গ্রীক পুরাণ অবলম্বনে গল্প।। স্বর্ণলিপ্সা ।। রঞ্জন চক্রবর্ত্তী
- রঞ্জন চক্রবর্ত্তী
এশিয়া মাইনরের একটি রাজ্য ফ্রিজিয়ার রাজা মিডাস প্রভূত ধনসম্পদের অধিকারী ছিলেন। তাঁর ছিল সম্পদের প্রতি সীমাহীন লোভ, বিশেষ করে সোনার প্রতি আকর্ষণ ছিল সবথেকে বেশী। তিনি মনে করতেন এই উজ্জ্বল সোনালী ধাতুটিই পৃথিবীর সবথেকে মহার্ঘ্য বস্তু। সোনা ছাড়া যে জগতে অন্য কিছু অকাঙ্খিত বস্তু থাকতে পারে এটা তিনি ভাবতেই পারতেন না।
সিংহাসনে বসার পর থেকেই মিডাস দেশবাসীর সুরক্ষার উপর জোর দিয়েছিলেন। রক্ষীরা দেশের সর্বত্র ঘুরে ঘুরে চারদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখত। মোটের উপর তাঁর শাসনে দেশে শান্তি বিরাজ করছিল। মিডাসের কড়া নির্দেশ ছিল যা কিছু সন্দেহজনক বলে মনে হবে তা রাজার সামনে নিয়ে আসতে হবে। তিনি সবকিছু খতিয়ে দেখে সেবিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।
একদিন স্থানীয় কৃষকেরা দেখল আঙুরক্ষেতে একটি অদ্ভুতদর্শন প্রাণী ঘুমোচ্ছে। তার শরীরের অর্ধেক মানুষের মত আর অর্ধেক ছাগলের মত দেখতে। কৃষকেরা প্রাণীটাকে দেখে প্রথমে একটু চমকে গিয়েছিল। এরকম বিচিত্র জীব তারা আগে কখনও দেখে নি। তারা খবর দিল রাজার রক্ষীদের। তাড়াহুড়ো করে দৌড়ে এল রক্ষীরা। তাদের দলপতি বলল, কী এমন হয়েছে যে আমাদের জরুরী তলব করলে? তোমরা এত ঘাবড়ে গেছ কেন?
কৃষকদের মধ্যে একজন বলল, এই প্রাণীটাকে দেখে আমরা চমকে গেছিলাম। তাই আপনাদের খবর দিয়েছিলাম একবার এখানে এসে নিজের চোখে এটাকে দেখতে।
দলপতি আঙুরখেতের মধ্যে ঘুমন্ত জীবটিকে একনজর দেখেই বলল, আরে, এটা তো দেখছি একটা স্যাটার। ভয় নেই, প্রাণীটা নিরীহ বলেই জানি। তোমাদের কোনও ক্ষতি করবে না। বলতে পার এই স্যাটারটা এখানে এল কী করে?
কৃষকদের মধ্যে থেকে আর একজন বলল, তা জানি না। আমরা অনেককে জিজ্ঞাসা করেছি, কেউ কিছু বলতে পারছে না।
দলপতি একটু ভেবে বলল, এক কাজ করা যাক। চল, আমরা এই স্যাটারটাকে রাজার কাছে নিয়ে যাই। তিনিই ঠিক করুন এটাকে নিয়ে কী করা যাবে।
কথাটা রক্ষীদের সকলের মনে ধরল। তখন তারা সদলবলে প্রাণীটাকে ধরে-বেঁধে নিয়ে এল রাজা মিডাসের কাছে। রাজা তখন মন্ত্রীদের সঙ্গে বসে রাজকার্যের বিষয়ে শলাপরামর্শ করছিলেন। একনজর দেখেই তিনি অনুমান করতে পারলেন রক্ষীরা কেন এত হন্তদন্ত হয়ে তাঁর কাছে এসেছে। মুচকি হেসে তাদের উদ্দেশ্যে বললেন, কী ব্যাপার হে? এত উত্তেজনার কারণ কী?
