সুব্রত সুন্দর জানার গল্প- নদীর বুকে এক রাত্রি
নদীর বুকে এক রাত্রি
সুব্রত সুন্দর জানা
২০০০ সালের আদমসুমারী চলছে। কর্মসুত্রে জি-প্লটের পরিদর্শক আমি। আমার অধঃস্তন যাঁরা গনক আছেন তাঁদের কাজের তদারকির জন্য একদিন আগে জি-প্লটে এসেছি। পরের দিন এলেন অমার উর্দ্ধতন দুই অফিসার। সকল গনকদের নিয়ে দীর্ঘ সময় চলল অলোচনা সভা। তারপর সবাই মিলে একসঙ্গে ফিরছি। আমাদের নিদিষ্ট নৌকা ঘাটেই বাঁধা ছিল।
সীতারামপুর ঘাট থেকে নৌকা ছাড়তে সন্ধ্যে হয়ে গেল। উদ্যেশ্য রামগঙ্গা বিডিও অফিসে পৌঁছানো। নৌকাতে আমরা সাকুল্যে পাঁচজন। আমরা তিন সরকারী কর্মচারী, নৌকার মাঝি এবং তার একজন সহযোগী। সময়টা ছিল মার্চ মাসের শেষ নাগাদ। হু হু করে বইছে দখিনা বাতাস। নদীতে তখন ভাটার টান থাকায় ঢেউও উঠেছে ফুলে। তাই পাড় ঘেঁসেই আমাদের নৌকা এগিয়ে চলেছে রামগঙ্গার দিকে।
নৌকার মাঝি এবং তার সহযোগী মিলে নৌকা চালানোয় ব্যস্ত। রামগঙ্গা পৌঁছাতে দু'ঘণ্টার ওপর সময় লাগবে। আমরা তিনজন কেবিনের মধ্যে সেরে নিচ্ছি কিছু অফিসিয়াল আলোচনা। মিনিট পঁয়তাল্লিশ চলার পর একটি অস্বাভাবিক শব্দ করে নৌকাটির ইঞ্জিন থেমে গেল। আমরা ব্যাপারটায় গুরুত্ব না দিয়ে নিজেদের অলোচনা চালিয়ে যেতে লাগলাম। নৌকার চালকেরা বার দুই ইঞ্জিনটি চালানোর চেষ্টা করলো কিন্তু ইঞ্জিন আর চললো না। কিছু পরে মাঝি এসে আমাদের কাছে বললো- স্যার, কি করে যাবেন? ইঞ্জিনে যা গণ্ডোগোল দেখা গেছে তা কাল সকালের আগে ঠিক করা যাবে না। আমরা তো অকাশ থেকে পড়লাম। আমরা কি করবো ভেবে পেলাম না। তখনতো আর এখনকার মতো মোবাইল ফোনের বাহুল্য ছিল না, তাই অফিসে একটা খবর দিতে চাইলেও তার কোনো উপায় নেই। মাঝির কাছে জানতে চাইলাম অন্য উপায় কিছু আছে কিনা। মাঝি বললো- আমরা লোকালয় থেকে অনেক দুরে চলে এসেছি। এই অন্ধকারে আশেপাশে কোনো নৌকাও চোখে পড়ছে না। তাই আজ রাতটা এই নৌকার মধ্যেই কাটানো ছাড়া আর কোন উপায় নাই। নৌকার মধ্যে চাল ডাল সব আছে ভাতে-ভাত হয়ে যাবে। কেবিনে বিছানাপত্র সব আছে অসুবিধা হবে না। অগত্যা তাই মেনে নিতে হলো।
