Click the image to explore all Offers

ছোটগল্প ।। "ডুব-সাঁতার"।। মুক্তি দাশ



ডুব-সাঁতার

মুক্তি দাশ

 

অনেক সফল বাংলা প্রেমের গল্পের শুরুতে যেমন বহুবছর বাদে রাস্তা-ঘাটে কোথাও না কোথাও ফের প্রেমিক-প্রেমিকার দেখা হয়ে যায়, ঠিক তেমনি আজ তিয়াসার সাথে দেখা হয়ে গেল দীপনের। বহুবছর না, তিনবছর বাদে। তবে কথা হচ্ছে, তিয়াসা কি সত্যিই দীপনের প্রেমিকা ছিল কোনওকালে? এই প্রশ্নের উত্তর দীপন নিজেকে জিগেস করেও কোনোদিন পায়নি।

আপিসে যাবার জন্যে রোজকার মতন নির্দিষ্ট চাটার্ড বাসটা ধরতে গিয়ে আজ দীপনের ঠিক তিনফুট দেরি হয়ে গেল। চোখের সামনে দিয়ে দীপনকে ফেলে রেখে বাসটা বুনো শূয়োরের মতন ঘোঁৎ ঘোঁৎ করতে করতে বেরিয়ে গেল। কোনো মানে হয়! আপিসে আজ নির্ঘাৎ লেট-মার্ক!

অগত্যা দীপন নিজের হ্যান্ডশেট অ্যান্ড্রয়েট ফোন বার করে ওলা বা উবের বুক করার তোড়জোড় করছে, ঠিক তখুনি রাস্তার উল্টোদিকের ফুটপাথে দেখল তিয়াসাকে। শাড়ি পরেছে আজ। বাসন্তী রঙের। ভারি স্নিগ্ধ আর সুন্দর দেখাচ্ছে! আসলে এর আগে কোনোদিন শাড়িপরা তিয়াসা কে দেখেনি তো, তাই কেমন নতুন লাগছে। সাজগোজ অবশ্য তেমন আহামরি কিছু নয়। তাছাড়া মেয়েদের সাজগোজ-রহ্স্যের সে বোঝেই বা কী! তবু কী মিষ্টি লাগছে। সংগে একজন পুরুষমানুষ। দু'জনে দাঁড়িয়ে কথা বলছে। তিয়াসা হাতমুখ নাড়িয়ে কত কী-ই না বলে যাচ্ছে! কী বলছে? কী বলছে তা এতদূর থেকে শুনতে পাচ্ছে না দীপন। শুনতে পাওয়ার কথাও না। একই সংগে একবুক শূন্যতা ও সীমাহীন ভালোলাগার অনুভূতিতে সে বুঁদ হয়ে থাকল কিছুক্ষণ। আচ্ছা, তি্য়াসার ফেবারে আজ আপিস কাটলে কেমন হয়?

ভেতরে ভেতরে যদিও কেমন একধরণের অস্থির উত্তেজনা মালুম হচ্ছে, তবু দীপন ট্রাফিক সামলে খুব ধীরেসুস্থে সতর্কভাবে রাস্তা পেরিয়ে এপারে চলে এল। এসে সরাসরি তিয়াসার সামনে দাঁড়িয়ে বলল, 'হাই…ইফ অ্যায়াম নট রং, আর য়্যু…'

প্রথমটা চমকে গেলেও নিজেকে মুহূর্তে সামলে নিয়ে তিয়াসা সংগের পুরুষমানুটিকে ছেড়ে দীপনের দিকে এগিয়ে এসে বলল, ইয়া…অ্যায়াম তিয়াসা…অ্যান্ড য়্যু…য়্যু…য়্যু আর দীপন…কারেক্ট?'

দীপন সম্মতিসূচক হাসল। বেজায় আনন্দ হচ্ছে তার। তিয়াসা তার নামটাও মনে রেখেছে? আসলে খুব বেশিদিন তো নয়, সব মিলিয়ে মোটে বছরতিনেক দেখাসাক্ষাৎ হয়নি তাদের। প্রথম আলাপ দক্ষিণ কলকাতার একটা নামী সুইমিং ক্লাবে। দীপন সেখানে রোজ সকালে সাঁতার প্র্যাকটিস করত। ওই সুইমিং ক্লাবের বহুকালের মেম্বার সে। সেই কলেজজীবন থেকে সে সাঁতার শিখে আসছে। বছর পাঁচেক আগে সেখানে ভর্তি হল তিয়াসা। বড়লোকের মেয়ে। প্রথমদিন মায়ের সাথে গাড়ি করে এসেছিল। অ্যাডমিশন হয়ে গেল। পরের দিকে সে অবশ্য একা একাই আসত, মায়ের সংগে নয়। প্রথম থেকেই দীপনের বেশ ভালো লেগে গিয়েছিল মেয়েটিকে। সরল নিষ্পাপ মুখখানা। কিন্তু বুদ্ধিদীপ্ত। দেখলে মনে হয়, যেন জাগতিক কোনো আবিলতা ওকে এখনও স্পর্শ করতে পারেনি।

যদ্দূর মনে পড়ে, সাঁতারে তিয়াসার পারফরমেন্স অন্যান্য মেয়ে মেম্বার্সদের তুলনায় অনেক বেটার ছিল। তবে একটা ব্যাপারে সে খুব চাপের মধ্যে ছিল। কিছুতেই সে ডুব-সাঁতার পারত না। জলের ভেতর পুরো মুন্ডুটা সে কোনোমতেই ডুবিয়ে রাখতে পারত না, দীর্ঘসময় ধরে দম বন্ধ করে রাখা তো দূরের ব্যাপার। খুব সমস্যা্য পড়ে গেল গিয়েছিল বেচারা। একদিন দীপনের কাছে পরামর্শও চেয়েছিল, 'কী করা যায় বল তো, দীপন? আমার দ্বারা কিছুতেই ডুব-সাঁতার সম্ভব নয়…প্লিজ হেল্প মী…'

