ছোটগল্প - ৩৩ নম্বর মক্কেল।। শংকর লাল সরকার
৩৩ নম্বর মক্কেল
শংকর লাল সরকার
রঞ্জনবাবুর কাজটার ধরন জানতে হলে নতুন এই রোগটার সম্পর্কে একটু জানতে হবে। রঞ্জনবাবু স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত কেউ নন। কিন্তু তবুও তিনি কাজটা যথেষ্ট দক্ষতার সঙ্গে করে চলেছেন। এরজন্য কিছুটা দায়ী ভাইরাসের অদ্ভুত চরিত্র আর বাকিটা ২০৪০ সালের সমাজব্যবস্থা। হার্পস ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছেন মূলত যুবক যুবতীরা। পঁচিশ থেকে পঁয়তাল্লিশ বছরের মানুষ। তারমধ্যে মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশী ত্রিশ থেকে চল্লিশ বছর বয়সী মানুষদের। আরও আশ্চর্য মোটামুটি স্বচ্ছল নারী পুরুষ, যারা কখনও দৈহিক পরিশ্রমে অভ্যস্ত নন, সোজা কথায় যারা হোয়াইট কলার জব করেন, তারাই সবচেয়ে বেশী সংক্রামিত হন। মহামারিতে মৃতদের পঁচানব্বই শতাংশই এই ধরণের মানুষ। ভাইরাসের এই অদ্ভুত আচরনের কারণ বিজ্ঞানীরা এখনও বুঝে উঠতে পারেননি। তবে বিজ্ঞানের সেসব বিষয়ে রঞ্জনবাবুর বিশেষ আগ্রহ নেই।
রঞ্জনবাবু এর আগে বত্রিশ জন মৃত্যু পথযাত্রী যুবককে সঙ্গ দিয়েছেন। কিন্তু কোন মহিলা মক্কেল এই প্রথম। হ্যাঁ মক্কেল! ওদের মক্কেল বলতেই উনি পছন্দ করেন। সংক্রামিত হবার পর যদি উপসর্গ প্রকাশ পায় তাহলে মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করা ছাড়া আক্রান্তের আর কিছু করার নেই। কোন স্বাস্থ্যপরিসেবাই তাকে সুস্থ করতে পারবে না। অন্তঃত এখনও পর্যন্ত চিকিৎসাবিজ্ঞান নিতান্তই অসহায়। কেবলমাত্র কয়েকটা পেনকিলার রোগীকে দেওয়া হয় যাতে কোন রকম যন্ত্রণার বোধ তার না থাকে। ব্যাপক সংখ্যায় মানুষ আক্রান্ত হবার ফলে হাসপাতাল গুলিতে সবসময় রোগীর ভিড় উপছে পড়ছে। সর্বত্রই একটা ঠাই নাই, ঠাই নাই রব। আর তাছাড়া হাসপাতালে ভর্তি হয়েই বা কিহবে? সেই তো কয়েক ঘন্টার মধ্যে মারা যেতেই হবে। তাই স্বচ্ছল মানুষদের অনেকেই পছন্দ করছেন কোন ভালো হোটেলে জীবনের শেষ দিনটা কাটাতে। কর্মসূত্রে বেশির ভাগ মানুষই আজকাল বাড়ি থেকে বহুদূরে থাকতে বাধ্য হন। করোনা মহামারির সময়ে পরিযায়ী শ্রমিকেরা প্রশাসনকে নাজেহাল করে দিয়েছিল। হার্পস ভাইরাসে সংক্রামিত হলে ঘরে ফেরবার কিন্তু কোন সুযোগ নেই। আজকাল নিউক্লিয়ার ফ্যামিলির স্বামী