ছেঁড়ে দেঁ মাঁ কেঁদে বাঁচি
প্রদীপ দে
এঁই তোঁ আঁমি এঁইছি ……
মগডালে বসে লম্বা পা ঝোলায় কুঙ্কি কাকিমা। আগে কাকিমা ছিল, কাকা কাকিমার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে সুইসাইড করে। কাকা ভুত হয়ে যাওয়ার পর পিশাচ হওয়া স্বামী তার স্ত্রীর গলা মুটকে দেয়। এরপর থেকে ও ভুতি আর পিশাচী!
পা দুটি এতই লম্বা যে মগডাল থেকে পা যায় ঝুলে, যা একেবারে মাটিতে গিয়ে ঝাঁট দেয়। রোজ সন্ধ্যায় আসে আর সারারাত ভুতের কেত্তন করেন। অমাবস্যা হলে তো কথাটি নেই একেবারে ছুঁচোর কেত্তন আরম্ভ করে দেয়। প্রথমে খানিক পা দোলাবে আমেজ করবে তারপর নেকী সুরে গান ধরবে। চাইবে গ্রামের সব্বাই যেন তার গান শুনে চলে আসে। কেউ এলে তাকে পায়ে জড়িয়ে তুলে নিয়ে হয় আদর, নয় চুমা খাবে। সে কি চুমার আওয়াজ, কপাৎ কপাৎ করে !
আর আদর! সে আর বলে বোঝানাো যাবে না।বড়ই লজ্জার ব্যাপারস্যাপার আর কি।
তবে বলি শুনুন ,
আসলে ছোটদের ধরে চুমু খেয়ে চটকে মটকে তার ছোট্ট 'ইয়ে' টায় খুব আদর করে ছেড়ে দেবে কোন ক্ষতি না করেই।
আর বড় পুরুষ কাউকে পেলেই নিজের বুক দিয়ে তাকে ঘষে ঘষে তাকে খুবই আদর করবে আর ছাড়তে চাইবে না -এই রকমই ভাবখানা যেন - যে তুমি আমার কাছে এলে তোমারই লাভ! বিনে পয়সায় ফুর্তি পাইয়ে দেওয়া - যাকে বলে এই আরকি!
কিন্তু মহিলাদের উনি একদম পছন্দ করেন না।ওরা নাকি হিংসুটে হয়। মহিলাদের উনি এক্কেবারেই পছন্দ করেন না।
কিন্তু গ্রামের যে সব পুরুষ তার কবলে পড়েছেন তারা আর কেউ দ্বিতীয়বার ওই মাঠে পা বাড়ান না। তাদের সে এক ভয়ানক অভিজ্ঞতা। পিশাচিনির বুকে নাকি গুয়ের গন্ধ। শরীর তো নয় একেবারেই কংকালের হাড় ক'খানা!
তবে ভয়েই হোক অথবা ভালোবেসেই হোক একবার একটু ওনাকে খুশি করে দিলেই কেল্লা ফতে। উনি তাকে আবার আসবার নিমন্ত্রণ
জানিয়ে ছেড়ে দেবে।
আর যেদি কেউ না আসে তবে সেদিন উনি পুকুর থেকে পা দিয়ে জ্যান্ত মাছ তুলে খচমচ করে চিবিয়ে খাবেন আর গান গাবেন।
পাড়া গ্রামের ডাকাবুকো বাটুল হ্যাবলা ঠিক করলো এই কাকিমাকে জব্দ করতেই হবে। বাটুলের বয়স বিয়াল্লিশ কিন্তু দেখলে একেবারে বারো। হঠাৎ দেখলে একেবারেই বালক বলে ভুল হয়। এক অমাবস্যার রাতে বেশ কিছু আঁসটে মাছ খেয়ে আর পকেটে করে কেরোসিন -মাখানো ভাজা মাছের সাথে একটা গ্যাস লাইটার নিয়ে রওনা দিল মাঠের পথে। গাছের নীচে যেতেই মগডাল থেকে নেমে আসা পায়ে জড়িয়ে গেল সে। তরতর করে উপড়ে উঠে গেল সোজা কাকিমার কোলে।
কাকিমা ছোট ছেলে ভেবে বেশ কিছু চুমু খেয়ে নিল। মুখে মাছের গন্ধে পিশাচী ভাবেবিভোর হয়ে গেল। হ্যাবলার ' ইয়ে' তে হাত দিতেই হ্যাবলা সেই সুযোগে কাকিমার মুখে কেরোসিন মাখানো মাছ গুঁজে দিয়েই লাইটার জ্বালিয়ে দিল। দাউ দাউ করে পিশাচীর মুখ জ্বলতে শুরু করে মাথার চুলে ধরে নিল। আর সেই সুযোগে হ্যাবলা কাকির হাতে হিসু করে দিল।
ছেঁড়ে দেঁ মাঁ কেঁদে বাঁচি -- বলে চিৎকার করে উঠে পুড়তে থাকা পিশাচী রোদন করতে করতে হ্যাবলাকে ছেড়ে দিল।
হ্যাবলা পিশাচীর পা ধরে ঝুলে পড়ে মাটি ছুঁয়েই এক্কেবারে পোঁ - পোঁ দৌড়!
=============
PRADIP KUMAR DEY
Birati Housing Estate
LIG - 9
M.B.ROAD.
NIMTA
KOLKATA - 700 049
ধন্যবাদ সকলকে
উত্তরমুছুন