঝলাম না।
পথের পারে লাল গোলাপি সাদা করবী ফুলের দল, কখনোও বা লাল গোলাপি রঙ্গনের মেলা, কোথাও আবার টগর কৃষ্ণচূড়া কলাবতী বাতাসে দুলছে।।

এভাবেই এগোচ্ছি....... হঠাৎই টোটোর টায়ার ফেটে গেলো। যাত্রাকালে একটা বিভ্রাট ;
যাইহোক চালক বিকল্প চাকার সাহায্যে চলতে লাগলেন।।
আরো একটু এগিয়েছি ; পথের দুপাশে করবী দল আমাদের সাথেও এগোচ্ছে । এমন সময় আবারও বিভ্রাট, একদম বম ফাটার মতো সশব্দে আরেকটি চাকা ফেটে গেলো। বাচ্চা বাচ্চারা শঙ্কিত মনে আমার দুটি হাত শক্ত করে ধরে রেখেছিলো। গন্তব্যে পৌঁছতে ঠিক আর দশ মিনিট কি করবো কূল কিনারা না খুঁজে পেয়ে একখানা বাসে উঠে পরলাম, অবশেষে পৌঁছে ও গেলাম। স্বচ্ছ নীল আকাশের বুকে সাদা মেঘ এক প্রান্ত থেকে  অপর প্রান্তে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আহা! কি মায়াবী পরিবেশ দেখে মন ভরে গেলো ;  এক বিরাট যুদ্ধ বিমান তার চতুর্দিকে সবুজ কমল ঘাসে ভরা বাচ্চাদের বিনোদন পার্ক। তাদের চড়বার জন্য বিভিন্ন খেলার সামগ্রী রাখা আছে। প্রথমে আমরা ঐ যুদ্ধবিমানের অন্তরে প্রবেশ করতেই দেখলাম নানান রকম যুদ্ধ সামগ্রী রক্ষিত রয়েছে। এর ভিতর ছবি তোলা একেবারেই নিষিদ্ধ দুটো  মানুষ সব সময় বসে রয়েছে তার  ভেতর ওনারা হয়তো বহিরাগতদের নিরীক্ষণ করছেন।
    এবার পার্কে বসে চিপস, কেক কোলড্রিংস, চকলেট, বাচ্চাদের ললিপপ, বিস্কুট ইত্যাদি সামান্য খাবার খাওয়া হলো। পার্কটির চারিপাশ  ঘুরতে ঘুরতে রংবেরঙের বাগান বিলাস, দোপাটি, জবা ফুল, নয়ন তারা, মোরগঝুঁটি, বোতাম ফুল, নাইন ও ক্লক, কলাবতী, পাতাবাহার,
স্পাইডার প্লান্ট, বোতল ব্রাশ বিভিন্ন রকমারি ফুলের সম্ভার চোখে পরলো। মেয়েগুলো মামাদের পেয়ে খুব খুশি তারা তাদের সাথে খেলায় মত্ত হয়ে উঠলো, বিভিন্ন খেলার জিনিস চড়ে প্রচন্ড খুশি হলো  এবং উৎফুল্ল চিত্তে কখন যে সময় অতিবাহিত হয়ে গেলো.................
সূর্যি মামা এবার পশ্চিম দিগন্তে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন, পাখির দল বাসায় যায়,  আকাশে আঁধার নেমে এলো।

এবার বাড়ি ফেরার পালা.............
আবারো উঠে বসলাম টোটো তে।

সন্ধ্যের মৃদুমন্দ বাতাসে এগোচ্ছি বাড়ির পানে............ বাতি স্তম্ভের নীল প্যাঁচানো প্যাঁচানো আলো সবেই জ্বলে উঠেছে। কোনো কোনো  আলোক স্তম্ভে আবার বিভিন্ন কারোকার্য করা আছে।
গল্প করতে করতে আবারো চাকা সশব্দে ফেটে গেলো ; রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছি চারিদিকে হালকা বাতাস প্রবাহিত হচ্ছে।। এমন জায়গায় একটিও গাড়ি নেই কি করবো? এই অন্ধকারে ভাবতে ভাবতে প্রায় আধঘন্টা দাঁড়িয়ে আছি পরস্পর তিনটি বাস চলে গেলো অবশেষে একটা পাওয়া গেলো যেটার শেষ যাত্রা হাতিশালা। আবারো ও পাল্টে অটোতে ভোজেরহাট অবশেষে আরেকটি টোটোর সংযোগে বাড়ি ফেরা হলো।
আমার এই ভ্রমণ মোটের ওপর ভালো না হলেও ; কিছু অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করলাম। এরকম ছোট্ট ভ্রমণের অভিজ্ঞতা স্মরণীয় হয়ে থাকলো আমার জীবনে।।
=========================================

ভাঙ্গড় দক্ষিণ ২৪ পরগনা

 


Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.