আমাদের পরিবেশ আমাদের আশ্রয়
হারান চন্দ্র মিস্ত্রী
আমরা যেকোন জীব পৃথিবীর যে প্রান্তে বাস করি না কেন, আমরা একটি পরিবেশের মধ্যে ডুবে থাকি। মাছ জলের মধ্যে ডুবে থাকে। সেই জলজ পরিবেশ থেকে সে বাঁচার যাবতীয় উপকরণ পায়। পাখির বসবাসের জন্য চাই বন-জঙ্গল, গাছপালা। গাছপালা না থাকলে খাদ্য ও বাসস্থান পাবে না। আর চাই তার ওড়ার মতো খোলামেলা আকাশ ও বাতাস। বাতাসে ভর করে পাখি মনের আনন্দে ওড়ে, আবার সে খাবারের সন্ধানে যাত্রা করতে পারে। সাপ মূলত গর্তেই আশ্রয় নেয়। যে সাপ যত বেশি সময় গর্তে কাটায়, সে তত বেশি অন্ধকারে চলতে সক্ষম। রাতের অন্ধকারে তারা খাদ্যের সন্ধানে বেরিয়ে আসে গর্তের ভিতর থেকে। ঠিক পেঁচা যেমন করে রাতে আহারের সন্ধানে বের হয়।
মানুষ উন্নত জীব। সেও পরিবেশের বাইরে থাকে না। তার পরিবেশও বিচিত্র। সে যেখানে বসবাস করে, সেই পরিবেশ নিজের মতো করে গড়ে নেয়। বন্য জীবন যাত্রায় মানুষ গর্ত বা গুহবাসী ছিল। কখনও গাছের উপর কিংবা পাহাড়ের ঢালে শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা যখন যেভাবে পেরেছে সেভাবে থেকেছে। মানুষের মন ছিল। সে ভেবেছে। বুদ্ধি ছিল সে কাজে লাগিয়েছে। এভাবে ভাবনা ও বুদ্ধির প্রসারে প্রাকৃতিক পরিবেশে বেঁচে থাকার উপযুক্ত আশ্রয় তৈরি করে নিয়েছে। মানুষের সংখ্যা বেড়েছে, মনুষের প্রয়োজন বেড়েছে, পরিবেশের কৃত্রিমতা বেড়েছে, প্রাকৃতিক পরিবেশ হ্রাস পেয়েছে। গোলাকার পৃথিবীতে সমভুমি, মালভূমি, পাহাড়-পর্বত, তুষারাবৃত এলাকায় মানুষ ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে স্থানীয় প্রযুক্তিগত কৌশল ব্যবহার করে বসবাসের উপযোগী করে নিয়েছে নিজেদের পরিবেশ।
নদী এলাকায় ঝড়ের প্রকোপ বেশী। সেখানে আজও মাটির ঘর বেশি। ঘরগুলি নিচু কুঁজিঘরের মতো। অথচ, এই সব এলাকায় বন্যার সম্ভবনা অনেক বেশী। ঘরগুলির ভিতরে মাথা হেঁট করে ঢুকতে হয়। কারণ, ঝড়ের প্রকোপে উঁচু ঘরে ক্ষতির সম্ভবনা বেড়ে যায়। তাই, ঘরের চাল ঢাল করে নিচের দিকে নামিয়ে আনা হয়।
যে উপজাতি যেভাবেই তার পরিবেশ গড়ে তুলুক, আজ তারা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সঙ্কটে ভুগছে। মনে রাখতে হবে, যতই কৃত্রিম পরিবেশ তৈরী করি না কেন, তা ভূ-জগতের মধ্যে অবস্থিত। ভূ-জগতের পরিবেশের মধ্যে কৃত্রিম পরিবেশের অবস্থান। কৃত্রিম পরিবেশের প্রয়োজনীয় ও অপ্রয়োজনীয় পরিবর্তন ভুজগতের কাঠামো বদলে দেয়। সেই পরিবর্তন মাত্রাতিরিক্ত হলে কৃত্রিম পরিবেশের আওতায় চলে আসবে প্রাকৃতিক পরিবেশ। সেই পরিবেশ বর্তমান বাস্তুতন্ত্রে বেঁচে থাকা জীব শুধু অস্তিত্বের সঙ্কটে পড়বে না, বিলুপ্ত হবে। সভ্যতার সঙ্কট দেখা দেবে।
