অণুগল্প ।। অভিজ্ঞতা ।। দেবব্রত রায়
অভিজ্ঞতা
দেবব্রত রায়
নন্দিতা পার্কের ঘাসের উপর আমার থেকে একটু দূরে মাস্ক পরে বসেছিল। ও টেকনো-ইন্ডাস্ট্রী নিয়ে কী যেন একটা গবেষণা করছে। আমি দ্বিতীয় শ্রেণির একটা কাগজের সাংবাদিক। খবর সংগ্রহে বেরিয়ে নন্দিতার সঙ্গে হটাৎ-ই দেখা হয়ে যাওয়ায় পার্কে বসে গল্প করছি । নন্দিতা আকাশের দিকে একটার পর একটা বাদাম ছুড়ে দিয়ে নিজের মনেই সেগুলো মুখে পুরছিল। কোনো কোনটা অবশ্য মিস হয়ে ওর জিন্স পরা ভারী সুঠাম জাঙের উপর এসে জড়ো হচ্ছিল ।আমি নন্দিতার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলাম,"আচ্ছা নন্দিতা,মানুষের প্রথম অভিজ্ঞতা সম্পর্কে তোমার কী ধারণা? " নন্দিতা আমার দিকে কিছুক্ষণ হা করে তাকিয়ে থেকে বললো , "কিসের, বাদাম খাওয়ার ! " আমি বললাম," না,জেনারেলি।" নন্দিতা হাত ঝাড়তে ঝাড়তে বললো,"জানি না,তোমার কী মনে হয়? "আমি বললাম," ভীষণ তেতো যাকে বলে একেবারে নিমতেতো ! " এই যেমন ধর পৃথিবীতে ভূমিষ্ট হয়েই মানুষের সে কি চিল-চিৎকার ! যেন, এখানে কেন এলাম রে বাবা ! একবারও ভাবতে পারছ,তুমি জন্মেই দেখলে সবাই দাঁত কেলিয়ে হাসছে আর,তুমি,আমি মানে,আমরা এক্কেবারে দন্তহীন, সারেগামাপাধানিবিহীনভাবে কেঁদেই চলেছি ! নন্দিতা আমার দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে থেকে বললো," কী ব্যাপার বল তো তোমার! " আমাকে যেন হটাৎ-ই,কথা বলার নেশায় পেয়ে বসেছে। আমি বললাম,আমার প্রথম প্রেম, মানে তুমি....
যাইহোক, নন্দিতা অবশেষে,আমার সেই কেষ্ট না মেলা গোপন কষ্টগুলো শুনে থুতনিতে হাত রেখে বললো, বেশতো, বোটানিক্যালে যে ঘোড়ানিম গাছটার নীচে তোমাকে রিফিউজ করেছিলাম আজই সেখানে গিয়েই নাহয়, তোমাকে এক্সেপ্ট করে নেবো!
চৈত্রের চরা রৌদ্র উপেক্ষা করেই নন্দিতা কে নিয়ে ছুটলুম চিন্দিমারির সেই বোটানিক্যালে! পৌঁছে দেখলুম, কোথায় বোটানিক্যাল, কোথায় সেই ঘোড়ানিম ! ঘন ক্লোরোফিলের ছায়ার পরিবর্তে সেখানে আকাশ ছুঁয়েছে ডাইনোসরের মতো রাশি রাশি হাইরাইজ বিল্ডিং-এর ধূসর মাথা !
--------------------------
Debabrata Ray. Hajrapara. P.O.Bishnupur. Dt.Bankura. Pin code no 722122.Mbno.9732399168.