ধারাবাহিক গল্প।। নাটকীয় বায়বীয় ঘটনা (শেষাংশ) ।। দীপক পাল
নাটকীয় বায়বীয় ঘটনা
( শেষাংশ )
দীপক পাল
সওয়া এক ঘন্টা বিশ্রাম করে ওরা নিজেদের মধ্যে সিরিয়াসলি কিছু আলোচনা করে নিল। তারপর একটা কাগজে কি সব লিখে নিয়ে আবার বেরলো রাস্তায় একটু খোঁজ করে বড় একটা ইলেকট্রিকের দোকানে ঢুকে সেই লিস্টটা দেখিয়ে জিজ্ঞেস করলো,
- ' দেখুন তো এইসব জিনিসগুলো আপনাদের কাছে পাওয়া যাবে কিনা?'
লিস্টটা ভাল করে দেখে তিনি বললেন, ' হ্যাঁ পাওয়া যাবে।'
- ' আচ্ছা আপনাদের কাছে সার্চ লাইট ভাড়া পাওয়া যাবে দুটো এক মাসের জন্য?'
- ' হ্যাঁ পাওয়া যাবে। কোথায় লাগাবেন? মাফ করবেন জিগ্গাসা করলাম বলে। কারণ কেউ তো এতো দিনের জন্য সার্চ লাইট ভাড়া নেয় না। তাই আমার কৌতুহল হচ্ছে।'
- ' কথাটা ঠিক। কিন্তু আমাদের উপায় না দেখে একটা চেষ্টা করছি মাত্র।'
- ' চেষ্টা, কিসের চেষ্টা? যদি কোন সমস্যা থাকে গোপনীয় কিছু না থাকলে আমায় বলতে পারেন অকপটে। আপনাদের দেখে মনে হচ্ছে আপনারা এখানে নতুন,বয়স ও কম।'
এবার ওরা সব কথা খুলে বললো ওনাকে। সব কথা শুনে উনি বললেন,
- ' দেখুন আপনারা আমাদের জেলার ভালোর জন্য এসেছেন। নীতিশদাও আমাদের এখানে খুবই জনপ্রিয় লোক। প্রায় সবাই ওনাকে চেনে। আপনাদেরও এরপর সবাই চিনবে। আপনাদের জন্য আমি বাড়ী ভাড়ার চেষ্টা করবো। আপাতত এই বাড়িতে কিছুদিন থাকতে পারেন কিনা দেখুন। ঐ বাড়ীটার যথেষ্ট বদনাম আছে। লোকে ওটা ভূতের বাড়ী বলে। আপনাদের এরকম একটা বাড়ী ভাড়া নিতে হচ্ছে জেনে খুব খারাপ লাগছে। আমি আপনাদের এই কাজটা খুব যত্ন করে করে দেব। কোন চিন্তা করবেন না।'
- ' আপনার সাথে আলাপ হয়ে আমাদের খুব ভাল লাগলো। আমাদের নাম সুদীপ আর বিমল। আপনার নামটা জানতে পারলে খুব ভাল হয়।'
- ' আমার নাম তীর্থ। এখানে ইলেক্ট্রিকের দোকানগুলের মধ্যে আমারটা সবচেয়ে পুরানো। আমি কাল সকালে একজন ইলেকট্রিসিয়ান নিয়ে ঠিক পৌঁছে যাবো। সকাল থেকে না গেলে ঠিক পেরে উঠবো না। কাজটা বেশ কঠিন। মেন কয়েল খুঁজতেই অনেকটা সময় যাবে। তবে একতলা বাড়ি বলে কিছুটা সুবিধা।'
এরপর পরস্পর নমস্কার জানিয়ে ওরা দোকান থেকে বেরিয়ে এলো। এখানে তীর্থ বাবুর সাথে সুদীপ ও বিমল দুজনেই পালা করে কথা বলেছে। পড়ে মনে হবে বুঝি একজনই তীর্থবাবুর সাথে কথা বলেছে। আদতে ঠিক তা নয়। খুব খিদে পাওয়ায় ওরা একটা ভাতের হোটেলে ঢুকে ভাতের অর্ডার দিয়ে সুদীপ বললো,
- ' কত খরচ পরবে কে জানে। তারপরেও যদি উদ্দেশ্য সফল না হয় তাহলে তো সব গেল। তখন কোথায় যাব, কি করবো।'
- ' বি পজিটিভ। এটা ফেল করলে অন্য পথ ধরবো। খালি মনে সাহস রাখতে হবে। তীর্থ বাবু তো বললেন সব রকম সাহায্য করবেন। নীতিশদা আছে, তবে চিন্তা কি?'
