'চিঠিটা পড়েই পুড়িয়ে ফেলো, না-হলে সর্বনাশ হয়ে যাবে। ভেবেছিলাম অন্যভাবে যাব। কিন্তু খোঁজ নিয়ে দেখেছি তাহলে তুমি আমার চাকরিটা পাবে না, বিমার টাকাগুলোও হাতছাড়া হবে। আমাদের সোনালি-রূপালির কী হবে ! তোমারই বা কী হবে !' এটুকুই লেখা।
চিঠিটা পড়া শেষ হতে না-হতেই মোবাইলটা বেজে ওঠে। রমলা, তড়িঘড়ি করে চিঠিটা পুড়িয়ে ফেলে। ততক্ষণে মোবাইলটা থেমে আবার বেজে উঠেছে। স্বপন ফোন করছে। রমলা ভাবতে থাকে, এমন একটা চিঠি লিখে রেখে আবার ফোনে কী নাটক করবে কে জানে ! না আপদটার হাত থেকে বোধহয় এ জন্মে তার মুক্তি নেই ! সে ফোনটা ধরলই না। এই নিয়ে সাতবার বাজল। রমলা ভাবল এবার বাজলে ধরবে। আটবারের মাথায় সে ফোনটা ধরল। ফোনের ওপারে স্বপন নয়, অন্য লোক।
- আপনি কে বলছেন?
- আপনি যার ফোন থেকে কথা বলছেন, আমি তার স্ত্রী।
-ম্যাডাম মনকে একটু শক্ত করুন, আপনার জন্য একটি দুঃসংবাদ আছে। আপনার স্বামী চলন্তবাসে উঠতে গিয়ে পা পিছলে ... পিছনের চাকা মাথার উপর দিয়ে ...। আমি কাকদ্বীপ থানার ওসি বলছি। আপনি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কাকদ্বীপ হাসপাতালে চলে আসুন। হাসপাতালে পৌছে এই ফোনে একটি কল করবেন।
যাক এত দিনে লোকটি একটা কাজের মতো কাজ করতে পেরেছে। এবার আর তার স্বাধীনতায় কেউ হাত লাগাতে পারবে না। রমলা এইসব ভাবতে ভাবতে আলমারি খুলে বসে। কোন শাড়ি এই আবহে মানানসই হবে তা ঠিক করতে করতে এই প্রথম সে অন্তর থেকে স্বপনকে কৃতজ্ঞতা জানায় ।
----------------------