স্ত্রীও অনেকক্ষেত্রে পরস্পরের থেকে হাজার কিলোমিটার ব্যবধানে দুটি ভিন্ন শহরে কর্মরত। দীর্ঘ পথ পার হয়ে প্রিয়জন তাই আক্রান্ত মানুষটির কাছে আসতেই পারছেন না। এক, বড়ো জোর দুদিনের মধ্যে যে মানুষটা নিশ্চিতভাবে না ফেরার দেশে চলে যাবে তার জন্য বিষন্ন হলেও প্রচুর বাড়তি অর্থ আর সময় ব্যয় করতে সকলেরই অনীহা। একাকী, মানুষের সঙ্গবিবর্জিত হয়ে দুঃসহ মানসিক কষ্ট সহ্য করতে করতে মুত্যুর কোলে ঢলে পড়ার চাইতে তাই অনেকেই পছন্দ করছেন কোন ভাড়াটে লোকের সঙ্গ। অর্থের বিনিময়ে তারা মৃত্যু পথযাত্রীকে সঙ্গ দেন। চোখের সামনে একজন মানুষকে মরতে দেখা যথেষ্ট মানসিক চাপের সন্দেহ নেই। কিন্তু পারিশ্রমিকটার কথা ভাবলেই মন ভালো হয়ে যায়। আর কাজটা মাত্র আট দশ ঘন্টার।
কিছু হোটেল হার্পস ভাইরাসে সংক্রামিত রোগীদের নিয়মিত ঘর ভাড়া দিতে শুরু করেছে। এক অথবা দুদিনের প্যাকেজ হলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দশবারো ঘন্টার ভিতরেই সব শেষ। রক্তপরীক্ষার রিপোর্টসহ হোটেলে নির্দিষ্ট রেটে টাকা জমা দিলে রোগীর আর কোন চিন্তা নেই। একেবার নিশ্চিন্তে মৃত্যুকে বরন করে নেওয়া। পুলিশ প্রশাসনে নাম নথিভুক্তি থেকে শুরু করে সরকারী স্বাস্থ্য পরিসেবার সঙ্গে যুক্ত ডাক্তারের রোগীকে পেনকিলার ঔষধ দেওয়া, মৃত্যুকালীন সাহচর্য সঙ্গীর পারিশ্রমিক এবং সৎকারের সমস্ত খরচ প্যাকেজের অন্তর্ভুক্ত। নর্মাল, ডিলাক্স, সুপার ডিলাক্স তিন রকমের প্যাকেজ। যার যে রকম সামর্থ্য।
মেহগিনি কাঠের সদৃশ্য পালিশ করা হোটেলের ঘরের দরজার গায়ে সাঁটানো কাগজে লেখা কৌশানী দাসগুপ্ত, বয়স বত্রিশ। নামটা একবার আওড়ে নিলেন রঞ্জনবাবু। দরজা ঠেলে হোটেলের ঘরে ঢুকে দেখলেন ধবধবে সাদা বিছানায় হাল্কা গোলাপি রঙের পোশাক পরে কৌশানী শুয়ে রয়েছে। বুক পর্যন্ত ঢাকা হালকা সাদা চাদর। দরজাটা আলতো করে ভেজিয়ে দিয়ে ধীর গতিতে বিছানার পাশটিতে পৌছালেন। মেয়েটি জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। মৃদু হেসে রঞ্জনবাবু বললেন আমি রঞ্জন, রঞ্জন সেন আপনাকে সঙ্গ দিতে এসেছি। কৌশানী তবুও একভাবে তাকিয়ে রইলেন। রঞ্জনবাবু যথাসম্ভব কোমল স্বরে বললেন প্যাকেজের মধ্যে আমার পারিশ্রমিকটাও ধরা আছে। তবুও যদি আমাকে আপনার পছন্দ না হয় তবে নিঃর্দ্বিধায় বলতে পারেন। একই কথা উনি এর আগে বত্রিশজনকে বলেছেন। প্রত্যুত্তরে কৌশানী নীরবে ম্লান হাসল।