ডিনার সেরে ওরা বাড়ী ফিরলো কিছুটা দোলাচল নিয়ে।
পরের দিন চা টা খেতে আটটায় বেরিয়ে এবং খেয়ে বাড়ীর কাছে গিয়ে দেখে সব কিছু নিয়ে ওরা রিক্সা করে চলে এসেছে, সঙ্গে এনেছে একটা বড়ো মই। কি করে এনেছে কে জানে। ওদের দেখে ইলেক্ট্রিকের দোকানের মালিক বললো,
- 'নমস্কার, আমরা এসে কাজ শুরু করে দিয়েছি। ওখানে যে কাজ করছে ওর নাম কেষ্ট, ইলেক্ট্রিকের কাজ খুব ভাল জানে কেষ্ট।' শুনে বিমল বলে,
- 'বাঃ যেখানে কেষ্ট সেখানেই তো তীর্থ। আমাদের ভাগ্য ভাল।'
সুদীপ আর তীর্থ বিমলের কথায় হেসে ওঠে। সুদীপ ঘরের চাবি দেয় তীর্থকে।
-'আমার কাছে এসেছে বলেই না আমার তীর্থ নাম সার্থক হয়েছে বলুন?' একথা বলে আবার বলে, 'একটা কাজের কথা জিজ্ঞেস করি, বলুন সুইচ বোর্ডটা কোথায় লাগানো হবে? বারান্দায় না ভিতরের প্যাসেজে না কোন ঘরে?'
- ' কোথায় লাগালে ভাল হয় বলুন তো?' বিমল জিজ্ঞেস করে।
- ' ভিতরের প্যাসেজে লাগালে সবচেয়ে ভাল হয়। কারণ দুটো ঘর তো কমন থাকা ভাল। আর ছাদের সার্চলাইট দুটো কি ভাবে লাগাবো?' দুজনে একসাথে বললে যা দাঁড়ালো,
- ' দুটো দুপাশে এমন ভাবে লাগাবেন যাতে ছাদে পর্যাপ্ত আলো হয় এবং একটার আলো গলির দিকেও পরে এবং একটার আলো পেছন দিকেও পরে।'
- ' ঠিক আছে, কিরে কেষ্ট শুনলি তো সব।' বলে তীর্থ বাবু কেষ্টর দিকে চলে গেলেন। ওরা ঘন্টা খানেক কাজ দেখে হোটেলে ফিরলো। দুপুর দেড়টা সময় লাঞ্চ সেরে ওরা দেখতে গেল কাজ কতদূর এগিয়েছে। গিয়ে দেখে কেউ নেই। খেতে গেছে মনে হয়। বারান্দায় তিনটে লাইট লাগানো হয়েছে। দেয়াল ফুটো করার জন্য বালি সিমেন্ট ও চুনে নোংরা হয়ে আছে বারান্ডাটা। ইতস্তত টুকরো তার ছড়ানো। দুটো ঘরের চারটে জানলা খোলা, তাও কিছু বোঝা গেল না। ওরা অপেক্ষা করতে লাগলো তীর্থ আর কেষ্টর জন্য। অবশেষে ওরা ফিরলো দুটো পাঁচ নাগাদ। তীর্থ বাবু এসেই বললো,
- ' এসে গেছেন? যাক ভালই হলো। আপনাদের নিচের দিকের কাজটা প্রায় হয়েই গেছে। একটু ফিনিশিং বাকি। ওটা আমিই করে নিতে পারবো। কেষ্ট এখন ওপরে উঠবে। সার্চ লাইট দুটো লাগাবে। এমনি ফিফটিন এম পি আর বোর্ড থেকে তার বার করা হয়েছে। দরজার ওপরে কাঠের ফ্রেমে ফুটো করা হয়েছে ঐ দেখুন। ওখান থেকে তার ঢুকবে। আপনাদের একটা ফুলঝারু কিনে আনতে হবে। ঝাড়ু দিয়ে সব পরিস্কার করে দেব।'
- 'তাহলে আজকে আমরা ঢুকতে পারবো।?'