রাজাকে যথাবিহীত অভিবাদন করে রক্ষীদের দলপতি বলল, অপরাধ নেবেন না মহারাজ, একটা অদ্ভুত দেখতে প্রাণীকে আপনার কাছে ধরে নিয়ে এসেছি। ষতদূর জানা আছে এই ধরণের প্রাণীর নাম স্যাটার। এখন আপনি বলে দিন এটাকে নিয়ে কী করা যায়।
এই বলে সে আঙুল দিয়ে প্রাণীটার দিতে নির্দেশ করল। সেদিকে একনজর দেখেই রাজা বললেন, আরে করেছ কী? এ কাকে ধরে নিয়ে এসেছ তোমরা!
রাজার কথা শুনে অবাক হয়ে দলপতি বলল, কেন প্রভু? আমরা কী অজান্তে কোনও ভুল করে ফেলেছি?
রাজা চিন্তিত মুখে বললেন, তা একটু ভুল তো হয়েইছে। এই স্যাটারটার নাম সিলেনাস। এ হল ওয়াইন ও আমোদ-প্রমোদের দেবতা ডিওনিসাসের বিশেষ প্রিয় পাত্র, তাঁর দক্ষিণ হস্ত বলতে পার।
এবার জনৈক প্রবীণ মন্ত্রী বললেন, শুধু তাই নয় মহারাজ, এককালে এই সিলেনাস ছিল দেবতা ডিওনিসাসের শিক্ষক। অনেকে এটাও বলে এ হল আসলে তাঁর পালক পিতা। একে বেঁধে আনা হয়েছে জানতে পারলে ডিওনিসাস নিশ্চয় অত্যন্ত রুষ্ট হবেন।
দেবতা রেগে যেতে পারেন শুনে দলপতি খুব ভয় পেয়ে গেল। কাঁপা কাঁপা গলায় বলল, প্রভু, আমরা না জেনেই অন্যায় করে ফেলেছি। আপনি দয়া করে বলুন এখন কী করলে দেবতার ক্রোধ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়।
রাজা বললেন, আর একটুও দেরী না করে আগে স্যাটারটিকে মুক্ত করে দাও। তারপর তার কাছে ক্ষমা চাও। দেবতা নিশ্চয় বুঝবেন তোমরা যা করেছে সেটা না জেনে করা।
তৎক্ষণাৎ সিলেনাসকে বন্ধন থেকে মুক্ত করে দেওয়া হল। রাজা মিডাস তাকে বললেন, আমি স্বীকার করছি তোমার সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে। এর জন্য আমি তোমার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। কিন্তু আগে বল তুমি এখানে এলে কী করে?
সিলেনাস বলল, দেবতা ডিওনিসাস লিডিয়া রাজ্যে যাওয়ার পথে ফ্রিজিয়া হয়ে ষাচ্ছিলেন, আমিও তাঁর সঙ্গেই ছিলাম। চলতে চলতে আমি একটু পিছিয়ে পড়েছিলাম। পথশ্রমে খুব ক্লান্তি বোধ হচ্ছিল, তাই ঠিক করেছিলাম আঙুরখেতে একটু ঘুমিয়ে নেব। ইতিমধ্যে এই বিপত্তি।
মিডাস অনুতপ্তভাবে বললেন, আসলে আমার রক্ষীরা তোমাকে চিনতে পারে নি। তাই একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। আমার অনুরোধ তুমি দেবতা ডিওনিসাসের কাছে গিয়ে তাঁকে এই কথাটা জানিও।
সম্মতিসূচক মাথা নাড়ল সিলেনাস। তারপর বলল, আমি অত্যন্ত ক্লান্ত। একটু বিশ্রাম পেলে আবার চাঙ্গা হয়ে উঠব।
রাজা বললেন, এ আর এমন কী কথা। কয়েকটা দিন আমার প্রাসাদেই থেকে যাও নাহয়। পথশ্রমের ক্লান্তি দূর হলে আবার যাত্রা করবে।