একটা চেয়ার টেনে নিয়ে বিছানার পাশে বসলেন। আগের অভিজ্ঞতায় দেখেছেন বেশিরভাগ মানুষই এই সময়টা কান্নাকাটি করেন। সবাই এই সুন্দর পৃথিবীতে বাঁচতে চায়। নিজেদের আশা আকাঙ্খাগুলোকে অপূর্ণ রেখে চলে যেতে হলে দুঃখ হওয়া স্বাভাবিক। নিজেদের নিঃসঙ্গতা আর ভগবানের নিষ্ঠুরতার বিরুদ্ধে নিষ্ফল আক্রোশে অনেকে হাহাকার করেন। কেউ কেউ আবার নিজের আবেগকে বাইরে প্রকাশ হতে দেন না। আবার কেউ প্রিয়জনের প্রতি বিষোদ্গার করতে করতে শেষ নিশ্বাস ফেলেন। রঞ্জনবাবু বললেন আপনার আপনজন..? রুটিন আলাপচারিতা, একইভাবে কথাগুলো উনি আগের বত্রিশজনের প্রত্যেককে বলেছেন।
ওনাকে অবাক করে দিয়ে কোমল কিন্তু দৃঢ় স্বরে কৌশানী বলল নগরের জনারন্যে আমি একা। আমার প্রিয় কোন মানুষ জীবিত নেই। মরতে আমার খারাপ লাগছে না। সত্যি কথা বলতে কী ব্যাপারটাকে আমি বেশ উপভোগ করছি। হাসির ছলে কৌশানীর ফ্যাকাসে ঠোটের কোনদুটি অল্প কুচকে উঠেছিল। ফ্যাকাসে নিরক্ত মুখে সামান্য খুশিয়াল দেখা দিয়েই মিলিয়ে গিয়েছিল।
রঞ্জনবাবুর মতো পোড়খাওয়া লোকও উত্তরটা শুনে হতভম্ব হয়ে গিয়েছিলেন। ওনার হতচকিত ভাবটা দেখে মৃদু হেসে কৌশানী বলল, না না এতে কোন রহস্য নেই, পছন্দসই জীবনসঙ্গী জোটেনি তাই বাধ্য হয়ে। তা আপনার মতো সুন্দরী মেয়ের., কথা চালিয়ে যেতে চান রঞ্জনবাবু। কৌশানীর কণ্ঠার ঘনঘন উঠানামা দেখে বুঝেছিলেন সে আবেগের জোয়ারে ভেসে যাচ্ছে। স্বাভাবিক, আর মাত্র কয়েক ঘন্টা যার জীবনের আয়ু।
চাদরের নীচ দিয়ে চাবির গোছার মতো বেরিয়ে থাকা কৌশানীর বাম হাতটা ডানহাত বাড়িয়ে মুঠোয় ভরে নিলেন রঞ্জনবাবু। ওর নরম হাতটার উষ্ণতায় রঞ্জনবাবুর পঁয়ষট্টি বছরের পুরানো শরীরটা এক অদ্ভুত ভালো লাগার অনুভূতিতে ভরে গেল। রঞ্জনবাবু কৌশানীর বিছানার পাশে এসে দাড়িয়েছেন। ওনার নিজের কাছেই ব্যাপারটা অন্যরকম ঠেকে। এর আগের বত্রিশজনের বেলাতে তিনি ঠায় বিছানার পাশের চেয়ারটাতে বসেছিলেন। রোগীকে স্পর্শ করেননি।
