মধুর ভুল
প্রতীক মিত্র
ভ্যাপসা গরম। বৃষ্টি হওয়ার কোনো সম্ভাবনাই নেই। খটখটে রোদ।ঘেমেটেমে নাজেহাল অবস্থা।পিকলুর বেরোনোরও তেমন মাথাব্যথা ছিল না।লকডাউনের পর থেকে বাড়িতে বসেই কাজ।সারা রাত কমপিউটারে বসে বসে কোমর আর চোখের কিছু আর অবশিষ্ট নেই।ওর মা বলে বলেও তাকে ঘুমোতে আর পাঠাতে পারে না।সকালে দেরি করে ওঠে।বাজার-টাজার করে।বিকেলে এক একদিন ভাবে মাঠে যাবে।খেলবে।কিন্তু যাওয়া আর হয়ে ওঠে না।কোনো না কোনো কল কোনো না কোনো মিটিং লেগেই থাকে।আজকে বেলায় চাপ কমই ছিল।সেইজন্যই ও আরো বেরিয়েছিল।ওর বাইকের কিছু পার্টস কেনার ছিল।বাড়ি থেকে মিনিট পনের।বাইকেই গিয়েছিল।দোকানগুলো হাইওয়ের দু'পাশে।সেখানে পৌঁছে ওর মনে পড়লো ফোনটা আনা হয়নি।প্রথমে বেজায় বিরক্ত হল এই ভেবে যে জিনিসটা কিনলে পেমেন্ট করতে পারবে না।অবশ্য শেষমেশ পছন্দের জিনিসটা না মেলায় কেনাকাটা হয় না।মিষ্টির দোকান থেকে কিছু মিষ্টি খেয়ে আর মায়ের জন্য নেওয়ার সময় বৃষ্টি নামলো।ঝেঁপে।কি ধড়িবাজ মাইরি!কয়েক মুহুর্ত আগেও তার কোনো সম্ভাবনা ছিল না।হাইওয়ের এক ধার দিয়ে টুকটুক করে বৃষ্টিতে ভিজে গাড়ি চালাতে ওর মন্দ লাগছিল না।হাইওয়ে থেকে শহরের রাস্তায় ঢুকে পড়লো কয়েক মিনিটে।সেখানে রাস্তার দু'ধারে দোকান, শেড, গাছের নিচে লোকজনদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ওর বেশ লাগলো।হঠাৎ বৃষ্টিতে সবাই অপ্রস্তুতে।গরমে কাহিল দশা।ইচ্ছে থাকলে তবু যেন ভিজতে পারছে না।সঙ্গে ছাতা নেই বা দামী জিনিসপত্র ভিজে যাবে বলে…সেটার থেকেও বড় কারণ ও আবিষ্কার করলো।আর সেটা হল ওদের কাছে ফোন আছে আর ওর কাছে নেই।ফলে ও নিশ্চিন্তে ভিজতে পারলেও ওরা পারছিলো না।এটা ভেবে ওর এত ভালো লাগছিল যে ও ওর বাইকের গতি আরো কমিয়েই দিলো না বাড়ির রাস্তায় ঢুকলো আরো ঘুরপথে।ভাগ্যিস ফোনটা আনেনি!বৃষ্টির সাথে নইলে ওর এমন আলাপচারিতা সম্ভব ছিল না।আবার কবে এমন ও ফোন আনতে ভুলে যাবে? আবার কবে এমন আচমকা বৃষ্টি হবে?
===================
প্রতীক মিত্র
কোন্নগর-712235, পশ্চিমবঙ্গ
ফোন: 8902418417