দশদিন দশরাত রাজপ্রাসাদে বিশ্রাম করল সিলেনাস। একাদশ দিন সকালে সে বলল, এখন আমি বেশ সুস্থ বোধ করছি। কিন্তু এবার আমায় ডিওনিসাসের কাছে যেতে হবে। তিনি লিডিয়ায় আমার জন্য অপেক্ষা করছেন।
একথা বলে ধীর পদক্ষেপে রাজপ্রাসাদ থেকে বেরিয়ে পড়ল সিলেনাস। সেখান থেকে সোজা গিয়ে হাজির হল লিডিয়ায়, দেবতা ডিওনিসাসের কাছে।
তাকে দেখেই ডিওনিসাস বললেন, তোমার আসতে এত দেরী হল কেন? আমি তোমার জন্য উৎকন্ঠায় ছিলাম।
সিলনাস বিনীতভাবে বলল, প্রভু, আমার দোষ নেই। দীর্ঘ যাত্রাপথে আমি আপনার ঠিক পিছনেই ছিলাম। অনেকটা পথ হাঁটার পর ফ্রিজিয়া রাজ্যের একটি আঙুরখেতে বিশ্রাম নেওয়ার সময় সে দেশের রক্ষীরা আমায় অকারণে বন্দী করে রাজার কাছে নিয়ে যায়।
এই পযন্ত শুনে ডিওনিসাস রাগতভাবে বললেন, ফ্রিজিয়ার রক্ষীদের ধৃষ্টতা তো কম নয়! তাদের এত সাহস যে আমার প্রিয়পাত্রকে বন্দী করে! তুমি মুক্তি পেলে কী করে?
সিলেনাস বলল, আসলে রক্ষীরা আমাকে চিনতে পারে নি। কিন্তু ফ্রিজিয়ার রাজা মিডাস অত্যন্ত বিচক্ষণ মানুষ। তিনি আমাকে দেখেই চিনতে পারেন এবং সেই মুহুর্তেই বন্দীদশা থেকে মুক্ত করে দেন। শুধু তাই নয়, তিনি আমার কাছে ক্ষমাও চেয়েছেন এবং যথেষ্ট যত্নআত্তিও করেছেন।
একথা শুনে অত্যন্ত খুশী হলেন ডিওনিসাস। বললেন, ঠিক আছে, আমি বুঝতে পেরেছি পুরো ঘটনাটাই হল ভুল বোঝাবুঝির ফল। আমি রাজা মিডাসকে দর্শন দেব। এমন সদাশয় ব্যক্তিকে পুরস্কৃত করা উচিত।
একদিন মিডাস যখন নিভৃতে সম্পদকক্ষে বসে সংগৃহীত সোনাদানা দেখছিলেন তখন তাঁর সামনে আর্বিভূত হলেন ডিওনিসাস। তাঁকে উদ্দেশ্য করে দেবতা বললেন, বিচক্ষণ রাজা, সিলেনাসের প্রতি তোমার আচরণে আমি খুব খুশী হয়েছি। নিঃসঙ্কোচে বল তোমার কী চাই? তুমি যে ইচ্ছা প্রকাশ করবে আমি কথা দিচ্ছি তা পূর্ণ করব।
একথা শুনে এক মুহুর্তও দেরী না করে কী চাইবেন স্থির করে ফেললেন মিডাস। জগতে তাঁর সবথেকে প্রিয় বস্তু হল সোনা। আজন্ম তাঁর সোনার প্রতি লোভ। অসংখ্য স্বর্ণালঙ্কার থাকা সত্বেও তাঁর সোনার প্রতি আকর্ষণ এতটুকুও কমেনি। দেবতার কাছে বর চাওয়ার এমন অভাবনীয় সুযোগ জীবনে আর আসবে না। তাই লোভের বশীভূত হয়ে অগ্রপশ্চাৎ না ভেবে বলে বসলেন, প্রভু যদি আমার উপর সত্যিই সন্তুষ্ট হয়ে থাকেন তাহলে বর দিন যাতে আমার মধ্যে এমন ক্ষমতা জন্মায় যে আমি যা স্পর্শ করব তা-ই যেন সোনা হয়ে যায়।