কৌশানী ইশারায় ওনাকে বিছানার ধারে বসতে বলল। কৌশানীর মাথার ঢেউ খেলানো কালো চুল ঘরের উজ্জ্বল আলোর সঙ্গে মিশে গিয়ে বালিশের উপরে এক বিচিত্র নকশা এঁকেছে। কপালের হালকা ভেজা ভাব আলো পড়ে চিকচিক করছে। আজ রঞ্জনবাবুর কী হল? তিনি কী মানসিক ভাবে দুর্বল হয়ে পড়ছেন? কই আগের বত্রিশজনের বেলাতে তো এমন অবস্থা হয়নি! মনে মনে ভগবানকে দোষারোপ করেন তিনি। মাত্র বত্রিশ বছরে মেয়েটাকে পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে হচ্ছে, ভগবানের কী নিষ্ঠুর বিচার। জীবনের কিছুই তো ওর জানা বোঝা হল না। বিবেকের কথা মনে পড়ল রঞ্জনবাবুর। বেঁচে থাকলে এখন ওর বয়স হত পঁয়ত্রিশ। একটা দীর্ঘশ্বাস বুকটা খালি করে বেরিয়ে আসে।
কৌশানী অবাক চোখে রঞ্জনবাবুর দিকে তাকাল। বিড়বিড় করে বলল, মন খারাপ লাগছে? লজ্জায় পড়ে গেলেন উনি। মৃত্যুপথযাত্রীকে সঙ্গ দিতে এসে নিজের আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না।
কৌশানী বেশ কিছুক্ষণ স্থির দৃষ্টিতে রঞ্জনবাবুর মুখের দিকে তাকিয়ে রইল তারপর হঠাৎ বলল আপনি রিজেন্টস্টেটে থাকেন?
প্রশ্নটা শুনে রঞ্জনবাবু প্রথমটায় কেমন ঘাবড়ে গেলেন। সামলে নিয়ে কুণ্ঠিত স্বরে বললেন, না যাদবপুরে, তবে দশবারো বছর আগে ওখানে থাকতাম।
হঠাৎ পাশ ফিরে বালিসে মুখ গুজে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠল কৌশানী। আবেগে উত্তেজনায় ওর শরীরটা থরথর করে কাঁপছে। রঞ্জনবাবু কয়েকজন মক্কেলকে এইভাবে ভেঙে পড়তে দেখেছেন। নিশ্চিত মৃত্যুর মুখোমুখি হলে সমস্ত সত্ত্বা দুমড়ে মুচড়ে এরকম কান্না ঠিকরে আসা স্বাভাবিক। পিঠের উপর হাত রেখে কৌশানীকে শান্ত করার চেষ্টা করতে থাকেন। স্পর্শের নিবিড়তা মানুষকে যত কাছে টেনে আনতে পারে অন্য কোন ইন্দ্রিয় তা পারেনা। পিতৃত্বের আবেগে দুফোটা চোখের জল গাল বেয়ে গড়িয়ে পড়ে পেশাদার রঞ্জনবাবুর। নিজেকে সামলাতে চেষ্টা করেন। জীবনে এমন অনেক মুহুর্ত আসে যখন মানুষের কিছুই করার থাকে না। তখন অসহায় হয়ে বসতে হয় দর্শকাসনে আর সামনে যা করার তা করে যায় নিয়তি।
হঠাৎ কান্না থামিয়ে বালিসের থেকে মুখ ঘোরায় কৌশানী সোজাসুজি তাকায় রঞ্জনবাবুর চোখের দিকে। বিবেক আপনার ছেলে? এরকম আচমকা একটা প্রশ্নে উনি থতমত খেয়ে যান। কয়েক মুহুর্ত চুপ করে থাকেন তারপর নিজেকে গুছিয়ে নিয়ে ধীরে ধীরে বলেন হ্যা, বিবেক দশ বছর আগে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছে।
ওনাকে হকচকিয়ে দিয়ে কৌশানী বলল, বিবেক আত্মহত্যা করেছিল, আর সেই শোক সামলাতে না পেরে ওর মা ও..।
আমতা আমতা করে রঞ্জনবাবু বললেন, আপনি কিকরে জানলেন?
