ছোটগল্প ।। টান ।। চন্দন চক্রবর্তী
নিভা দেবী রাতে শুতে এসে বিরক্তিতে ফেটে পড়লেন । স্বামী রজত এমন ভাবে তার জায়গা দখল করে শুয়েছে যে,আর বলার নয় । বুড়ো হয়েও এই বদ অভ্যাসটা গেল না ! এর সঙ্গে বিয়ে হয়ে জীবনটা তার বৃথাই গেল !
সারা জীবন তিনি ব্রত,শিবরাত্রি করে এসেছেন । ভোলানাথকে তিনি খুব মানেন । অথচ তার কপালটা এতো মন্দ হল কেন !
কোন রকমে শরীরটাকে গলিয়ে দিলেন ।
বিয়ের পরপর তাদের দিনগুলো ভালই কেটেছে । কোথায় না বেড়াতে গেছেন ।নদী,পাহাড়,সমুদ্র কিছুই বাদ যায় নি । গয়না গাটি,শাড়ি,তাও তো কম পান নি ! তবে এমন বিরক্তি আসে কোথা থেকে !
জীবনে পাওয়ার দিকের পাল্লাটাই তো ভারী !
আগে অফিস থেকে বাড়ি এসে রজত তার সঙ্গেই কাটাতো । ধীরে ধীরে সেটা বন্ধ হয়ে,রজত বাইরে আড্ডায় কাটিয়ে, রাত করে বাড়ি ফিরতো । এখন বাইরে আর যায় না । বন্ধু বান্ধব আসে । ঘরে বসেই তাস পেটায় ।
আর তিনি কি করেছেন !
তিনি আগে পাশের বাড়ি,কিংবা নিজের বাড়ি বসে,পাড়ার মহিলাদের সঙ্গে কাটিয়েছেন । এখন টিভি দেখাটা বেড়েছে । একটু আধটু সেলাই করেন ।
তাহলে দোষটা কাকে দেওয়া যায় !
কখন সাত পাঁচ ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন ।
ঘুমের মধ্যে ভোলানাথ এসে হাজির ।
নিভা দেবী স্পষ্ট শুনতে পেলেন বাবা যেন বলছেন,ওরে দাঁত থাকতে কেউ দাঁতের মর্ম বোঝে না । এখন যদি লোকটা _ ___ ।
কথাটা সম্পূর্ন না হতেই,চমকে উঠে রজতের দিকে তাকালেন । অসাড়ে ঘুমোচ্ছে মানুষটা ।
ফ্যান চলছে; তাতেও গরমে ঘামিয়ে গেছে ! মায়া হল । ভিতরে কেমন টান অনুভব করলে।
তাড়াতাড়ি শাড়ির আঁচলে,গা,মুখটা মুছে দিলেন ।
--------------------