কুয়াশায় মোড়া অন্ধকার রাত। আকাশে ভেসে আছে কাস্তেচাঁদ। তারাগুলো যে যার মত ছড়িয়ে ছিটিয়ে। তারাগুলোর মত ত্রিফলা বাতির আলো রাস্তায় গড়াচ্ছে। রাতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে গাড়ির ছুট বাড়ছে। রাস্তায় লোকজনের নামগন্ধও নেই।
নৈঃশব্দ চিরে একটা কালো গাড়ি ব্রেক কষল। রাস্তাটার ঢালের মুখে লাশটা ফেলে দিয়ে উল্টো রাস্তায় ফিরে গেল গাড়িটা।
শুধু একজন অপ্রকৃতিস্থ মানুষ হেঁটে বেড়ায়। রাতের হাইওয়ে জানে। হয়ত তার কোন ঘর নেই। কিংবা ঘরের মধ্যে অপ্রয়োজনীয়। তাই সে বিতাড়িত। ধীরে ধীরে এগিয়ে যায় লাশটার দিকে। লাশটার নাকে হাত রাখে। বুঝতে পারে এখনও প্রাণ আছে। উঠে দাঁড়িয়ে পড়ে।
--- স্যার,একটু দাঁড়ান।লাশটাকে বাঁচান। তার এই চিৎকার কারো কানে পৌঁছায় না। বেশ কিছু দামী গাড়ি নির্লিপ্ত ছুটে চলে ঝড়ের বেগে। মানুষটা পুলিশের গাড়ি চেনে। নিজের গা থেকে জামা খুলে শূ্ন্যে ওড়ায়। ছেঁড়া জামা পাশ কাটিয়ে চলে যায় পুলিশের গাড়ি।
কারো সাড়াই সে পেল না। তার মনে হলো,সে তো অনেকদিন আগেই মরে গেছে। নিজের চোখের সামনে একজন একটু একটু করে মরে যাচ্ছে। কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না লাশটার মৃত্যু। একটা কষ্ট তাকে জড়িয়ে ধরল।
রাত্রি ধীরে ধীরে ভোরের দিকে এগিয়ে চলেছে। দুএকটা রাতজাগা পাখি জেগে। নিস্তব্ধ বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে তাদের কথা। এখন কোন কথাই তার কানে ঢুকছে না। কান খাড়া করে শুনল, একটা গোঙানির শব্দ। আর কোন সন্দেহ রইল না। নিশ্চিন্তে নিজের পা দুটো ছড়িয়ে দিল। ভূতের মত গাছগুলোকে তার মানুষ মনে হতে লাগল। সে বুঝল,লাশটা লাশই। তার মত চলমান মৃতদেহ নয়। চলমান মৃতদেহ কখনও বাঁচে না। লাশ বাঁচে, বেঁচে যায়। শুধু সেই বিশ্বাসেই ঠায় বসে থাকে লাশটার গা ঘেঁষে। ভোরের আলোয় নিশ্চয়ই কেউ বলবে,লাশটা মরেনি রে!
ঠিকানা:-
৫৬এ, মিলন পার্ক।।
কলকাতা--৭০০০৮৪
ফোন--৬২৯১৩৮৭৩৮২.