ফুলশয্যা
অঞ্জলি দে নন্দী, মম
প্রথম স্পর্শ। ফুলে সজ্জিত বিছানা। যৌতুক হিসেবে কনের বাবার কাছ থেকেই বরের বাবা এটি নিয়েছে। স্বামী বলল, " আজ থেকে তুমি আমার। যদি ভবিষ্যতে আমায় ছেড়ে দিয়ে অন্য কারোর সঙ্গে পালিয়ে যাও, তবে যেখানেই থাকো না কেন, আমি সেখানে গিয়ে দুজনকে একসঙ্গে গুলি করে শেষ করবো। " স্ত্রী ভয়ে সিটিয়ে হয়ে গেল। এরপর মিলন হল। তারপর ঘুমল দুজনে। খানিক পরে পত্নী অনুভব করল, সে যেন ভিজে বিছানায় শুয়ে আছে। বসল। হাত দিয়ে বুঝলো, সত্যিই তার শরীরের নিচের বিছানা ভিজে। সে উঠে বসতে, তার পতিও উঠে বসল। অন্ধকার ঘরে, হাত বাড়িয়ে সুইচ অন করে আলো জ্বালিয়ে দিল। বৌটি দেখলো যে ওর স্বামীর পায়জামা ভিজে। অবাক হয়ে তাকিয়েই রইলো। স্বামী বলল, " ঘুমের মধ্যে আমার বিছানায় অজান্তেই প্রস্রাব হয়ে যায়। তুমি যদি তোমার বাপের বাড়ি গিয়ে কাউকে বল আর আমি যদি তা জানতে পারি তাহলে ডিভোর্স করে ঐ বাপের বাড়িতেই ছেড়ে রেখে আসবো চিরদিনের জন্য। এই বলে বর ভিজে বিছানায় শুয়ে পড়ল। ঘুমল। বৌটি বিছানা থেকে নেমে মেঝেতে বসে রইলো। কিছু পরে ভোর হল। বৌটি ঘর ছেড়ে, আলমারী থেকে বাবার বাড়ি থেকে দেওয়া শুকনো নতুন ড্রেস সঙ্গে নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকলো। স্নান করল। ড্রেস করে নিজের শোবার ঘরে ঢুকে ড্রেসিং টেবিলের ওপর রাখা, মায়ের দেওয়া, সিঁদুরের কৌটো থেকে ডান তর্জনীর ডগায় সিঁদুর নিয়ে, সিঁথি ও কপালে পড়ল। বর উঠলো। তোষকটি উল্টে দিলো। ভিজে দিকটা নিচে চলে গেল। আর ওপরের দিকে শুকনো দিকটা রইলো। বেডসীটটি নিজেই নিয়ে গিয়ে ওয়াসরুমের বালতিতে জলে ডুবিয়ে দিল। পরে মেড তা কেচে, বাড়ির ছাদে শুকোতে দিল। বরের বয়স একত্রিশ ও বৌয়ের বয়স পঁচিশ। বউ বি. এস. সি. পাস। বর টেন পাস। এয়ারফোর্স-সার্জেন্ট। এরপর বিয়ের একুশদিন পর ভারতের, বঙ্গের, হুগলীর গ্রামের এই বাড়িতে বউকে ফেলে রেখে চলে গেল, উত্তরপ্রদেশের নিজের কর্মক্ষেত্রে। একা বৌটি ননদদের, দেওরের, শ্বশুর ও শাশুড়ীর নির্যাতন সহ্য করতে লাগলো।
ছবি ঋণ- ইন্টারনেট ।
------------------------------------
দিল্লী