Click the image to explore all Offers

কিশোর গল্প ।। বোধোদয় ।। পারমিতা রাহা হালদার (বিজয়া)


বোধোদয়

পারমিতা রাহা হালদার (বিজয়া)

     
       আসানসোল শহরের অন্যতম মাধুর্য মহালয়ার  ভোরে বাজি পোড়ানো। ভোরবেলায় ছন্দ তালে ফেটে যাওয়া শব্দ বাজির  সাথে রেড়িওতে বেজে ওঠা চণ্ডীপাঠ আজও মহালয়ার সকালটাকে বেশ স্পেশাল করে তোলে। 

           বোধন আর সায়ন দুই অভিন্ন হৃদয়ের বন্ধু, পাশাপাশি বাড়ি। স্কুল যাওয়ার থেকে রাতে ঘুমানো পর্যন্ত একে অপরের সাথেই সময় কাটায়। সাত বছর বয়সী দুই বন্ধুর মিষ্টি একটা সম্পর্কের ছবি দেখা যায়।

       চার বছর বয়সেই সায়ন বাবা কে হারায়।  "যেকোনো মানুষের বিপদে ঝাঁপিয়ে পড়তো বাবা নিজের জীবন তুচ্ছ করে, সেই কারণে পৃথিবী থেকে চলে যেতে হয়"। মায়ের কাছেই শুনেছে সায়ন,বাবা মহালয়ার সকালে নদীতে তর্পণ করতে গেলে একটি ছেলে নদীতে সাঁতার কাটার সময় চোরাবালিতে ঢুকে যায়। বাবা দেখতে পেয়ে বাঁচানোর জন্য ঝাঁপ দেয় কিন্তু দুর্ভাগ্য বশত সেই সময় জোয়ারের টান  থাকায় ছেলেটির সাথে বাবাও ডুবে যায়। নিজের প্রাণের বিনিময়েও ছেলেটির প্রাণ বাঁচাতে পারে না। 

                   মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে বোধন। বিলাসিতার মধ্যে মানুষ না হলেও সমস্ত বায়নাই মেটাতো বাবা। বাবার প্রশয়ে ছেলের জেদ বেড়ে চলেছে সকলেরই অভিযোগ। 

          মহালয়ার দিনই বাবার মৃত্যুদিন, মা আতসবাজি কিনে দেয়না তাই সায়ন কে। বোধনের বাবা দুজনের জন্যই আতসবাজি এনেছেন। ছেলের বায়নাতে কিছু বাজিও  এনেছেন যেগুলো বাচ্চাদের জন্য ভয়ানক। মহালয়ার ভোরে দুইবন্ধু আতসবাজি ফাটাবার সময় ভয়ানক বাজি গুলো বোধন নিজে ফাটাবার জেদ করলে সায়ন নিষেধ করে কিন্তু বোধনের জেদের কাছে পরাস্ত হয়।  বিপদ আসলো বোধনের হাত ধরে,বাজি ফাটতেই আগুনের ফুলকি সায়নের চোখে পড়ে। ভীষণ যন্ত্রণায় ছটফট করা সায়নের চোখ পরীক্ষা করে ডাক্তার জানান আর কখনোই সায়ন চোখে দেখতে পারবে না। 

           বোধনের বোধোদয় হলো তার জেদের বশে প্রিয় বন্ধুর মারাত্মক ক্ষতিতে। সায়নের হাত ধরে বোধন বললো, আর কখনোই আমি জেদ করবো না রে।
------------- 
 




Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.