জ্বলন্ত আগুন
প্রদীপ দে
উদ্দাম নৃত্য পটীয়সী লাবেলা।
হোটে বারে নাচে। পারিশ্রমিক যা পায় তার বেশিরভাগ ব্যয়িত হয় তার রূপচর্চায়। রূপবতী নয় সে, কিন্তু যৌনউত্তেজক চেহারার অধিকারিণী সে।
যত নাচে তার বেশি নাচায়। কামের আগুনে জ্বালিয়ে দেয় খরিদ্দারের শরীরে। কেল্লা ফতে। মালিক হোটেল আর বার চালিয়ে মুনাফা লোঠে।
লাবেলার কদর বাড়ে। টাকার বান্ডিল উড়ে এসে পড়ে তার পায়। আর ঘনিষ্ঠজনেরা তার বুকে গুঁজে দেয়, তাকে বিছানায় নেওয়ার অগ্রিমে। ওগুলো সব লাবেলার। সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত তার কাজ। আর ইচ্ছে হলে খরিদ্দার পছন্দ হলে সারারাত। তার কাছে দেহ বিক্রি এক আনন্দের এক নেশার এক রোজগারের।
ছোটবেলায় বাবা শিক্ষা দিতেন,
-- সারা জীবন ধরে নিজের অর্জিত জ্ঞান দিয়ে সমাজে অন্ধকার দূর করে শিক্ষার উজ্জ্বল আলো জ্বালাবি।
ছোট মেয়ে সেই পথ ধরে এগিয়ে ছিল অনেক পথ।
ঠিক যখন শরীরে কিছু প্রাকৃতিক সৌন্দর্য প্রস্ফুটিত হল। সে দেখেছিল প্রথমেই তার বুকের দিকেই সকলের দৃষ্টি গিয়ে থামে।
প্রেম এল। দুবছরেই মালুম হল প্রেমিক তাকে প্রেমের সাথে সাথে ব্যবহারও করে নিয়েছে। প্রথমটা মুগ্ধতা। পরে প্রেমিকের নির্লজ্জতায় সে অবাক হয়ে গেল। পালাতে গিয়ে রুজির পথ খুঁজতেই সুন্দর শরীরের গন্ধে মিডিয়ায় সুযোগ পেয়ে গেল সে। তরতরিয়ে উঠলো তার প্রমোশন সঙ্গে সঙ্গে খোয়াতে হল ইজ্জত।
প্রডাকশন অফিসারের কথায়,
-- এতেই তো জীবন আলোকিত হবে এই রঙিন মিডিরার দৌলতে। এক থেকে একাধিক প্ল্যাটফর্ম তোমাকে তোমার জায়গা করে দেবে।
লোভে আর উজ্জ্বল আলোর হাতছানি উপেক্ষা করে উঠতে পারেনি লাভেলা। জীবন তো একটাই একবারই, সুতরাং অতো বাছবিচারে না গিয়ে পা বাড়িয়ে দিয়েছিল সে।
ফেরার পথ নেই …
এই লাইনে উজ্জ্বল আলো তাকে পথ দেখাচ্ছে তাই সে সেই পথেই হেঁটেছে।
কিন্তু সেই উত্তেজক শরীরের জ্বলিত আলো যখন কিছুটা নিস্প্রভ হয়ে এল তখনই সে দেখলো, আরো আরো নতুন লাবেলারা তাদের সুন্দর শরীরের ডালির আলো জ্বালিয়ে তাকে টেক্কা দিয়ে ফেলেছে।
বিকল্প রাস্তা তাকে তাই বাছতেই হয়েছে, বাঁচার লড়াইয়ের ময়দানে টিকে থাকার জন্যই …
=============
প্রদীপ কুমার দে
বিরাটী আবাসন
এল আই জি -৯
এম বি রোড
নিমতা