বিজ্ঞপ্তি
লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫
নভেম্বর ২১, ২০২৪
আজ এক বিশেষ দিন। কারন কালো প্যাটনামঞ্চে দাঁড়িয়ে কাকেদের দলপতি কিছু বক্তব্য রাখবেন। আর তাকে ঘিরে সভা হবে । প্রচুর কাকেরা আসবে সভায় যোগ দিতে। সময় মতন সভা শুরু হতে ধীরে ধীরে কাকেদের ভিড় বাড়তে থাকল।দলপতির নিচের পোস্টের কিছু সরদার কাক ভিড় সামলাতে ব্যাস্ত হয়ে পরল।
অনেক কা কা আ আ গা গা ডাকের ধ্বনি এর মধ্যে দলপতি শুরু করলেন বক্তব্য । "বন্ধুগন আজ আমরা এক বিশেষ কারনে এখানে সংগঠিত হয়েছি। আমাদের প্রতি অত্যাচার অনাচার এর বিষয় কথা বলব। শুরুতেই যেটা মাথায় আসে সেটা আজ না সেই প্রাচীন কাল থেকে হয়ে আসা অনাচার যা আমাদের প্রতি হয়ে চলেছে এখনও। সেটা হল আমাদের নাম। কাক! আহা কি সুন্দর। অকালকুষ্মান্ডের দল, একটু ভেবে চিন্তে নাম রাখতে পারেনি। কাক। কা কা করে ডাকি বলে কাক? কই কু কু করে ডাকে তাঁর তো দিব্বি কোকিল নাম রেখেছ হে! আমাদের বেলা কি হল? খুঁজে দেখাও এমন আরেক জন্তু বা পাখি যাদের ডাক কে ভিত্তি করে নাম রাখা? হ্যা হাম্বা ম্যাও এসব আছে কিন্তু তাদের এগুল শিশুদের জন্য নাম , ওদের আলাদা ভাল নাম আছে। আর আমরা! বন্ধুগন কাক? ছিঃ ছিঃ কাক! একটু খেটে নাম রাখতে পারেনি " সকল কাক নিজেদের মুখ চাওয়াচাওই করল আর তারশ্বরে কা কা করে চিৎকার করে সম্মতি জানাল। দলপতি বলা চালিয়ে গেলেন। "আর সেই সেদিন আমি গিয়ে ময়ূর দেখে এলাম। হ্যা মানছি দেখতে সুন্দর কিন্তু গলা খুললে! ও বাবা গো কি কর্কশ! তার নাম নাকি ময়ূর! আবার তিনি জাতীয় পাখি বলে ব্যাটার কি আলাদাই দাম্ভ " বাকি কেউই সেরকম ময়ূর দেখেনি কিন্তু দলপতির কথায় হ্যা মিলিয়ে আবার সম্মতি জানালো কা কা গা গা ঘা ঘা আ আ । "আচ্ছা এতেই উত্তেজিত হয়ে পরছ! এবার আসি আরেক অনাচারের কথায়। এই মন্তব্য তো শুনেই থাকবে তোমরা! এমা কাগে হেগেছে! এ বাবা মাথায় কাকের গু। হ্যা মানছি মাঝে মাঝে আমরা পায়খানা করে থাকি , কিন্তু একি! সব সময় আমাদের নাম নেওয়া কেন! শালিক চড়াই বিশেষ করে ওই বিটকেল পায়রা আর ঘুঘু ! ওদের আবার লোকে পোষে! হেগে চারিদিক ছিটিয়ে রাখবে কিন্তু নাম আমাদের। কাকের গু! বাহ হে বাহ। তোমাদের এসব বিষয় কি বলার আছে! " , এই বলে দলপতি অন্যদের বক্তব্য জানতে চাইলেন । আবার সেই কা কা ডাকের কোলাহল। কিন্তু তার মাঝে একজন কাক বলে উঠল , " আজ্ঞে সেলাম। বলছি সব খারাপ দিক কেন দেখছেন! বইয়ে তো আমাদের ঝাড়ুদার পাখি ও বলা হয়! কত কাজের আমরা! আমাদের নাম করে কত প্রকল্প তৈরি হয়েছে দেশে , স্বচ্ছ ভারত অভিযান নির্মল বাংলা প্রকল্প কত কি! তার ওপর একটা রাজনৈতিক দল গঠন হল আম আদমি পার্টি । কত ভালো কাজ হল...." "তুমি একটা গন্ডমূর্খ! ঝাড়ুদার হচ্ছ। কোথায় দেখছো আজকাল ঝাড়ুদেওয়ার কিছু চোখে পরে তোমার?তুমি আর কি জানবে আগে প্রতি গলি সব রাস্তায় একটু যেতেই বড় বড় ময়লাখানা থাকত। তাতে কত মুখরোচক খাবার থাকত। সেসব দিন আর নেই। সেদিন এর ছোকরা তুমি আর কি জানবে। কত গাছ ছিল কেটে ফেলা হয়েছে। একটু জিরবার জন্য ছাদে এন্টেনা থাকত। বসে দোল খেতাম । সেসব ও নেই! আর এখন তো শুনছি রাস্তায় তার ও খুলে মাটির তলায় করে দেবে বলেছে! তখন কোথায় বসবে?" সব কাক অবাক । এক সরদার কাক জিজ্ঞাসা করল,কিন্তু এই অনাচার থেকে নিষ্কৃতি পাওয়ার উপায়?" দলপতি গলা উঠিয়ে আবার বললেন , " ভয়! শক্ত হও। ভয় দেখাও। আমাদের জ্যারতত দাদা দাঁড়কাক কে দেখেই শেখ না! ওকে কি কেউ এরকম অবহেলা করে! পারবে না । কারন ভয় আছে! সেরকম ই করো। কেউ এবার তাড়াতে এলে কটমট করে তাকাবে তার দিকে। ঠিক বুঝে যাবে ভয় কাকে বলে। আমরা এই অনাচার মানছি না মানব না । লড়াই করে বিচার চাই। মানব না আর মানব না।" সমস্ত জমায়েত হওয়া কাক সুর মেলাল "মানছি না মানব না!......." এমন সময় একটা ঢিল এসে দলপতির কানের পাশ দিয়ে চলে গেল। "ওরে বাবাগো !" বলে উড়ে গেলন উনি। সাথে সাথে আরো কিছু ঢিল পরতে চারিদিকে বিশৃঙ্খলা বেড়ে উঠল। পালাও পালাও। একজন যুবক কাক না উড়ে নিজের যায়গা তে বসে রইল। সে তার সরদার কে বলল, "দলপতি কি বলল একটু আগে! ভয় আমি পাবো না" "ওরে মূর্খ প্রাণে বাঁচলে তারপর ভয় পাবে কি পাবেনা। ওড়" , বলে এক ধাক্কায় তাকে হাওয়ায় উড়িয়ে তার সরদার নিজেও উড়ে সেখান থেকে পালিয়ে
গেল।--------------------
ছবি ঋণ- ইন্টারনেট
নাম - সংবরণ ব্যানার্জীঠিকানা - পি-১০০, লক্ষ্মী নারায়ণ রোড, দম দম ক্যান্টনমেন্ট, কলকাতা-৭০০০৬৫ফোন - ৮১০৬৯৪৩৫০৯