আমার চোখে মোহময়ী দার্জিলিং
খানিকটা অপ্রত্যাশিত ভাবেই সুযোগটা এসে গেল ।বাবার পাশের স্কুলের পুষ্পেন্দু কাকু ও তাদের পুরো ফ্যামিলি এবং জয়দেব জেঠু ও ঝুমা আন্টি দের সঙ্গে আমরা শিয়ালদা থেকে দার্জিলিং এর গাড়িতে চড়ে বসলাম। তারিখ 5 ই আগস্ট 2019 শনিবার। সকাল সাতটা কুড়িতে গাড়ি । ভোর থেকে ব্যস্ততা মা-বাবা র।টিফিন গুছানো ,ব্যাগপত্র বাধা ,জলের বোতল ,ওষুধ পত্র জামা কাপড়-সমস্ত কিছু গুছিয়ে নিয়ে ভোরবেলা আমরা সোনারপুর থেকে রওনা হলাম।
এর আগে আমি বাবার সঙ্গে হায়দ্রাবাদ, ভাইজাক, পুরি ,দিঘা -ঘুরে এলে ও পাহাড়ে ভ্রমণ এই প্রথম। তাই একটু টেনশন ছিল। আবার আনন্দ ও হচ্ছিল। বিশেষত মা খুব টেনশ্ড ছিল। যাই হোক, আমি এই প্রথম ট্রেন থেকে মালদার ফারাক্কা ব্যারেজ দেখলাম। খুবই রোমাঞ্চিত মনে হচ্ছিল। সন্ধ্যে সাড়ে ছটায় আমরা শিলিগুড়ি পৌছালাম । ওখান থেকে গাড়ি করে দার্জিলিং যেতে হবে। গাড়ি ঠিক করে আমরা চড়ে বসলাম। ক্রমে সমতল রাস্তা ছেড়ে আমাদের গাড়ি পাহাড়ি পথ ধরল এবড়ো-খেবড়ো পাহাড়ি রাস্তা দেখে আমাদের মুখ শুকিয়ে গিয়েছিল। পাহাড়ের গা বেয়ে বেয়ে ক্রমশ গাড়ি যতই উপরের দিকে উঠছিল ততই ভয় ও বিস্ময়ে রোমাঞ্চিত হয়ে উঠছিলাম । সামনে একটা গাড়ী এসে গেলে চিন্তা বাড়ছিল কিন্তু এখানকার ড্রাইভাররা এতটাই দক্ষ যে কোন সমস্যা আমাদের বুঝতে দেয়নি। যাইহোক অনেক খোঁজাখুঁজির পরে আগে থেকে বুক করে রাখা হোটেলে আমরা রাত 11 টা নাগাদ পৌছালাম। পুষ্পেন্দু কাকু ফোন করে খাবার অর্ডার দিয়ে রেখেছিলেন। সেই খাবার খেয়ে আমরা সারাদিনের ক্লান্তি ঝেড়ে ফেলতে হোটেলের ঘরে গিয়ে শুয়ে পড়লাম এবং বিশ্রাম।
ম্যালের দুর্গাপূজা
পরদিন সকালে আমি বাবা ও পুষ্পেন্দু কাকুর সঙ্গে দার্জিলিং ম্যালে ঘুরতে গেলাম ।তখনও ভালো করে সকালেরআলো ফোটেনি। চারিদিক ঘন কুয়াশায় ঢাকা। এ সময়েও এখানে বেশ ঠান্ডা । বাবা সোয়েটার চাদরে আমাকে ঢেকে দিয়েছিল। পুষ্পেন্দু কাকু ও বাবা গরম পোশাক পড়ে নিয়েছিলেন। কুয়াশায় ঢাকা ম্যালে এরই মধ্যে কেউ কেউ মর্নিংওয়াকে ব্যস্ত । বাচ্চারা ফুটবল নিয়ে খেলাধুলায় ব্যস্ত ছিল । তখন দুর্গাপূজা চলছিল। এখানেও প্যান্ডেল করে দুর্গা ঠাকুর উঠেছিল ।দুর্গা প্রতিমার সামনে গিয়ে আমরা ভক্তিভরে প্রণাম করলাম।
এরপর পাইন গাছের তলায় বসে হালকা শীতের আমেজ উপভোগ করতে করতে দার্জিলিংয়ের চা পান করলাম । মধ্যমগ্রামের একজন ভদ্রলোকের সঙ্গে বাবা গল্প করছিলেন ।এখানে আমি বেশ কিছু ছবি তুললাম।আজ বিকালে আমরা মিরিক যাব।
( ক্রমশ...)
দেবাঞ্জন