Click the image to explore all Offers

মুক্তগদ্য ।। সড়ক দুর্ঘটনা ।। অঙ্কিতা পাল (বিশ্বাস)

 
 

 সড়ক দুর্ঘটনা  

(সত্য ঘটনা অবলম্বনে লেখা)

অঙ্কিতা পাল (বিশ্বাস) 

 
সেদিন ছিল ১৪ই জুলাই সোমবার, সারাদিন অঝোরে বৃষ্টি প্রকৃতি যেন গুরুগম্ভীর।
সেই ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠে, শরীরটাও যেন কেমন ক্লান্ত বালিশে মাথা দিতেই দুচোখে ঘুম এসে গেলো হঠাৎই চোখ মেলে দেখি ১২ টা ১৫; উঠে তড়িঘড়ি , মধ্যাহ্ন ভোজন সেরে মেয়েদুটোকে স্কুল থেকে নিয়ে বাড়ি ফেরার পালা। বাড়ি থেকে স্কুলের দূরত্ব প্রায় ১০ কিলোমিটার। প্রতিদিনের মতোই সেদিনও আমি নিজের গন্তব্যে গিয়েছিলাম......................................................... 
প্রতিদিনের নিয়ম মেনেই দুপুর দুটোয় বিদ্যালয়ের পঠন পাঠন সমাপ্ত  হলো।


সময়টা ঘড়ির কাটায় ঠিক দুপুর ২: বেজে দশ মিনিট। চলন্ত টোটো তে  নিজেদের মধ্যে বাক্যালাপে ব্যস্ত ছিলাম আমরা তিনজন ; হঠাৎই একটি লোহার পাইপ কিভাবে টোটোর ওপরে এসে পরে কিছু বুঝে ওঠার আগেই এক নিমেষের মধ্যেই বড় মেয়েটা ছিটকে রাস্তার পাশে পরে থাকা পাথরে প্রচন্ড আঘাত পায়। টোটোচালক না থামতে পারার কারণে উনিও পরে যান ছোট মেয়েটি ভাগ্যক্রমে ওনার পিঠের উপরে পরে তাই আঘাতের মাত্রা কিছুটা কম  ছিলো। আমি সমগ্র টোটো লইয়া উল্টে পড়ে যাই, ঘটনাস্থলে আমি অচৈতন্য ছিলাম কিন্তু যখন আমার চেতনা ফেরে তখন আমার নাক থেকে অনবরত রক্ত ঝরে পরছে  চোখে ঝাপসা চতুর্দিক। আমি যে কি করে রাস্তার এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে এলাম নিজেও জানিনা, অস্পষ্ট নয়নে দেখলাম মেয়ে দুটো হাউ হাউ করে কাঁদছে রাস্তার লোক ধরাধরি করে বড় মেয়েকে কোলে তুলে মাথায় অনবরত জল দিচ্ছে সে তারস্বরে চিৎকার করছে............................
আমার চোখ থেকে তখন জলধারা বয়ে চলেছে গা হাত পা ঠকঠক করে কাঁপছে কি করবো দিশা খুঁজে পাচ্ছি না, এমত অবস্থায় একজন লুঙ্গি পরা ভদ্রলোক সেখানে উপস্থিত হলেন তিনি বড় মেয়েকে কোলে তুলে নিয়ে তার বাড়িতে থাকা তক্তপোষের ওপরে বসিয়ে মাথায় কিছুক্ষণ  বরফ দিয়ে কিছু ওষুধ এবং বাঁধন দিয়ে দিলেন, বোধ করি একজন চিকিৎসক হবেন ; উনি এবং উনার স্ত্রী আমাদের অনেক সাহায্য করলেন।

তারপর একে একে বাড়ির লোকদের ফোন করা হলো। বড় মেয়ে  সারা রাস্তা কাঁদতে কাঁদতে এলো কারণ সেই সময় তার ইউনিট পরীক্ষা চলছিলো, কি করে সে সেই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে এবং সন্ধ্যাবেলার পড়তে যাওয়া ছিলো সেটাও নষ্ট হয়ে গেলো এইসব চিন্তা করে সে আরো নিজের মধ্যে মনে মনে খুব অস্থির  হয়ে উঠেছিলো । সে তার প্রিয় শিক্ষিকার কাছে ফোন করে তিনি সেখানে তক্ষনাৎ উপস্থিত হন এবং সান্তনা দেন, তাহাকে দেখে দুর্ঘটনার ভীতি কিছুটা হলেও  কিছুক্ষণের জন্য লাঘব হয়ে  যায়। তারপর এক বেসরকারি হাসপাতালে উহার মস্তিষ্কের পরীক্ষা করানো হলো।

সারাদিন ক্লান্ত থাকার কারণে সন্ধ্যেবেলা খানিকক্ষণ ঘুমিয়ে পরেছিল এবং ব্যাথার কারণে চোখ মেলতে পারছিল না।

সড়ক দুর্ঘটনা আমার জীবনে এই দুইবার;  দু হাজার চার সালের পর আবার ও ২০২৫। আমি সেই সময় নিজে ভয় পাইনি  হৃদয় কে শক্ত বাঁধনে আবদ্ধ করেছিলাম কিন্তু তখন বাচ্চা গুলোর জন্য নিজেকে খুব অসহায় লাগছিলো । সেই সময় আমাদের পাশে অনেক দাদারা এসেছিলেন দেখতে উনারা আমাদের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন প্রতিটি ঘটনার  ভালো মন্দ উভয় দিকই রয়েছে কিন্তু এই সময় ভয় না পেয়ে নিজেকে শক্ত রাখাটাই শ্রেয়। 
======================

কলমে - অঙ্কিতা পাল (বিশ্বাস) 
ভাঙ্গড় দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা 




 

 To Know More Deals & Offers : CLICK HERE
 
 
 
 
 

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.