সকলের আদরের নিপা, সে এখন একটি কলেজের অধ্যাপিকা। সকালে টিউশনি করার পর কলেজ শেষ করে বিকেলে দুটো বাচ্চা কে পরিয়ে তারপর বাড়ি ফেরে সে। খুব সাধারণ পরিবারের মেয়ে নিপা ছোটবেলায় বাবা মারা যাওয়ার পর খুব কষ্ট করে লেখাপড়া শিখতে হয় তাকে।
একদিন সে বাড়ি ফেরার তাড়ায় বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে আছে হঠাৎ বৃষ্টি এলো, পাশে এসে দাড়ালো একজন ব্যক্তি। প্রশ্ন করলেন - ভালো আছো?
নিপা অন্যদিকে তাকিয়ে আছে তাই লক্ষ্য না করে ই উত্তর দিলো - হ্যাঁ আপনি?
লোকটি কিছুক্ষণ চুপ থাকার পর প্রশ্ন করলেন - তুমি কি আমায় ভুলে গিয়েছো নিপা? প্রশ্ন শুনে নিপার চোখের সামনে যেন এক মুহূর্তের মধ্যে গোটা পৃথিবীটা ঘুরে গেলো চমকে উঠলো সে, মনে মনে ভাবলো সেই কণ্ঠস্বর, ঠিক দশ বছর আগে যাকে ভালোবেসে ছিলো সে। তাহলে সত্যিই কি আসিষ এলো..........
অবাক দৃষ্টিতে ঘুরে তাকায় সে, এ তো সত্যিই আসিষ। দুজনে নিরব কারোর মুখে কোনো কথা নেই একে অপরের দিকে তাকিয়ে আছে...........
অবশেষে দীর্ঘক্ষণ পরে নিপা বললো - ও আসীষ তুমি, কেমন আছো? আশীষ দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছাড়ে এবং বলে - ভালো কিন্তু তুমি? নিপা মুচকি হেসে উত্তর দেয় - হ্যাঁ ভালোই তো চলে যাচ্ছে। সে আবার প্রশ্ন করে - তা কি করা হয় এখন?
আশীষ মাথা নিচু করে উত্তর দেয় - না ওই এখনও সেরকমই বেকার ভবঘুরে ও বলতে পারো।
নিপা আশীষকে ভালো করে লক্ষ্য করে এবং দেখে, এই সেই স্কুলে পড়া বাজে ছেলেটি চেয়ে পড়া না পারলে মাথা নিচু করে থাকতো। আজও যেন সেই রকম ভাবে দাঁড়িয়ে আছে যেন কী অপরাধ তাই না করে ফেলেছে সে।
কিন্তু সব কিছুর মাঝেও যে তার একটা ভালো গুণ ছিল আশীষ খুব ভালো ক্রিকেট খেলতো। যেটা আমার সবচেয়ে প্রিয় খেলা তার খেলা দেখে আমি বিভোর হয়ে দেখতাম; দেখতে দেখতে কখন যে কার প্রেমে পরলাম কেউ জানে না। এই কথা ভাবতে ভাবতে দুচোখে জল নেমে আসে। সে ধপ করে বসে পড়ে বাসস্ট্যান্ডে থাকা চেয়ারের উপর।
তবে আজও তাকে এ কিভাবে ভালোবাসি। সেও কি আমায় ভালোবাসে?
জানি সেও আমায় ভালোবাসে
কিন্তু আজও বলা হয়ে ওঠেনি দুজনে দুজনাকে। অবশেষে বৃষ্টি থেমে যায় দুজনেই বাসস্ট্যান্ডে গন্তব্যের আশায়।
----------------------------
অঙ্কিতা পাল
ভাঙ্গড়, দক্ষিণ ২৪ পরগনা ।