স্বভাব
দীপঙ্কর বেরা
বিকেলবেলা অফিস থেকে ফেরার পথে একেবারে ঘরের কাছে ভুলুকে কয়েকটা বিস্কুট খাইয়ে তবে ঘরে ঢুকি। বড় ভাল লাগে।
দু চার দিন পরে দেখি ভুলুর মত আরও দুটো এসে দাঁড়িয়ে থাকে। তাদেরও মাঝে মধ্যে ভুলুর ভাগের একটা দুটো করে দিই।
আরও কিছু দিন পরে দেখি আরো তিন চারটে। এভাবে পাঁচ সাতটাকে সেই বিস্কুট ভাগ করে দিই। বেশ ভালই লাগে। আহারে খেতে পায় কি পায় না। যেটুকু পারি তাই খাওয়াই।
একদিন আমাকে দেখতে পেয়ে ভুলু দৌড়ে এল। সাথে আরও সেই পাঁচ সাতটা আমাকে ঘিরে ধরল। সেদিন আমার ব্যাগে একটাও বিস্কুট নেই। ভুলুকে আমি নাই নাই বলে আপ্রাণ বোঝানোর চেষ্টা করছি। ভুলু তাও চুপচাপ ছিল। শুনছে।
কিন্তু তার পাশে একটা বেশ তাগড়াই তার পাশের জনের দিকে তাকিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ল - তোরা সব এতগুলো আসার জন্য আমাদের একটাও দিচ্ছে না।
যাকে বলছে সেও কম যায় না - তুই চলে যা না তাহলে সংখ্যা কমে যাবে। আমি আমার ভাগ পাব।
তার পাশের জন আরও প্রবল বেগে ঝাঁপিয়ে পড়ল - এভাবে আমরাই তো পর পর বাড়ছি। কিন্তু খাবার তো একই। আমাদেরই ভাবার সময় এসে গেছে। তাই এক টুকরোর জন্য নিজেদের মধ্যে কামড়াকামড়ির সময় এসে গেছে।
অন্যজন তাই একরকম প্রস্তুত হয়েই ছিল - চল। তাই করি।
তারপর তাদের মধ্যে আঁচড়াআচড়ি কামড়াকামড়ি খুনোখুনি চেল্লামেল্লি দেখে ভয় পেয়ে আমি এক দৌড়ে ফ্ল্যাটের গেটে ঢুকে পড়লাম।
মুখ বাড়িয়ে দেখলাম, কুকুরগুলোও তাহলে আস্তে আস্তে মানুষের স্বভাব পেয়ে যাচ্ছে।
-----------