Click the image to explore all Offers

অণুগল্প ।। ভদ্রলোক ।। চিত্তরঞ্জন গিরি


 
ভদ্রলোক
চিত্তরঞ্জন গিরি
 
 
বড়লোক বাবার একটি মাত্র মেয়ে মিতা। বাংলা সাহিত্যে পিএইচডি।সুন্দরীও বটে। হাওড়ার একটি কলেজে অধ্যাপনা করেন। বিয়ের বয়স হয়েছে মা-বাবার তাড়া। অনেক ভালো ভালো পাত্র ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার সম্বন্ধ নিয়ে আসে। তাতেও মেয়ের" না"।একদিন বিরক্ত হয়েই মা-বাবা বলে তুই যাকে পছন্দ করিস তাকেই বিয়ে কর। মিতা বলে --আমি যাকে বিয়ে করব তাকে একটু বাজিয়েই নেব। তাতেই বাবা-মা সায় দেয়। অনেক ছেলের অফার থেকে একটা ছেলেকে বেছে নেয়। হিরন ছেলেটা খারাপ নয়। ব্যবহারটা খুব ভালো। নাই নাই করে প্রায় দেড় বছর মেলামেশা হলো। ভিক্টোরিয়া ঘুরতে গেলে গরিব-দুঃখীদের সাহায্য করে। মানবিকতাবোধ খুব ভালো। মনে মনে ঠিক করে নেই স্বামী হিসেবে গ্রহণ করবে।
একদিন বিকেল বেলায় C5 বাস ধরে উভয়ই নন্দনে সিনেমা দেখতে যায়। 3 সিটের আসনে জানালার পাশে মিতা। তারপর হিরণ। পরের সিটটা ফাঁকা। দুজন বেশ গল্প মত্ত। হীরণ বলে যায়--গতকাল 30হাজার টাকা দিয়ে সোনারপুর রেল বস্তিতে আমি নিজের হাতে খাবার বিলি করেছি। আমি মানুষকে ভালোবাসি বলেই তো অন্যের ওপর ভরসা না করে নিজে নিজেই বিলিয়েছি। কথাটা শুনে খুশিতে মিতার মনটা ভরে গেল। এরই ফাঁকে যাদবপুর আসে। হিরনের পাশের ফাঁকা সিটে এক বৃদ্ধ বসল। পরনের পোশাক ছেঁড়া কুচকুচে কিন্তু পরিষ্কার। মি তা দেখে লোকটি বসার পর হিরনের চোখে মুখে যেন বিরক্তির ভাব। গল্প করে তার দিকে মনোযোগ করার চেষ্টা করছে। কিন্তু বারবার চেয়েওব্যর্থ। অন্যমনস্ক এবং বিরক্তি ভাব। গরিব লোকটি ছেঁড়া পোশাকে বসে আছে বলে ওর মান সম্মান চলে যাচ্ছে ? দশ পনের মিনিট কেটে যাওয়ার পর হঠাৎ হিরন লোকটিকে প্রায় ঠেলা মেরে ফেলে দিল। মিতা অবাক হয়ে বলে -একি করলে ? লোকটি বহুকষ্টে ওঠে। বলে--কোথায় কি বলতে হয় আমি জানি। আমরা গরিব হতে পারি। জানি আমাকে দেখে আপনি বিরক্ত হয়েছেন।আপনার বান্ধবীর সামনে"তিন মাস খাটিয়ে নিয়ে আপনি পয়সা দেন নি "এই কথাটা আমি বলতাম না।
================== 

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.