আমাদের আলোচনার প্রসঙ্গ পাল্টে গেল। নৌকার সহযোগী ছেলেটি নৌকার পেছন দিকে স্টোভ জ্বেলে নিয়ে বসে গেল রান্না করতে। মাঝি আমাদরে সঙ্গে বসে শোনাতে লাগলো তার বিভিন্ন বাস্তব অভিজ্ঞতার কথা। নদীর বুকে কত সমস্যা হতে পারে, মাঝে মাঝে কত বিপদের সম্মুখীন হতে হয়- এই সব। মাঝি বাঘ-কুমীর, ঝড় তুফানের কাহিনী শেষ করে শুরু করলো জলদস্যুদের কাহিনী। যে সব গল্প দিনের বেলায় ঘরের মধ্যে বসে শুনলে কিছুই মনে হত না, তবে এই রাতের অন্ধকারে একটি ছোটো নৌকাতে করে নদীর বুকে ভাসতে ভাসতে আমাদের গা ছম ছম করতে লাগলো। একদিকে শ্বাপদ ভরা গভীর অরণ্য আর একদিকে ঝোপ জঙ্গলে ভরা বিস্তির্ণ নদীর চর, তারপর অন্তত দু-ক্রোশ ফাঁকা মাঠ পেরিয়ে তবে লোকালয়। এখানে যদি বাঘে হানা দেয় কিংবা জলদস্যুরা আক্রমন করে, যদি সবাইকে কেটে নদীর জলে ভাসিয়ে দেয়, তাহলে কেউ টেরও পাবে না।
আমাদের কেবিনের মধ্যে একটি হ্যারিকেন টিম টিম করে জ্বলছিল। জানালা দিয়ে হঠাৎ একটা তীব্র আলো এলো আর তার সঙ্গে কড় কড় করে শব্দ, বুঝলাম বিদ্যুৎ চমকালো। সেই সঙ্গে উঠল ঝড়, কাল বৈশাখীর আগাম বার্তা। নদীর ঠেউ যেন মুহুর্তের মধ্যে দ্বিগুন হয়ে গেল। আমাদের নৌকা পাড় থেকে কিছুটা দূরে বাঁধা ছিল। কারন অজানা জায়গায় পাড়ে ঠেকিয়ে রাখলে তার থেকেও নানা ধরনের বিপদের সম্ভবনা থাকে। নৌকাটি প্রচণ্ড দুলছে দেখে মাঝি এবং তার সহযোগী ছুটে বাইরে বেরিয়ে গেল। নোঙর, কাছি সব ঠিকঠাক আছে কিনা দেখে আবার ভেতরে প্রবেশ করলো। আমরা সবাই চুপচাপ, কারো মুখে কোন কথা নাই। শুধু চোখাচোখি হলে ঠোটের কোনে একটা শুষ্ক হাসির রেখা ফুটে ওঠে।
কিছু সময় পরে নৌকার দুলুনিটা একটু কমে গেল। সেই সঙ্গে কমে গেল ঝড়ের শব্দও আর সঙ্গে সঙ্গে শুরু হল প্রবল বৃষ্টি। বেশ কিছুক্ষণ বৃষ্টি হওয়ার পর বৃষ্টিও থেমে গলে। পরিবেশটা আবার ধীরে ধীরে আগের অবস্থায় ফিরে এলো। আমরা তখন আবার আগের মত নিজেদের মধ্যে কথা শুরু করলাম। ইতিমধ্যে জানা গেল রান্না হয়ে গেছে। আমরা আর রাত না করে খেয়ে দেয়ে শুয়ে পড়ালাম।
নৌকার কেবিনের মধ্যে পেছন দিকে আছে ইঞ্জিন। তার সামনের দুই দিকে দুটি করে মোট চারটি খাটে মাঝি আর আমরা তিনজন শুয়েছি। ইঞ্জিনের পেছনের দিকে একটি চওড়া খাটে সহযোগী ছেলেটি শুয়েছে। কিছু সময়ের মধ্যেই দু-একজনের নাসিকা গর্জনের সাড়া পেলাম। আমি চোখ বন্ধ করে শুয়ে থাকলেও আমার ঘুম আসছিল না। মনে হচ্ছিল বাড়ির কথা, আত্মীয়-স্বজনদের কথা। আর উদ্বিগ্ন চিত্তে ভাবছিলাম কখন ভোর হয়।
