অণুগল্প ।। দীপ্তেন্দু বিকাশ ষন্নিগ্রহী
কুয়াশা
দীপ্তেন্দু বিকাশ ষন্নিগ্রহী
ঘন কুয়াশার মধ্যে একটা অস্পষ্ট আলোর রেখা। এই হাড়কাঁপানো ঠাণ্ডার মধ্যে দূর থেকেই আলোর উত্তাপ পেল রঘু। আলোর রেখাটা ধীরে ধীরে কাছে এগিয়ে আসছে। নিশ্চিন্তে মরবে তারও উপায় নেই!এবারেও মরা হলোনা!কিন্তু আজকে শালা মরবই বলে পন করে মাঝরাতেই বেরিয়েছিল একটা শক্তপোক্ত দড়ি নিয়ে। টর্চ হাতে লোকটাকে দেখে দড়িটা হাত থেকে ফেলে দিল।
লোকটা তার মুখের উপর টর্চের আলো ফেলে জিজ্ঞেস করল,- রঘু যে! এত রাতে এখানে কি করছু?
নিধু খুড়া। রাতেভিতে ডাকাবুকো নিধু খুড়ার মাঠ আসা অভ্যাস।
-পুকুর আগলাতে আসেছি খুড়া।
- আমাকে ছেলামানুষ পাইছু রঘু! মরতে বেরাইছু! নিধু খুড়ার গলার স্বর ভারি।
ধরাপড়ে যাওয়াই মিনমিন করে বলে,- জীবনটা তিতা হয়ে গেছে খুড়া।তুমি ত সবই জানো। তোমার বৌমা-
-- থাম! রঘুর কথা শেষ করতে না দিয়ে নিধু খুড়া বললেন,-তোর বউয়েই তোর কাছে সব! বুড়া মা বাপ দুটা কেউ লয়? উয়াদের জন্য তোকে বাঁচতে হবেক! আমি থাইকতে এত বড় অধম্ম হইতে দিব নাই!
রঘু চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইল।
-- চ ঘর চ। বলে নিধু খুড়া হাঁটতে লাগলেন। রঘু মন্ত্রমুগ্ধের মত পিছু নিল। গ্রামের মুখে এসে নিধু খুড়া দাঁড়ালেন। রঘুর হাত টা খপ করে ধরে বললেন, -আমার মত ভুল তুই করবিনাই বল! কথা দে?
বুকটা ছ্যাঁত করে উঠলো রঘুর।নিধু খুড়ার হাতটা কি ঠাণ্ডা! তখনেই টর্চটা নিভে গেল। নিধু খুড়ার কোন অস্তিত্ব আর টের পেলনা।
নিধু খুড়া যে তিনবছর আগে সুইসাইড করেছিলেন কথাটা সে ভুলেগেল কি করে! ঘন কুয়াশায় ডুবে যেতে থাকলো রঘু।
সামনের জমাট কুয়াশা বলে উঠলো, -আমার মত এই ভুল তুই করিসনে রঘু!
:::::::::::::::::::::::::::::::::
Diptendu Bikash Sannigrahi
Haritakibagan
P.o-Kenduadihi
Dist-Bankura
722102
M-9732072788