প্রাকৃতিক পরিবেশ কৃত্রিম পরিবেশের মধ্যে ডুবে গেলে পৃথিবী বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পরবে। পৃথিবীর পরিবেশ যথাযথ প্রাকৃতিক অবস্থায় রাখার বুদ্ধি ও ক্ষমতা মানুষ ছাড়া অন্য কোনো জীবের নেই। পৃথিবীতে জীবের অস্তিত্ব বাজায় রাখতে এবং ধ্বংসের হাত থেকে পৃথিবীকে বাঁচাতে একমাত্র দায়িত্ব নিতে পারে প্রকৃতির সর্বোন্নত জীব মানুষ। সেই মানুষই পরিবেশ ধ্বংসের প্রাধান কারণ।
প্রাকৃতিক কারণে চলমান বাস্তুতন্ত্র বদলে যেতে পারে। দাবানল বন পুড়িয়ে জীবজন্তু, গাছপালার সমূহ ক্ষতি করে। নদীর ভাঙনে নদীতীরের গাছপালা,বাড়িঘর, জমিজমা নদীগর্ভে চলে যায়। কোথাও নদী মজে গিয়ে বিস্তীর্ন সমভুমি গড়ে ওঠে। অনাবৃষ্টিতে শ্যামলভূমি মরুভূমি হয়ে যায়। ভূগর্ভস্থ পলিপাতের চলনে পাহাড়-পর্বত তৈরি হয়, তৈরি হয় গ্রস্থ উপত্যকা। প্রাকৃতিক কারণে এভাবে এক পরিবেশ অপর একটি পরিবেশে রূপান্তরিত হয়। একমাত্র মরুভূমি ছাড়া অন্য ভূমিরূপগুলিতে প্রকৃতিগতভাবে বাস্তুতন্ত্রের পরিবর্তন ঘটলেও পরিবেশের বৃহদায়তন ক্ষতি হয় না।
উন্নত সভ্যতা সৃষ্টির লক্ষ্যে নিত্যনতুন গবেষণা চলছে। নতুন নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবন হচ্ছে। মানুষ কায়িক পরিশ্রম ছেড়ে যন্ত্রনির্ভর হয়ে পড়ছে। তাতে সভ্যতার গতি অনেকগুন বেড়ে গিয়েছে। মানুষের কল্যাণে বিজ্ঞান ও প্রযুতিগত কৌশল ব্যবহার করা হচ্ছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নতিতে মুমূর্ষু মনুষের জীবন রক্ষা হচ্ছে।
সভ্যতার উন্নতি মনুষের উন্নতি, মনুষের জীবনযাত্রার উন্নতি। সেই উন্নতি করতে গিয়ে মানুষ প্রয়োজনীয় ক্ষতি করে বসছে পরিবেশের। খুব স্বাভাবিকভাবে বৃক্ষলতা কেটেকুটে জায়গা ফাঁকা করা হচ্ছে। জলাজমি, পুকুর, খাল, বিল এমনকি নদীর চর মাটি দিয়ে ভরাট করে গড়ে তোলা হচ্ছে বসতবাটি ও বাণিজ্যকেন্দ্র। তৈরি হচ্ছে বহুতল বাড়ি ও কলকারখানা। হাজার হাজার হেক্টর জঙ্গল কেটে প্রথমে চাষযোগ্য জমি তৈরি করা হচ্ছে। পরে তাকে বাণিজ্যের কাজে লাগানো হচ্ছে। এখন ব্যবসায়িক প্রয়োজনে নদীর চর ও জল গিলে ফেলছে ব্যবসায়ীরা। ভূগর্ভস্থ জলও নিস্তার পাচ্ছে না তাদের হাত থেকে। এগুলো মানুষের প্রয়োজনে করতে হচ্ছে। তাতে প্রাকৃতিক জীব বৈচিত্র্যের আমূল পরিবর্তন ঘটে যাচ্ছে।
