ক্ষমা
মিঠুন মুখার্জী
অরিন্দমের কোনদিন কোন অরির পাল্লায় পরতে হয় নি। পরেছিল এক মেয়ের পাল্লায়। বাবার এক লতা মেয়ে। কোটিপতি বাপের মেয়ে মন দিয়েছিল এক টোটো চালককে। বাপ-মায়ের মেয়েকে নিয়ে প্রচুর স্বপ্ন ছিল। কিন্তু স্বপ্ন পূরণ হয়নি। উচ্চমাধ্যমিক দেওয়ার পর অরিন্দমকে একপ্রকার ব্ল্যাকমেল করে বিয়ে করে রিতিকা। বাবা সব রকম সম্পর্ক ছিন্ন করেছিল রিতিকার সঙ্গে। বুক ফেটে গেলেও মেয়ের সঙ্গে দেখা করেননি তারা। মা চোখের জল ফেলত আর ভগবানকে বলতো--- "আমার কপালেই এই ছিল রাধামাধব!! আমি আপনাকে এত মেনে আজ এই অবস্থা!!"
বছর দুয়েক পরে রিতিকার সৌভাগ্যের উদয় হয়। অরিন্দম ডব্লিউবিসিএস পরীক্ষায় পাশ করে বিডিও হন। অভাবের সংসার পাল্টে যায়। রিতিকার একটা মেয়ে হয়। নাম রাখে রনিতা। রনিতার দ্বিতীয় বছরের জন্মদিনে রিতিকার বাবা-মা তাদের বাড়িতে হঠাৎ আসে। তাদের দেখে রিতিকা কান্না করে দেয়। বাবা- মাকে দেখে জড়িয়ে ধরে সে। বাবা-মা তাকে বলে--- "আমাকে তোরা ক্ষমা করে দিস মা। তোদের এই কয়েক বছর খুব দুঃখ দিয়েছি। আমাদের ধারণা ভুল ছিল। টাকা মানুষকে সবসময় সুখ দিতে পারেনা। ভাগ্য যে চাকার মতো ঘরে---আমরা তো ভুলে গিয়েছিলাম। অরিন্দমের এই বিশাল উন্নতিতে আমরা খুবই খুশি। দিদিভাই ও তোর টানে আমাদের আসতেই হলো। আমরা বাবা-মায়েরা চাই সন্তান সুখী হোক। কিন্তু ভুল পথ বেছে ছিলি ভেবে আমরা কষ্টে তোর সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করেছিলাম। কিন্তু আজ দেখছি তুই খারাপ পথে পা রাখিস নি। আমাদের জামাই অসাধারণ প্রতিভার মানুষ। ওর সম্পর্কে আমরা পরে অনেক খবর নিয়েছি। সবাই ওর প্রশংসা করেছে। তোরা ভালো থাক, দীর্ঘজীবী হও।"
এরপর রনিতা ছুটে গিয়ে দাদুকে জড়িয়ে ধরে। রিতিকার বাবা কোলে তুলে নিয়ে আদর করে তাকে। এরপর কেক কাটে, প্রচুর মানুষের আগমনে জন্মদিন আলোকিত হয়ে ওঠে। রিতিকার স্বপ্ন পূরণ হয়। অরিন্দমের কাছে ক্ষমা চান তারা।
------------------------
মিঠুন মুখার্জী
C/O-- গোবিন্দ মুখার্জী
গ্ৰাম : নবজীবন পল্লী
পোস্ট+থানা -- গোবরডাঙা
জেলা -- উত্তর ২৪ পরগণা
পিন-- 743252
মোবাইল: 9614555989