অণুগল্প।। মরীচিকা।। স্বরূপ মণ্ডল
মরীচিকা
স্বরূপ মণ্ডল
তৃষ্ণা আর বারিদের সম্পর্কটা বেশি দূর এগোয় নি। দোষটা অবশ্য কারোরই নয়। বেশ কয়েকটা ডেটিং এর পর দু' জনেই বুঝতে পারে ওদের চিন্তা ভাবনায় আকাশ পাতাল ফারাক। দু' জনেই দেখতে সুন্দর ছিল তাছাড়া ওদের মধ্যে বেশ একটা ভাল লাগা ভাবও তৈরি হয়ে গেছিল। সে হোক! আজকালকার ছেলেমেয়েরা অনেক বেশি স্মার্ট। ওরা আবেগের চেয়ে বিবেক বুদ্ধিকেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছিল। প্রথমে খারাপ লাগলেও পরে বুঝেছে ওদের সিদ্ধান্তই ঠিক।
বেশ কয়েক মাস কেটে গেছে। চোখ দুটো সব সময় কিছু একটা খুঁজে বেড়াচ্ছিল। মাঝেমধ্যে খুঁজেও পাচ্ছিল কিন্তু সে সবই যেন মরীচিকা। আজ অফিসে যাওয়ার পথে সকাল ন' টার বাসে উঠে জায়গায় বসে সামনের আয়নায় চোখ পড়তেই মাথাটা ঘুরে গেল। এ যে ভয়ানক সুন্ধরী! কী অপূর্ব চোখ! চোখের তারাগুলো যেন এক একটা ব্ল্যাক হোল। সমস্ত কিছুকে আকর্ষণ করছে। এমন সুন্দর ওষ্ঠ আর অধরের কম্বিনেশন শিল্পীর তুলিতেই সম্ভব। এতটুকু ভালগারিটি নেই অথচ মোহময়ী। এই তো মিলেছে! এতদিন ধরে এ রকমই একজনকে খুঁজছিল ও। যে করেই হোক মেয়েটির সঙ্গে আলাপ করতেই হবে। কিন্তু কীভাবে? -একটা উপায় খুঁজছিল।
বাসটা শহর লাগোয়া একটা মানসিক হাসপাতালের গেটের সামনে দাঁড়াতেই দেখল, একজন ভদ্রমহিলা মেয়েটির হাত ধরে টানছে। মেয়েটি রাগে ফুঁসছে আর নাগাড়ে বলে চলেছে, "নামবো না। কিছুতেই নামবো না। কী করবি? আমাকে কি পাগলি পেয়েছিস? সব বলে দেবো। পুলিশ, ও পুলিশ …"
ফের একটা মরীচিকা! জানালার ওপাশে আইল্যাণ্ডের দিকে চোখ ফেরাল বারিদ।
ওখানেই মুক্তাঙ্গনে প্রথমবার ডেটিং হয়েছিল তৃষ্ণার সাথে।
ছবি ঋণ- ইন্টারনেট ।
----------------------------------------------
স্বরূপ মণ্ডল
বাগডাঙ্গা, কান্দি, মুর্শিদাবাদ
পিন- ৭৪২১৩৮
যোগাযোগ- ৯৭৩২৪০৪৭৫২
ই-মেইলঃ bivartan@gmail.com