গাছ না থাকলে পাখিরা থাকবে কোথায়? জঙ্গলের গছগাছালিতে শুধু যে পাখি থাকে তা নয়। পিঁপড়ে, নানা প্রকার পতঙ্গ, কাঠবিড়ালী ও বাদুড় গাছে বাস করে। বাঘ, সিংহ,হরিণ, হাতি,শিয়াল, বানর, বনবিড়াল প্রভৃতি জন্তু জানোয়ারে প্রাধান আশ্রয়স্থল হলো বন। বনবাসী মানুষেরা নানাভাবে বনের উপর নির্ভরশীল। বনের ফলমূল, বুনের সব্জি, বন্য প্রাণীর মাংস খেয়ে জীবন ধারণ করে। বন বিলুপ্ত হলে কীটাদি বন্য প্রাণী ও বনবাসী মানুষের খাদ্য ও বাসস্থান চিরতরে নির্মূল হয়ে যাবে। বনবাসী মানুষকে বেরিয়ে পড়তে হবে নতুন পেশার সন্ধানে। কিন্তু জীবজন্তু, কীটপতঙ্গ, পশু ও পাখি কোথায় যাবে? নতুন পরিবেশে তাদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে কিনা সান্দেহ।
শহর সংলগ্ন এলাকায় মানুষ শহুরে ভাবধারা অনুকরণ করতে ব্যস্ত। আবার শহরের ব্যবসায়ীরা নজর দিচ্ছে শহরের উপকণ্ঠের জমিজমা ও বসতবাটির দিকে। জলাজমি, পুকুর, পৈতৃক বসতবাটি তুলে দেওয়া হচ্ছে বিনিয়োগকারীদের হাতে। সেখানকার মানুষ জমির দাম অপেক্ষা অনেকগুন মূল্য পাওয়ায় নির্দিধায় ছেড়ে দিচ্ছে পৈতৃক ভদ্রাসন।
স্কুল ছাত্র-ছাত্রীরাও জানে উদ্ভিদ কমে গেলে পরিবেশে অক্সিজেন কমে যায় ও কার্বন-ডাই-অক্সাইড বেড়ে যায়। অক্সিজেনের অভাবজনিত কারণে জীবকুল মূলত শ্বাসের রোগে ভুগছে। কার্বন-ডাই-আক্সাইড গ্যাস দূষিত গ্যাস নামে শিক্ষার্থীদের কাছে পরিচিত যা শ্বাস গ্রহণের পক্ষে অন্তরায়। তাছাড়া, এর একটা বড় অগুন রয়েছে। কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাসের তাপ শোষণ ও ধারণ ক্ষমতা প্রবল। এই গ্যাস একবার তাপ গ্রহণ করলে তা একটু একটু করে ছেড়ে দিতে সময় নেয় প্রায় দশ বছর। তাই, এই গ্যাস গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের একটি উত্তম উপকরণ। পৃথিবীতে কার্বন-ডাই-অক্সাইড যত বৃদ্ধি পাবে বিশ্ব উষ্ণায়ন তত ত্বরান্বিত হবে।
পৃথিবীর বুকে যে পরিমাণ কলকারখানা তৈরি হয়েছে, তাতে যে পরিমাণ বর্জ্য পদার্থ উৎপন্ন হয় পৃথিবীর পরিবেশ বিপন্ন করার পক্ষে সেটুকুই যথেষ্ট। জনবহুল এলাকায় যত মানুষ শ্বাসকষ্টসহ একাধিক মারণ রোগে ভোগে, শিল্পতালুক এলাকায় তার থেকে বেশি মানুষ মারণ রোগে আক্রান্ত হয়। শহর ও শিল্পতালুক এলাকার দূষিত বায়ু ব্যাপন প্রক্রিয়ায় এবং ঝড়ের প্রভাবে পৃথিবীর সর্বত্র পৌঁছে যাচ্ছে। একজন ব্যক্তি ধুমপান করেন না। তিনি যদি ধুমপানরত ব্যক্তিদের সঙ্গে থাকেন তবে তার পরোক্ষ ধুমপান হয়ে যায়। তেমনি যারা মুনাফা লুটছে আর হাজার হাজার টন বর্জ্যপদার্থ পৃথিবীকে উপহার দিচ্ছে শুধু তারা ভুগবে না। এই বর্জ্য গোটা পৃথিবীকে দূষিত করছে। তার প্রভাবে সমগ্র পৃথিবীর মানুষ ও অন্যান্য জীব মৃত্যুর আমন্ত্রণ পাচ্ছে।
