অর্চনাদেবীর শ্বাসকষ্ট ক্রমশ বাড়ছে । বুঝতে পারছেন না যে কী করবেন। খুব অসহায় লাগছে। কোনরকমে হামাগুড়ি দিয়ে মোবাইলটা তুলে নিলেন। ছেলেকে ফোন করবেন। ছেলে বিকাশ রয়েছে আয়ারল্যান্ডে । আর্কিটেক্ট । বছরে বারদুয়েক আসে মা'কে দেখতে। বাড়িতে এখন শুধু অর্চনাদেবীই আছেন।
" হ্যালো, বা ...বু?"
" হ্যাঁ মা বলো। হাঁপাচ্ছ কেন?"
" বাবু, আমি শ্বা ...স নিতে পারছি না রে। খুব কষ্ট হচ্ছে ।"
" কী হয়েছে মা? কমলাদি কোথায়?"
" কমলা আসছে না রে। দু- দিন হল আমার জ্বর এসেছে। কমলা জানতে পেরেই করোনার ভয়ে বা ...বাড়ি চলে গেছে। আজ সকাল থেকে শ্বাসকষ্টটা শুরু হয়েছে । বাবু, তুই বা ...বাড়ি আয় বা ...বা।"
" আমি কী ক'রে আসব মা? এখানে তো লকডাউন চলছে। আচ্ছা, আমি উত্তমকে ফোন করছি। মা, তুমি দরজাটা খুলে রাখতে পারবে?"
" উত ...তম? কিন্তু ও কি আসবে? সে ...দিনের ঘটনা ...টা ..."
" তুমি কিছু ভেবো না মা। উত্তম ওসব মনে রাখেনি। তুমি শুধু দরজাটা খুলে রেখ।"
আধঘন্টা পর। উত্তম একটা রেনকোট আর মাস্ক পরে অর্চনাদেবীকে পাঁজাকোলা ক'রে তুলে মোড়ে দাঁড়ানো অ্যামবুলেনসের দিকে এগোচ্ছে । অর্চনাদেবী অর্ধঅচেতন অবস্থাতেও ছয়মাস আগের ঘটনাটার কথা চিন্তা করছেন। বিকাশ সবে একদিন হয়েছে বাড়ি ফিরেছিল। উত্তম দেখা করতে এসেছে পরের দিন সকালে।
" কাকীমা, বিকাশ কোথায়? একটু দেখতে এলাম।"
" বিকাশ তো এখন দেখা করতে পারবে না বাবা। বিশ্রাম করছে।"
" কিন্তু ... বিকাশই তো বলল..."
" বললাম তো ... বিকাশ বিশ্রাম করছে।"
ঘরের ভিতর যেতে যেতে অর্চনাদেবীর শেষ কথাগুলোও উত্তমের কানে এসেছিল- " যত সব বাউন্ডুলে ছেলে! এরা বিকাশের যোগ্য?"
" উত্তম?"
উত্তম মুখ নামালো অর্চনাদেবীর দিকে।
" বলুন কাকীমা ।"
" আমার যে দুই ছেলে আ ...আমি জান...তাম না।"
-------------------------------
অনেক ধন্যবাদ কথা কাহিনিকে। পত্রিকার শ্রীবৃদ্ধি হোক ।
উত্তরমুছুনমনে মোচড় দেওয়া লেখা।
উত্তরমুছুন