এই সময়ের মুক্ত একটি ভাবনা
শুভাশিস দাশ
পাশের বাড়ির টুসি গত রাতে আত্মহননের পথ বেছে নিতে যাচ্ছিল ভাগ্যের জোড়ে বেঁচে গেছে সকাল বেলা পাড়ার মোড়ে মোড়ে জোড় আলোচনা চলছে, দেখো গিয়ে কী হয়েছিল....
এই ছবিটি এখন যত্রতত্র ।না, টুসি একা নয় হাজার টুসি হাজার পাপাই আজ হতাশার শিকার ।একাকীত্ব ওদের গ্রাস করেছে । এর জন্য দায়ী কে? এটার উত্তর খুঁজতে খুব বেগ পেতে হবেনা । একটু পিছন ফিরে দেখা যাক ।একটা সময় আমাদের সমাজে একান্নবর্তী পরিবার ছিল ।ছিল কাকা জ্যাঠা জ্যেঠি পিসি মাসী মামা । ভাইবোন ছিল একাধিক, ফলে একটা নিবিড় ভালবাসার মেলবন্ধন ছিল ।একাকীত্ব কখনো কাউকেই গ্রাস করতো না।
এখন নিউক্লিয়াস পরিবার ।নেই দাদু নেই দিদা।নেই মাসী নেই পিসি ।সবাই একা ।
বাবা মা কাজের তাগিদে বাইরে ।শৈশব বাড়িতে একা । বড় জোড় কাজের বুয়া ।
স্কুল পড়াশুনা গান নাচ আর্ট সব শিখতে হবে ।
একটা ছোট্ট শিশু কতটা নিতে পারবে সেদিকে না ভেবে প্রতীযোগীতার জন্য তাকে সারাদিন রেসের ঘোড়ার মতো ছুটতে হয় ।
না আছে মন খুলে কথা বলার মতো দুটো মানুষ না আছে খেলার সাথী ।
এ এক বীভৎস সময়ে আমরা উপনীত ।
বাবা মাকে কাছে পাবার একটা সহজাত চাহিদা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে আজকের শৈশব ফলে ছোটবেলা থেকেই তাকে হতাশার দৈত্য তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে ।
চার দেয়ালের গ্রীল ঘেরা বন্দী শৈশব তাই একলসেরে হয়ে যাচ্ছে ।মন থেকে উবে যাচ্ছে ভালবাসা নামক নরম শব্দটি ।
আমরা একটুকুও ভাবছি না ।
আসুন আমরা একটু ভাবি নতুন কুঁড়িদের নিয়ে যারা আগামীতে ফুল হয়ে ফুটে গন্ধ ছড়িয়ে দেবে ।একটু সময় দিই, একটু সংগ দিই যাতে ওদের মানসিক বিকাশে কোন প্রতিবন্ধকতা
তৈরি না হয় ।শৈশব বেড়ে উঠুক স্নেহ ভালবাসার লালিত্যে.....।
চিত্রঋন- ইন্টারনেট।
====================
শুভাশিস দাশ
দিনহাটা