হ্যাপি বার্থডে অহনা অঙ্কিতা পাল
আমি প্রতি বছরই একটি দিনের জন্য অপেক্ষা করে থাকি, সেটি কোন পুজো বা আর অন্যান্য অনুষ্ঠান নয় যার জন্য সমস্ত বাঙালি অপেক্ষা করেন। একটি একটি দিন যায়, মাস চলে যায় আশায় আশায় বসে থাকি পরের বছরের অপেক্ষায়। এটাই আমার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিন যেদিন আমার জ্যেষ্ঠা কন্যা ভূমিষ্ঠ হয় (৩ রা জানুয়ারি ) অহনা (গুনগুন) এর জন্ম দিবস।
এবছর তার ষষ্ঠতম জন্ম দিবস পালিত হলো। সেও অনেকদিন ধরে মনে মনে খুব খুশী ছিলো। সে প্রায় প্রত্যেক দিন ধরেই আমাকে বলতে শুরু করলো - মা মা বার্থডেতে পিঙ্ক ড্রেস হবে তো? আমি একটু হেসে তাকে জড়িয়ে ধরে বললাম - অবশ্যই হবে, বাবা নতুন ড্রেস কিনে আনবে। সেও অমনি লাফাতে লাফাতে সুর অনুরোধ করলো - বাবা........ ও বাবা........ আমার পিঙ্ক ড্রেস।
তারপর দিন আমি ওর বাবা আমার ভাই একটি দোকান থেকে পিঙ্ক ড্রেস কিনে এনে তার হাতে দিয়ে বললাম - অহনা তোমার নিউ ড্রেস। এসে অতীব আনন্দিত হয়ে হাত বাড়িয়ে প্লাস্টিকে মোড়ানো ব্যাগ থেকে জামা খানি বার করে খুব খুশি হলো। তার অবুঝ শিশু মন বলেই ফেললো - হোয়ার ইজ মাই বার্থডে কেক? তার বাবা তাকে শান্তনা দিয়ে বুঝিয়ে বললো, আজ নয় কালকে তোমার বার্থডে সোনা। অমনি সে ও মুখ কালো করে বিছানায় শুয়ে ঘুমিয়ে পড়লো।
আজ ৩ রা জানুয়ারি ছোট্ট সোনা অহনার জন্মদিন। এবারের জন্মদিন তার মামার বাড়িতে পালন করা হলো। সকাল থেকে সে বড় খুশি ই ছিলো,খুব একটা দুষ্টুমি করেনি আজ। বরং সে কৌতুহলী হয়ে একবার আমার বাবাকে একবার আমার মাকে প্রশ্ন করে - হোয়ার ইজ মাই বার্থডে কেক কৃষ্ণা এন্ড বাবা কখন আসবে? আমার মা বললো - আমি এখন তোমার জন্য পায়েস রান্না করছি। ইভিনিং এর বাবাকে নিয়ে আসবে।
এরপর দুপুরে মাতাকে পাঁচ রকম ভাজা, মাছ, ডাল, চাটনি দিয়ে ভাত দিয়ে তার সাথে মিষ্টি পায়েস ও নানাবিধ খাদ্য সামগ্রী দিয়ে পরিবেশন করলো। সে খুশি হয়ে সবটা খেয়ে উঠে বললো - পায়েস ইস সো গুড কৃষ্ণা। মা ওর কথা শুনে হা হা করে হেসে উঠলো। এরপর সে বাবাকে ফোন করে আদুরে গলায় বলে - বাবা তুমি কি কেক ভুলে গেলে ইন দা ইভিনিং।
বিকেলে তার ঠাকুমা ও কাকিমা একটি চকলেট কেক নিয়ে এলো সে খুশি তাদের জড়িয়ে ধরে বললো - থ্যাংক ইউ ডিয়ার। কিন্তু তবুও সে তার বাবার অপেক্ষায় বসে আছে, ড্রয়িংরুম থেকে বেলুন দিয়ে সুন্দর করে সাজানো হলো।
এবার সমস্ত প্রতীক্ষার অবসান সন্ধ্যেবেলায়, তার বাবা একটি হার্ট শেপ পিংক কালার কেক নিয়ে এলো। এতে দোকানে লাল গোলাপ ও একটি ৬ সংখ্যায় লেখা মোমবাতি হ্যাঁ অবশ্যই তার নাম লেখা ছিলো কেকের ওপর। সে ও তার বোন পাশাপাশি বসে ফুঁ দিয়ে মোমবাতি খালি নিভিয়ে কেক টা কেটে ফেললো। আমরা সবাই মিলে তাকে একসাথে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানালাম ও তাকে অনেক অনেক আশীর্বাদ করলাম।
" হ্যাপি বার্থডে অহনা।"
---------------------------------
নাম - অঙ্কিতা পাল
ভাঙ্গড়, দক্ষিণ ২৪ পরগনা