আমরা তখন রিজেন্টস্টেটের কোয়ার্টারে থাকতাম। বিবেকের ব্যাপারটা পাড়ার সকলেই জানত।
রঞ্জনবাবুর মনটা হাহাকার করে উঠে। বিছানায় মুখোমুখি বসে একজন পুত্র শোকে কাতর প্রৌঢ় আর মৃত্যুপথযাত্রী এক তরুনী। স্ত্রী পুত্র হারানোর ভয়ানক মানসিক যন্ত্রণায় ছটফট করা এক নিঃসঙ্গ পুরুষের মুখোমুখি বসে আসন্ন মৃত্যুর অমোঘ উপলব্ধি নিয়ে এক নারী।
কৌশানীর মুখের রেখাগুলি ভেঙে চুরে গিয়ে একরাশ অন্ধকার ঘনিয়ে এল। রঞ্জনবাবুর মুঠোর মধ্যে ওর হাতটা আবেগে থরথর করে কাঁপছে। ভেজা গলায় বিকৃত স্বরে সে বলল বিবেকের সঙ্গে আমার একটা সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। প্রথমদিকে আমার প্রশ্রয় ছিল কিন্তু একসময় বুঝতে পারি বিবেকের প্রতি ওটা ছিল আমার ক্রাশ, প্রকৃত ভালাবাসা নয়। কথাটা বিবেককে জানাতে ও একেবারে ভেঙে পড়েছিল। অবসাদে আচমকা আত্মহত্যা করে বসল। কথাটা কেউই জানে না, আপনাকে বলতে পেরে নিজেকে অনেক হাল্কা, ভারমুক্ত মনে হচ্ছে। সম্ভব হলে আমাকে ক্ষমা করবেন। এক মোলায়েম আলো ছড়িয়ে পড়ল মৃত্যুপথযাত্রী কৌশানীর সারা মুখে।
রাগ, দুঃখ, ঘেন্না, প্রতিশোধস্পৃহা সবকিছু মিলেমিশে একটা গভীর দীর্ঘশ্বাস রঞ্জনবাবুর বুকটা খালি করে বেরিয়ে এল। এক গভীর বিষন্নতাবোধ, অতলস্পর্শী অবসাদ ধীরে ধীরে গ্রাস করে নিচ্ছে রঞ্জনবাবুর সমস্ত সত্ত্বা।
বিছানায় মুখোমুখি দুজন অসমবয়সী নারী পুরুষের স্তব্ধ পাথুরে ভঙ্গী। দুজনের মাঝখানে নিস্তব্ধতার এক অলঙ্ঘ মোটা দেওয়াল। নীরবতার মধ্যে অনেক কথা পোরা থাকে। নির্লজ্জ উদাসনীতায় দেওয়াল ঘড়িটা টিকটিক শব্দ করে ঘরের নীরবতাকে ফালাফালা করে দিচ্ছে।
ঠিক পাঁচ ঘন্টা পর হোটেলের ঘর থেকে বেরিয়ে সিঁড়িতে পা দিলেন রঞ্জনবাবু। একবুক শূন্যতা নিয়ে সিঁড়ি ভেঙে ভেঙে নেমে এলেন নীচের চত্ত্বরে। এতক্ষণ একটা দীর্ঘশ্বাস চেপে ছিলেন। দীর্ঘশ্বাসটা বেরিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গেই মৃত্যুর জন্য ওত পেতে থাকা জীবানুরা যেন কোলাহল করে উঠল সারা শরীর জুড়ে। এইসব দুর্বল মুহুর্তগুলির জন্যই হার্পস ভাইরাস যেন অপেক্ষা করে থাকে। অচেনা একটা মেয়ের প্রতি একটা প্রতিশোধস্পৃহা বুকের মধ্যে আগলে এতকাল যক্ষের মতো একাকী বেঁচে ছিলেন। তেত্রিশ নম্বর মক্কেল মারা যাবার সঙ্গে সঙ্গে বেঁচে থাকবার সেই খড়কুটোটুকু হারিয়ে যেন অতলস্পর্শী এক অন্ধকার খাদে তলিয়ে যেতে থাকলেন।
শংকর লাল সরকার