দীপন তাকে যথাসাধ্য টিপসও দিয়েছিল। কিন্তু শুধু টিপস-এ কী হবে? চেষ্টা তো ওকে নিজেকেই করতে হবে।

মোট বছরদুয়েক সুইমিং ক্লাবে ছিল তিয়াসা। তারপর একদিন আর এল না। তার পরেরদিনও না। কোনোদিনই না। বড়লোকের মেয়ের সাঁতারের শখ মিটে গেল? ঠিক কী কারণে তিয়াসা সুইমিং ক্লাব ছেড়েছিল, তা আজও জানেনা দীপন। 
শুধু জানে, তিয়াসা চলে যাবার পর বুকের ভেতরটা খাঁ খাঁ লেগেছিল। পরে সে অনেক ভেবেও স্থির করতে পারেনি, তিয়াসার প্রতি তার এই যে টান, এই যে মনখারাপ করা অনুভূতি – একেই কি ভালবাসা বলে? 
 তিয়াসার চোখের দৃষ্টিতে কি এধরণের কোনো প্রশ্রয় ছিল? নিজেকে মাঝে মাঝে ধিক্কারও দিয়েছে দীপন এইজন্যে। সে একজন শক্তসমর্থ রোম্যান্টিক পুরষ হয়েও এতদিনে একটি মেয়ের দৃষ্টি অনুবাদ করতে শিখল না!

'কী হল?...কোথায় হারিয়ে গেলে?...এনিথিং রং?' তিয়াসার গলায় উদ্বেগ।

'আরে না না…কিছু না, এমনি…' দীপন যেন ধরা পড়ে গেছে, এইভাবে বলল, 'আগের দিনের কথাগুলো খুব মনে পড়ে যাচ্ছিল আর কি…ছাড়ো দিকি ওসব…এদিকে কোথায় এসেছিলে? তোমার সংগের ওই ভদ্রলোক কে?'

তিয়াসা বলল, 'উনি? উনি আমার উড-বী…এখন ট্রেনিং পিরিয়ড চলছে…ইনট্রোডিউস করিয়ে দেব?'

ভুরু কুঁচকে দীপন সিরিয়াসলি জানতে চাইল, 'কিসের ট্রেনিং?'

'হি হ্যাজ অলরেডি আ্যাপ্লায়েড ফর দ্য পোস্ট অফ মাই হাজব্যান্ড' তিয়াসা চোখ মটকে মজা করে বলল, 'তারই ট্রেনিং চলছে…'

বলেই তিয়াসা হো হো করে হেসে উঠল। দীপনও তাল মিলিয়ে হো হো হাসল। যদিও নিজের হাসিটাকে তার নিজের কাছেই আর্তনাদের মতন শোনাল।

দীপন হঠাৎ বলল, 'আজ চলি। আমার আপিসে লেট হয়ে যাবে…আরেকদিন তোমার উড-বী'র সংগে আলাপ করে নেব'খন…'

বলে দু'পা এগিয়েছে, পেছন থেকে তিয়াসা এক অদ্ভুত দূরাগত গলায় ডাক দিল, 'জাস্ট-আ-মিনিট…'

ডাকটা শোনামাত্র দীপনের পা-দুটো যেন পাথরের মতো ভারি হয়ে ফুটপাথে প্রোথিত হয়ে গেল। সে আর এক-পাও এগোতে পারল না। তিয়াসা সামান্য এগিয়ে এসে পেছন থেকে বলল, 'ও হো, একটা কথা বলতে ভুলে গেছিলাম…'

পেছনফিরে দীপন জিজ্ঞাসু তাকাল।

এদিক-ওদিক দেখে নিয়ে তিয়াসা এবার চাপাস্বরে বলল : 'আমি এখন ডুব-সাঁতার শিখে গেছি…'

বলে একটা চোখ টিপে বাক্যটি আন্ডারলাইন করে দিল।
-------------- 

_ছবি ঋণ- ইন্টারনেট  ______________

মুক্তি দাশ
১৩৫, অঘোর সরণী
রাজপুর
কলকাতা-৭০০১৪৯
মোবাইল/হোয়াটসঅ্যাপ : ৯৮৩০৪১৩১২২




 


=========================================================

Better  Some Tabs. For You

1. 



Samsung Galaxy Tab A 10.1 (10.1 inch, RAM 2GB, ROM 32GB, Wi-Fi-Only), Black

Deal Price: Rs. 12,499.00

Extra 10%  direct off  on SBI Card (20-23 Jan, 2021)

For Details CLICK HERE

2. 


Lenovo Tab M10 HD Tablet (10.1 inch, 2GB, 32GB, Wi-Fi Only) Slate Black

Deal Price: Rs. 9,990.00

Extra 10%  direct off  on SBI Card (20-23 Jan, 2021)

For Details CLICK HERE

3. 

Samsung Galaxy Tab A7 (10.4 inch, RAM 3 GB, ROM 32 GB, Wi-Fi-only), Grey

Deal Price: Rs. 16,999.00

Extra 10%  direct off  on SBI Card (20-23 Jan, 2021)

For Details CLICK HERE

=======================

Click Here To Find More Tabs.

========================

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.