হ্যাপি বার্থডে অস্মিতা
আমার জ্যেষ্ঠা কন্যা জন্মবার ঠিক তিন বছর পর আমার জীবনে এক উজ্জ্বল জ্যোতিষ্কের আবির্ভাব ঘটে। দিন টা ছিলো ২রা মার্চ ২০১৯। এবার আমরা তিনজন থেকে চারজন হই। এই উজ্জ্বলতম জ্যোতিষ্ক আর কেউই নয়, সে হলো আমার কনিষ্ঠা কন্যা অস্মিতা, যাকে ভালোবেসে বাড়িতে ডাকা হয় পেখম নামে। ছোটরাণীকে পেয়ে পেখম এর বাবা ও দিদি ভাই খুব আনন্দিত হয়। তার দিদি সব সময় বেবি বেবি করতে থাকে । যেদিন পেখম কে বাড়িতে আনা হয়, সেদিন তার দিদির রাতে ঘুম হয় না সে পাগলের মত ইতস্তত করতে থাকে গোটা রাত। আর আনন্দের সাথে বলে - বুনু কোথায় গেল।
এবছর পেখমের তিন বছরের জন্মদিন হলো। সে এখন আগের থেকে একটু বড় হয়েছে সবকিছু বুঝতে শিখেছে আর সব সময় তার দিদিকে অনুকরণ করতে থাকে। তার দিদি এবছর আবদার করে তার বাবাকে বলে - বাবা বাবা বেবির নিউ ড্রেস কোথায়? এবারেও বেবির বার্থডেতে দুটোকে কেক আনা চাই। সে তার কাকাকে ও আবদার করে বলে - তুমি চকলেট কেক আনবে, আর বাবা স্ট্রবেরি কেক আনবে? খুব মজা হবে ইভিনিং এ এন্ড ভেরি ফানি।
পেখম এর জন্মদিনের দুদিন আগে, তার দিদির ইচ্ছেই ও কথা অনুযায়ী আমরা চারজনে বাজারে গেলাম এরং একটি সুন্দর বাসন্তী রঙের ফ্রক তার জন্য কেনা হলো সেই সাথে কেনা হলো কিছু সাজার জিনিস ও বেলুন তো আছেই।
অবশেষে এলো সেই দিনটা, ২রা মার্চ। বড় মেয়ে তার পড়াশুনা শেষ করে সর্বক্ষণ আমাকে বলতে থাকে, তাড়াতাড়ি রান্না ক্লোজ করো বেবির বার্থডে হবে। আমি রান্না বান্না শেষ করে তাদের দুই বোনকে স্নান করিয়ে নতুন জামা পরিয়ে সুন্দর করে সাজিয়ে দিলাম তারপর সুন্দর করে দুটি কাঁসার থালায় সাত রকম ভাজা, ভাত, ডাল, ডিমের তরকারি ( যেহেতু পেখম দিন খেতে খুব ভালোবাসে), পাঁচ রকম মিষ্টি, পায়েস ও বাহারি খাবার দাবার তাদের সামনে গুঝিয়ে দিলাম। তারা খুব আনন্দের সঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করলো।
এভাবে সময় যে কখন পার হয়ে বিকেল হয়ে গেল বোঝা গেল না, বিকেলে আমি আর বড় মেয়ে বেলুন দিয়ে আমাদের ঘর ও ডাইনিং রুম টাকে সাজালাম তারপর একটি নতুন টেবিল ক্লথ টেবিলে পাতলাম। বড় মেয়ে ও ছোট মেয়ে ঘরের সৌন্দর্য দেখে দিশেহারা হয়ে লাফালাফি আরম্ভ করে দিলো এবং বাবাকে ও মামাকে ফোন করতে লাগলো। সন্ধ্যেবেলায় তার বাবা স্কুল থেকে ফিরে স্ট্রবেরি কেক ও মাংস
,মামা কলেজ থেকে ফেরার সময় মিষ্টি ও কাকা দোকান থেকে একটি সুন্দর চকোলেট কেক নিয়ে এলো এলো। দুটো কেকের ওপরে 3 লেখাদুটি মোমবাতি রাখা ছিলোদুই বোন মিলে আনন্দের সাথে কেক কাটলো। আমরা সবাই মিলে বলতে লাগলাম - হ্যাপি বার্থডে অস্মিতা। দুই বোনে মিলে আমাদের সবাইকে কেক খাইয়ে দিলো। এই ভাবেই সেই স্বর্ণালী সন্ধ্যা টুকুআমরা আনন্দের সাথে কাটালাম ও তারপর আমরা সবাই মিলে রাতে মাংস ভাত খাওয়া হলো।
----------------------------
ভাঙড় দক্ষিণ ২৪ পরগনা।