মনে যতই চিন্তা থাক না কেন, সারাদিনের পরিশ্রান্ত শরীর কখন যে নিদ্রাচ্ছন্ন হয়ে গিয়েছিল বুঝতে পারিনি। মাঝরাতে হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেল। তখন চারিদিক নিস্তব্ধ। বাতাস একেবারেই শান্ত, থেমে গেছে ঢেউয়ের গর্জনও। নৌকাটা বিলম্বিত লয়ে দুলছে। সেই সঙ্গে ঘটর… ঘটর… করে একটানা শব্দ হচ্ছে। আমি চুপচাপ শুয়ে থেকে বোঝার চেষ্টা করলাম শব্দটা কোন দিক থেকে আসছে। কিন্তু কিছুই বুঝতে পারলাম না। আমার মনে একটা সন্দেহ দানা বাঁধলো। নৌকাটা কাছি ছিঁড়ে অন্য কোথাও চলে অসেনি তো! কিংবা নৌকা অন্য কিছুর সঙ্গে ধাক্কা খাচ্ছে না তো! তাহলে তো নোকার তলা ফেঁসে যেতে পারে। কথাটা মনে হতেই আমি বিছানা থেকে উঠে পড়লাম এবং মাঝির কাছে গিয়ে তাকে চুপি চুপি ডাকলাম।
আমার এক ডাকেই মাঝি উঠে পড়ল। বুঝলাম নৌকাতে এরা ঘুমিয়ে থাকলেও যথেষ্ট সজাগ থাকে। আমার সন্দেহের কথা মাঝিকে বললাম। আমার কথা শুনেই সঙ্গে সঙ্গে মাঝি তার তিন সেলের টর্চটা হাতে নিয়ে এগিয়ে গেল কেবিনের দরজার দিকে। আমিও আমার ছোটো টর্চটা নিয়ে তাকে অনুসরণ করলাম। মাঝি দরজাটা একটুখানি খুলে তার মাথাটা বের করে টর্চের আলোয় চারিদিক ভালো করে দেখে নিল। তারপর দরজা খুলে ধীরে ধীরে বাইরে বেরলো। তার পেছন পেছন আমিও এসে দুজনে নৌকার ডেকের ওপর দাঁড়ালাম।
আমাদের নৌকা যেখানে বাঁধা ছিল সেখানেই আছে। মাঝি কেবিনের ছাদের ওপর দিয়ে নৌকার পেছনের দিকে চলে গেল। সন্ধ্যের সময় যে অন্ধকার দেখেছিলাম এখন আর তা নাই। পুবের জঙ্গলের ফাঁক দিয়ে তখন উঁকি মারছিল চাঁদ। আবছা হলেও অনেক দূর পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে। নদী একাবারেই শান্ত। জোয়ারের ছলাৎ ছলাৎ শব্দ আর মৃদু মন্দ বাতাস মোহময় করে তুলেছে পরিবেশটাকে। ডেকের ওপর দাঁড়িয়ে আমি মুগ্ধ দৃষ্টিতে দেখতে লাগলাম চারিদিক। মাঝি এসে বললো 'ঘটর ঘটর' শব্দটা নৌকার হাল থেকেই আসছে। স্রোতের টানে হালটা নড়ছে আর তাতেই এই শব্দ। চারিদিক নিস্তব্ধ থাকায় এই শব্দই এত জোর মনে হচ্ছে।