ডিওনিসাস গম্ভীরভাবে বললেন, ভাল করে ভেবে বলেছ তো মিডাস? তুমি একেবারে নিশ্চিত তো যে এই বরই চাও? এখনও সময় আছে, তুমি ইচ্ছা করলে অন্য কিছু চাইতে পার। মনে রেখ, একবার বর দিলে আমি কিন্তু আর তা ফিরিয়ে নিতে পারব না।
মিডাসের মন এখন সোনার লোভে পরিপূর্ণ। তিনি পূর্ববৎ বিনীতভাবে বললেন, আমার ভাবা হয়ে গিয়েছে প্রভু। এছাড়া আর অন্য কিছু চাই না আমি। এখন দয়া করে আমার মনস্কামনা পূর্ণ করুন।
স্মিতহাস্যে ডিওনিসাস বললেন, ঠিক আছে, তবে তাই হোক। আমি বর দিচ্ছি তুমি যা ছোঁবে তা-ই সোনা হয়ে যাবে।
একথা বলে চোখের পলক ফেলার আগেই ডিওনিসাস অন্তর্হিত হলেন। মিডাসের কাছে পুরোটাই স্বপ্ন বলে মনে হচ্ছিল। এই নবলব্ধ ক্ষমতা পরীক্ষা করার জন্য তাঁর তর সইছিল না। তিনি প্রথমে একটি পানপাত্র ছুঁয়ে দেখলেন। তৎক্ষণাৎ পাত্রটি সোনায় পরিণত হল। এই দৃশ্য দেখে খুশীতে উচ্ছ্বসিত হলেন মিডাস। তারপর দৌড়ে গেলেন বাগানে। বাগানের প্রতিটি গোলাপ তিনি ছুঁলেন, সবগুলিই নিজস্ব বর্ণ-গন্ধ হারিয়ে সোনার ফুলে পরিণত হল। গর্বে তাঁর বুক ফুলে উঠল। এ কী আশ্চর্য ক্ষমতার অধিকারী হয়েছেন তিনি! প্রাসাদে ফিরে এসে শিশুর মত এটা ওটা ছুঁয়ে দেখতে লাগলেন। যা ছুঁলেন সেই বস্তুগুলি সবই সোনায় পরিণত হল। তাঁর উত্তেজনা চরমে উঠল। এভাবে অজস্র বস্তুকে তিনি সোনায় পরিণত করলেন। রাজার উত্তেজনা ক্রমে উন্মাদনায় পরিণত হল, কিন্তু স্বর্ণতৃষ্ণা কমল না। আরও, আরও সোনা চাই!
কিন্তু ক্ষমতার অন্য দিকও যে আছে উত্তেজনার বশে সেটা খেয়াল করেন নি মিডাস। গোলোযোগটা প্রথমে বাধল খেতে বসে। যে খাবারই হাতে তুলে নেন, সেটাই যে সোনা হয়ে যায়। সুতরাং খাওয়া আর সম্ভব হল না, ক্ষুৎপিপাসায় কাতর হওয়া সত্বেও রাজাকে খাবার ফেলে রেখে উঠে পড়তে হল। এতক্ষণে তিনি বুঝতে পারলেন যে কী ভয়ঙ্কর ভুল করে ফেলেছেন। কিন্তু এখন যে আর ফেরার উপায় নেই। মিডাসের হৃদয়ে ভীতির সঞ্চার হল, অজানা বিপদের আশঙ্কায় কেঁপে উঠল তাঁর বুক।
এইসময় ঘরে ঢুকল তাঁর কন্যা। বাগানে বেড়াতে গিয়ে সে দেখেছে এক অদ্ভুত দৃশ্য, গোলাপ গাছগুলিতে ফুটে আছে সোনার ফুল। সেকথাই বাবাকে বলার জন্য ছুটে এসেছিল সে। তাকে ঢুকতে দেখে শশব্যস্ত হয়ে বারণ করলেন মিডাস, দূরে থাক, আমার থেকে দূরে থাক।
