মিলন ও নিবেদিতার এই বেশ কয়েকদিন হলো বিয়ে হয়েছে। তারা দুজনে বেড়াতে যেতে খুব ভালোবাসে। অফিসের সবাই মিলে একসাথে ঘুরতে যাওয়ার একটা পরিকল্পনা হচ্ছে, তাই মিলনের খুব ইচ্ছা এই সুযোগে তারা দুজনে ও একসাথে মধুচন্দ্রিমায় যাবে, সে অফিস থেকে ফিরে তার স্ত্রী নিবেদিতা কে বলে - একটু চা দাও তো। বলেই সে ড্রইং রুমে থাকা চেয়ারের উপরে বসে পরে। নিবেদিতা চা টা টেবিলের উপরে রেখে দেয় এবং জিজ্ঞেস করে - বাবা তোমাকে এতো খুশী খুশী দেখাচ্ছে, জানতে পারি কারণটা কি? উত্তরের মিলন হো হো করে হেসে হেসে বলে - অবশ্যই অবশ্যই........
আবার আনন্দে সুর করতে থাকে......... হু হু......... লা লা লা লা.............
নিবেদিতা বিরক্ত হয়ে বলে - দূর বাবা এটা যেন উনার রঙ্গ রসিকতা সময়, দূর বাপু পারিনা বাপু কি খাবে বলো। মিলন আবার হা হা করে হাসে এবং তার হাত ধরে বলে - আহা পিয়া একটু বসো ই না, আচ্ছা নতুন বছরে তোমার কি প্ল্যান বলতো। নিবেদিতা আরো বিরক্ত হয় এবং বলে - বুড়ো বয়সে কি ভীমরতিতে ধরেছে তোমার। আবার একটু ব্যঙ্গ করেই বলে - কি প্ল্যান বলো, এসব ঢং দেখে আর বাঁচি না। মিলন চায়ের চুমুক দিতে দিতে বলে - আহা না গো চলো না কোথাও ঘুরে আসি। নিবেদিতার মনে মনে খুব বেরোবার ইচ্ছা, কিন্তু তার পেটে খিদে মুখে লাজ। সেখানে কোন চুপ থাকার পর প্রশ্ন করে - তা কোথায় যাওয়া হচ্ছে শুনি পাহাড় না সমুদ্র? মিলন তখন খুশি হয়ে বলে যে - আমাদের অফিসের তো অনেকেই সমুদ্রে যাচ্ছে পিকনিক করতে তুমি যদি রাজি থাকো............ তাহলে বলে দেখতে পারি। নিবেদিতা খুশি হয়ে আচ্ছা ঠিক আছে বলে নিজের কাজ শুরু করে।
এদিকে মিলন পরের দিনই অফিসে জানায় এবং তাদের যাওয়ার দিন ঠিক হয় ডিসেম্বরের শেষে অর্থাৎ ৩১ শে ডিসেম্বর। এভাবে একটি একটি করে দিন কেটে যায়, সবাই সেইদিনে শিয়ালদায় সাক্ষাৎ করেন এবং সেখান থেকে ট্রেনে ওঠে তিনঘন্টা যাত্রার পর অবশেষে দীঘায় পৌছেয়।
সবাই একসাথে দুপুরের খাওয়া শেষ করে হোটেলে বিশ্রাম নিয়ে, সন্ধ্যায় সমুদ্রের ধারে এসে বসে। চারিদিকে শীতল বাতাস,পূর্ণিমার চাঁদের ছড়া সমুদ্রের ঢেউ এর ওপরে যখন পড়ে তখন যেন লাবণ্যময় হয়ে ওঠে চতুর্দিক। মিলন নিবেদিতা একে অপরের কাঁধে মাথা রেখে কত স্বপ্নের সাগরে ভেসে চলে। এভাবে কত সময় কেটে যায়...........
পরদিন ভোরের বেলা যখন পূর্ব দিগন্তের সূর্যের লাল আভা এসে এসে পরে সমুদ্রের বক্ষ তলে তখন নিবেদিতার মন আনন্দে ভরে ওঠে। মনে হয় এ যেন সত্যি নয় স্বপ্নের মতো................
কিন্তু হঠাৎই স্বপ্ন সমাপ্তি.........
এক প্রচণ্ড বিরাট রাক্ষসে ঢেউ এসে টানতে টানতে নিয়ে চলে মিলনের দেহটাকে।
তারপর সব স্বপ্নের অবসান..........
----------------------------------
নাম - অঙ্কিতা পাল
ভাঙ্গড় দক্ষিণ ২৪ পরগনা
দূরাভাষ - ৯৭৪৯৬১৭২২০