১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ বিজ্ঞানী অ্যানগুস স্মিথ প্রথম অম্লবৃষ্টির ধারণা দেন। এই প্রখ্যাত রসায়নবিদ বোঝাতে সক্ষম হন- সীসা, দস্তা, তামা নিষ্কাশনের সময় রাসায়নিক বর্জ্য বাতাসে মেশে। শিল্পাঞ্চলে সালফার, কার্বন, নাইট্রোজেনের অক্সাইড বাতাসে মিশে যায়। ধুলো, কুয়াশা, শিশির প্রভৃতির সঙ্গে অক্সাইডগুলি অধক্ষিপ্ত অবস্থায় থাকে। বৃষ্টির সময় এই আক্সাইডগুলি জলের সঙ্গে আলোক রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অ্যাসিড বা অম্ল উৎপন্ন করে। ওই অ্যাসিড জলের সঙ্গে মিশে ঝরে পড়ে। এটাই অ্যাসিড বা অম্লবৃষ্টি।
অম্লবৃষ্টির বিস্তর কুফল রয়েছে। মাটির অম্লত্ব বৃদ্ধি পায। মাটি উর্বরা শক্তি হারিয়ে ফেলে উষর হয়। পুকুর, খাল, বিল, দিঘির জলজ প্রাণী ও উদ্ভিদ মৃত্যুবরণ করে। বন্য পশু-পাখি খতম হয়ে যায়। জানা গিয়েছে ভারতের ভরতপুরের পাখিরালয়ের হ্রদে অম্লবৃষ্টি হয়। তাতে হ্রদের জলের অম্লত্ব বেড়ে গিয়েছিল। তার প্রভাবে অসংখ্য পরিযায়ী পাখি প্রাণ হারিয়েছে। বনের গাছপালার উপর এর ক্ষতিকারক প্রভাব রয়েছে। গাছের পাতা পুড়ে যায়, কুঁকড়ে যায়। গাছের বীজ ও বীজের অঙ্কুর নষ্ট হয়ে যায়। মানুষের উপর অম্লবৃষ্টি হলে তাদের ত্বক ও চুলের ক্ষতি হয়। পাথরের তৈরি স্মৃতি সৌধ, মূর্তি, ফলক গলে গিয়ে দাগ ও ক্ষতযুক্ত হয়ে যায়। কারণ এই অম্ল বৃষ্টিতে সালফিউরিক অ্যাসিড ও নাইট্রিক অ্যাসিদের মাত্রা বেশি থাকে। শিল্পাঞ্চলের বর্জ্য ও পেট্রাল-ডিজেল চালিত গাড়ির ধোঁয়া নিত্য পরিবেশ দূষিত করছে। এই গতিশীল প্রক্রিয়াগুলির মাধ্যমে দিনের পর দিন কৃত্রিম পরিবেশের পরিধি বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং প্রাকৃতিক পরিবেশের পরিধি হ্রাস পাচ্ছে। এবার প্রাকৃতিক পরিবেশ কৃত্রিম পরিবেশের অন্তর্ভুক্ত হলে পৃথিবীর সম্পূর্ণ আদল বদলে যাবে।
পৃথিবীর তাপমাত্রা যত বৃদ্ধি পাচ্ছে নিত্য নতুন রোগের দর্শন মিলছে। ভূপৃষ্ট, মেরুপৃষ্ঠ, পর্বতশীর্ষ, নদী ও বনের চরিত্র বদলে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে মরুভূমিগুলি প্রসারিত হতে শুরু করেছে। আবার, আশ্চর্যজনকভাবে কিছু কিছু মরুভূমিতে উদ্ভিদ দেখা দিচ্ছে। ২০২০ খ্রিস্টাব্দের অক্টোবর মাসে পশ্চিম আফ্রিকার সাহারা মরুভূমিতে ১৮০ কোটি গাছের সন্ধান পাওয়া গেছে। তপ্ত বালির তলায় হঠাৎ করে এতো গাছ জন্মানো এক আশ্চর্য ঘটনা।
বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাবে পর্বতশীর্ষের বরফ গলতে শুরু করেছে। কোথাও বরফের ধ্বস নেমেছে। ভারতের উত্তরাখণ্ডে এই ঘটনা ঘটেছে। হিমালয়ের হিন্দুকুশ পর্বত এলাকায় বরফ গলে জলের পরিমাণ বেড়ে গিয়েছে। স্থানীয় হ্রদ্গুলির পরিধি বেড়ে যাচ্ছে। এমনকি সেখানে নতুন নতুন হ্রদ তৈরি হচ্ছে। ক্রমশ বরফগলা জল সাগর ও নদীর জলের উচ্চতা বাড়িয়ে দেবে। সুতরাং প্লাবন আসন্ন। অনেক শহর ও নগর আগামী দিনে ডুবে যাবে জলের তলায়।
মানুষ অহঙ্কার ও মর্যাদাভোগে আসক্ত। এই ঠুনকো মর্যাদাবোধ ও অহঙ্কারে সামান্য আঘাত লাগলে সে বিষধর সর্পের মতো ফণা তোলে। এমনকি ক্ষমতাহীনের উপর আক্রমণ করে নিজের শক্তি জাহির করে। উন্নয়নশীল দেশগুলির মধ্যে এধরনের প্রবণতা প্রবল। তবে তারা প্রচ্ছন্ন বিবাদ করে নিজেদের মধ্যে। তারা বেশি আক্রমণ করে যাদের গায়ে রক্ত নেই তাদের উপর। এই লড়াইয়ের মাশুল তাদেরও দিতে হবে।
আক্রমণ যেখানেই হোক সেটা আমাদের বাসস্থান পৃথিবীর উপর। বোম পড়ছে। মিসাইল নিক্ষিপ্ত হচ্ছে। যুদ্ধ জাহাজ ছুটছে। মানুষের স্বাভাবিক প্রয়োজনে যে পরিমাণ পরিবেশ দূষিত হয়, যুদ্ধে দূষিত হয় তার হাজার গুন। শিক্ষিত রাষ্ট্র নায়করা পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে চিন্তিত। অথচ সেই বোধ্যারা পরিবেশকে কৃষ্ণগহ্বরে ঠেলে দিছে।
আগামী দিনে আমাদের পৃথিবী প্রাকৃতিক পরিবেশের খোলস ছেড়ে কৃত্রিম পরিবেশের মধ্যে ঢুকে পড়বে। বহু জীব মারা যাবে, যাদের অস্তিত্ব থাকবে না পৃথিবীতে। আবার এমন কোনো জীব জন্ম নেবে যারা মানবজাতির বন্ধু নয়। তখন মনুষের যথাযথ বাসযোগ্য হয়ে থাকবে না সাধের এই পৃথিবী।
বায়ুমণ্ডলে ডুবে থাকা পৃথিবীর পরিবেশ একটি নির্দিষ্ট নিয়মে চলে। পৃথিবীর পরিবেশ প্রাকৃতিক নিয়মে সাম্যাবস্থা বাজায় রাখতে চায়। সেজন্য পৃথিবীতে একটি বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটবে। অনেক প্রাণী ও উদ্ভিদ চিরতরে বিদায় নেবে। অনেক নতুন জীবের জন্ম হবে। সূর্য যতদিন বেঁচে থাকবে এই সাম্যাবস্থা ততদিন চলাই স্বাভাবিক। তবে সূর্যের ক্রমবর্ধমান তাপ পৃথিবীর সহ্যের সীমার মধ্যে থাকলে ও পৃথিবীর অভিকর্ষজ ক্ষমতা হারিয়ে না গেলে বহু বছর পরে পৃথিবী তার নিজের পরিবেশ নিজের মতো করে গুছিয়ে নেবে।
======================
হারান চন্দ্র মিস্ত্রী
গ্রাম ও পো- আমতলা,
থানা-ক্যানিং,
জেলা-দক্ষিণ ২৪ পরগনা,
পশ্চিমবঙ্গ, ভারতবর্ষ,
পিন নং-743337