মেয়েটি বুঝতে পারল না তার স্নেহশীল পিতা আজ এমন আচরণ করছেন কেন? বারণ না শুনে সে সোজা এগিয়ে এল মিডাসের দিকে। কোথায় পালাবেন রাজা মিডাস, তিনি যে এখন চার দেওয়ালের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছেন। পিছোতে পিছোতে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেল। মুহুর্তের ভগ্নাংশ সময়ে মেয়েটি তাঁকে স্পর্শ করল। মিডাস হতভম্ব হয়ে দেখলেন চোখের সামনে তাঁর প্রাণের চেয়ে প্রিয় কন্যা প্রাণহীন স্বর্ণপ্রতিমায় পরিণত হয়েছে।
কন্যার এই শোচনীয় পরিণতি দেখে শোকে-দুঃখে ভেঙে পড়লেন মিডাস। এর জন্য তিনি নিজে ছাড়া আর কেউ তো দায়ী নয়। নিজের সীমাহীন লোভের জন্য তিনি আজ এই অবস্থার শিকার। দেবতার আর্শীবাদ এখন অভিশাপে পরিণত হয়েছে। এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে হলে আবার দেবতার শরণাপন্ন হওয়া ছাড়া গত্যন্তর নেই। মিডাস আকুল হয়ে প্রার্থনা জানালেন ডিওনিসাসের কাছে, হে প্রভু একবার আমাকে দেখা দিন। আপনি যে বর দিয়েছেন অনুগ্রহ করে তা ফিরিয়ে নিন।
সেই করুণ প্রার্থনা শুনে ডিওনিসাসের হৃদয় বিগলিত হল। তিনি পুনরায় আবির্ভূত হলেন মিডাসের সামনে। স্নেহভরা কন্ঠে ভূলুন্ঠিত রাজাকে বললেন, কী হল মিডাস, এখনও কী তোমার স্বর্ণলিপ্সা পূর্ণ হয় নি? তুমি যা চেয়েছ তাই তো পেয়েছ, তাহলে এখন অনুতাপ করছ কেন?
মিডাস নতমস্তকে বললেন, আমি যা চেয়েছি তা ভুল করে চেয়েছি। লোভের বশীভূত হয়ে আমার হিতাহিত জ্ঞান লুপ্ত হয়ে গিয়েছিল। আপনি দয়া করে আমাকে যে ক্ষমতা দিয়েছেন তা ফিরিয়ে নিন।
ডিওনিসাস বললেন, তুমি যে নিজের ভুল বুঝতে পেরেছ তাতেই আমি খুশী হয়েছি। জেনে রেখ, জাগতিক সম্পদের প্রতি অদম্য লোভ মানুষকে উন্মাদ করে তোলে, তার জ্ঞান-বুদ্ধি লোপ পায়। যাই হোক, আমি আবার তোমার মনস্কামনা পূর্ণ করব। যে ঝর্ণাটি প্যাক্টোলাস নদীর উৎস তার কাছে যাও। সেই ঝর্ণার জলে তুমি এখনই হাত ধুয়ে ফেল। তাহলেই তোমার সব ক্ষমতা নদীর জলে ধুয়ে চলে যাবে এবং তুমি যে বস্তুগুলিকে স্পর্শ করে সোনায় পরিণত করেছ সেগুলিও পূর্বাবস্থায় ফিরে আসবে।
এই বলে দেবতা অন্তর্হিত হলেন। কালবিলম্ব না করে মিডাস চললেন প্যাক্টোলাস নদীর উৎসের দিকে। ঝর্ণার জলে হাত ধোয়ামাত্রই তাঁর ক্ষমতা নদীর জলে মিশে গেল এবং নদীর বালুকারাশি স্বর্ণকণায় পরিণত হল। সেই থেকে প্রাচীন গ্রীসের আকাশে বাতাসে ভেসে বেড়াত একটি জনশ্রুতি - প্যাক্টোলাস নদীর জলে নাকি সোনা পাওয়া যায়।
--------------------------------------
ছবি ঋণ- ইন্টারনেট ।
তথ্যসূত্র- গ্রীক পুরান
সব গল্প টা এক নিশ্বাসে পড়লাম ও মেয়ে কে পড়ে শোনালাম। আমাদের খুব ভালো লেগেছে এই গল্প টা। সুন্দর একটা নীতি কথাও শিক্ষা হলো।
উত্তরমুছুন