সব ঠিক ঠাক আছে দেখে আমরা নিশ্চিন্ত মনে ভেতরে যাওয়ার জন্য উদ্যত হলাম, এমন সময় একটা হিস্ হিস্ শব্দ আমাদের কানে এলো। আমরা থমকে দাঁড়িয়ে পড়লাম। কান খাড়া করে বোঝার চেষ্টা করলাম শব্দটা কোন দিক থেকে আসছে। কয়েক মুহুর্ত পরে শব্দটা আবার পাওয়া গেল বেশ জোরে। এবার হিস্ হিস্ শব্দের সঙ্গে আরো একটা গর্জনের শব্দ পাওয়া গেল। শব্দটা আসছে পাড়ের দিক থেকে। মাঝি শব্দ লখ্য করে টর্চ ফেলল। নদীর চরের দুই দিকে ঝোপ। তার মাঝখানে যে ফাঁকা চত্তরটা আছে সেখানে দুই জোড়া চোখ জ্বল জ্বল করছে। টর্চের আলোয় দূর থেকে ভালো করে বোঝা যাচ্ছে না। কোন জন্তু- জানোয়ার হবে। মাঝি নৌকার পেছনে নদীর মাঝের দিকে যে নোঙ্গরটা দেওয়া ছিল তার কাছিটা ঢিলে দিয়ে দিল। তারপর পাড়ের দিকের কাছিটা টেনে টেনে নৌকাকে পাড়ে ঠেকিয়ে একটা ছোট লগিবাঁশ হাতে নিয়ে এক লাফে চরে নেমে পড়ল। মনে মনে ভয় পেলেও মাঝি যাচ্ছে দেখে তার পেছন পেছন আমিও নেমে পড়লাম।
চরে কাদা থাকলেও লোনা মাটি আর লোনা ঘাসে ঢাকা থাকায় পায়ে বিশেষ কাদা লাগছে না। আমরা অতি সন্তর্পনে পা টিপে টিপে এগোতে লাগলাম। জন্তুগুলোর কাছাকাছি আসতেই আমরা চমকে উঠলাম। যা দেখলাম তাতে প্রথমে তো বুঝেই উঠতে পারছিলাম না কী দেখছি। ভালো করে দেখার পর বুঝলাম একটি মস্ত বড় কেউটে সাপ আর একটি বিশালাকার পেঁচার লড়াই বেঁধেছে। বিষধর সাপ সাধারণত রাতে বেরোয়। আবার তাদেরকে ধরে খায় পেঁচার মতো নিশাচর প্রাণীরা। ঝোপের মধ্য থেকে এই মস্ত কেউটে সাপটি সম্ভবত বেরিয়ে ছিল আহারের সন্ধানে। আর তখনই এইমস্ত পেঁচার নজরে পড়ে। পেঁচাটি সম্ভবত এতবড় সাপটিকে আয়ত্বে আনতে পারেনি। সাপটি পেঁচার একটি ডানার ভেতর দিয়ে এমন পেঁচিয়ে গেছে যে পেঁচা আর তা ছাড়াতে পারছে না। একটু ওড়ার চেষ্টা করে আবার ঝুপ করে পড়ে যায়। সে এক রোমহর্ষক দৃশ্য। আমি একটু তফাতে একটি পরিস্কার জায়গা দেখে দাঁড়িয়ে দেখতে লাগলাম, মাঝি লগি বাঁশ দিয়ে খোঁচাখুঁচি শুরু করেছে। মাঝি যখন বাঁশটা দিয়ে সাপটাকে খোঁচা মারে সাপটা তখন ফোঁস করে তেড়ে এসে বাঁসের ডোগায় ছোবল মারতে চায়। সেই সময় পেঁচাটা মস্ত গর্জন করে সাপের মাথায় ঠোক্কর মারে। সাপটা আবার পেঁচাকে জড়িয়ে ধরে। দু'জনেই তখন প্রচণ্ড আক্রোশে ফুঁসছে। এই ভয়ংকর সুন্দর দৃশ্য দেখতে দেখতে বার বার শিউরে উঠতে লাগলাম। ফুরফুরে দখিনা বাতাস, তাতেও আমি ঘেমে যাচ্ছি। আর আশ্চর্য হয়ে যাচ্ছি মাঝির সাহস দেখে।
বেশ কিছুসময় চেষ্টা করার পর সাপটা যখন পেঁচাটাকে প্রায় ছেড়ে দিয়েছে তখন সাপটা হঠাৎ করে পেঁচাটাকে ছেড়ে দিয়েই খুব দ্রুত গতিতে ছুটে এলো মাঝির দিকে। মাঝি এক লাফে দশ-পা পিছিয়ে গিয়ে কাদার মধ্যে পড়ে যাই যাই করেও কোন রকমে টাল সামলালো। আর সেই একই গতিতে সাপটা গিয়ে ঢুকলো পাশের ঝোপে। আমার তো ভয়ে হাত-পা হিম হয়ে আসছিল। ভাবলাম এক্ষুণি একটা বড় দুর্ঘটনা হত। পেঁচাটা তখনো বসে আছে। সম্ভবত পেঁচাটা একটু কাহিল হয়ে পড়েছে। মাঝি পাশের চৌকা থেকে আঁচলা করে জল নিয়ে এসে পেঁচাটার ওপর ছড়িয়ে দিল। অমনি পেঁচাটা মাথা ছাঁকিয়ে পালক টালক ঝেড়ে নিয়ে উড়ে গিয়ে বসল পাশের বাবলা গাছের মাথায়।
আমরা স্বস্থির নিশ্বাস ফেলে নৌকায় এসে উঠলাম। পা ধুতে ধুতে মাঝিকে বললাম তোমার কিন্তু এতটা ঝুঁকি নেওয়া উচিত হয়নি। মাঝি বলল- কি করবো বাবু, একজন মা লক্ষ্মীর বাহন আর একজন মা মনসার বাহন। দু'জনে আপসে লড়াই করছে। আমরা দেখতে দেখতে চলে আসবো? তাদের ছাড়িয়ে দেব না। এই যুক্তির পরে আমার আর বলার কিছু থাকলো না। আমরা যখন ভেতরে এসে শুয়ে পড়লাম তখন রাত আর বেশি বাকি নাই। অন্যদের নাসিকা তখনো গর্জন করে চলেছে। শুয়ে থাকতে থাকতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি বুঝতে পারিনি।
মাঝির ডাকে যখন ঘুম ভাঙলো তখন বেলা অনেক হয়ে গেছে। অন্যান্যরা আগে উঠে নিত্য কাজ সেরে নিয়েছে। আমি তড়িঘড়ি হাতমুখ ধুয়ে নিলাম। গত রাতের দৃশ্যের সঙ্গে এখনকার দৃশ্যের কোন মিল নাই। এখন চারদিক পরিষ্কার। ছোটো বড় কত নৌকা নদীতে যাওয়া আসা করছে। আমরা একটি রামগঙ্গাগামী যাত্রীবাহী নৌকাকে ডেকে তাতে উঠে পড়লাম
আমরা যখন রামগঙ্গায় পৌঁছালাম তখন বিডিও সাহেব এবং অন্যান্য সহকর্মীরা জানতে চাইল গত রাতের কথা। আমার দুই উর্দ্ধতন অফিসার আগবাড়িয়ে সবার কাছে ফলাও করে বলতে লাগলো সমস্ত ঘটনা। কিন্তু যে দৃশ্য আমরা দেখেছি, যার সাক্ষী কেবল আমি আর সেই নৌকার মাঝি, সেটা কেউ জানলো না। সেটা থেকে গেল আমার মনের গোপনে।
----------------
সুব্রত সুন্দর জানা
গ্রাম ও পোঃ- গণেশনগর
থানা – কাকদ্বীপ
জেলা – দঃ ২৪পরগনা
পিন নং- ৭৪৩ ৩৫৭
ফোন নং- ৯১৪৩১ ৫৭৩৩৮