- ' অতি অবশ্য। খালি ঝাড়ু নিয়ে আসুন। আর একটা কথা আপনারা তো ওদিকেই যাচ্ছেন তাহলে আরো কয়েকটা জিনিস কিনে আনুন। একটা টর্চ ব্যাটারি সমেত। বেশি বড় কেনার দরকার নেই। শোওয়ার সময় দুজনের মাঝখানে রাখবেন যাতে দুজনের নাগালে থাকে। তারপর কিনবেন পর্যাপ্ত শুকনো লঙ্কা আর দু চারটে দেশলাই ও ধূপ-ধুনো ছোবা আর একটা মাটির ধুনুচি। এই গুলো পাবেন সব দশকর্মা ভান্ডারে। এই সব আপনাদের আজ থেকেই কাজে লাগবে,দেখবেন। কিন্তু খুব সাবধান।'
সুদীপ আর বিমল বেরিয়ে গেল গলি থেকে আগে গেল হোটেলে। রিসেপশনের ছেলেটাকে বুঝিয়ে ব্যাগ দুটো বার করে রিসেপশনে রেখে আবার বেরলো। ফুল ঝারু খুঁজে পেয়ে, কিনে, এক প্রস্থ গরম সিঙারা সমেত চা খেয়ে সোজা চলে এলো বাড়ীতে। এসে দেখলো সার্চ লাইট লাগানো হয়ে গেছে। কেষ্ট মই বেয়ে নিচে নামছে। তারপর ভেতরে ঢুকে সুইচ দিতেই সার্চ লাইট দুটো জ্বলে উঠলো। বাইরে এসে ওদের বললো,
- ' নিন এবার সব লাইট জ্বালিয়ে দেখে নিন আপনারা একবার।'
ওরা তাই করলো। বাঃ চমৎকার হয়েছে। তবে সন্ধের পরে ঠিক বোঝা যাবে।
- ' কৈ ঝাঁটা এনেছেন?' তীর্থ বাবু জিজ্ঞেস করলো বিমল ফুলঝারুটা এগিয়ে দিতে তিনি কেষ্টকে ডেকে নিলেন। তারপর দুজনে মিলে পরিস্কার করতে থাকলো। ধূলো-বালি উড়তে থাকলো ভীষণ। বিমল আর সুদীপ ওখান থেকে সরে গিয়ে হোটেলে। গিয়ে টাকা পয়সা মিটিয়ে ঐ সামান্য মালপত্র নিয়ে চলে এল। ঘরে ঢুকে দেখল যে ঘরে বড়ো চৌকিটা পাতা সেই ঘরে একটা সিলিং ফ্যান খুব জোরে ঘুরছে। ওরা তো দুজনেই অবাক। ফ্যানের কথা তো মোটে বলেনি তীর্থ বাবুকে। কিন্তু সত্যিই তো। ফ্যান ছাড়া ঘুমোবেই বা কি করে। এই কথাটা তো মনেই আসেনি ওদের একদম।
- ' কি অবাক হচ্ছেন তো? ফ্যান আর সার্চ লাইট ভাড়ায় দিলাম। এর টাকা মাস গেলে মাইনে পেয়ে দেবেন। আমি ভাবলাম ফ্যান ছাড়া ঘুমোবেন কি করে? তাই এরও ব্যবস্থা করে দিলাম আমি।' ওরা খুব লজ্জিত মনে হলো।
- খুব ভাল করেছেন দাদা। এটার কথা আমাদের মাথাতেই ছিল না।'
- ' ঠিক আছে। এখন কিছু টাকা দিন, পরে বিল পাঠিয়ে দেব। তবে আপনাদের কথা আলাদা। আপনারা অসুবিধে করে দেবেন না। এখন হাজার খানেক টাকা দিলে ভাল হয়। বাকিটা না হয় এ মাসের মাইনে পেয়ে দেবেন।'সুদীপ এক হাজার টাকা দিয়ে বলে,
- ' সত্যি তাহলে আমাদের খুবই উপকার হয়। তবে বিলটা তৈরি হলে একটু জানাবেন, আমি গিয়ে নিয়ে আসবো।' তিনি ' ঠিক আছে ' বলে চলে গেলেন।
সুদীপ ও বিমল ঘরে ঢুকল। দুজনে দুটো চাদর বার করে চৌকির ওপর পেতে দিল। তারপর দুজনেই দুটো ফোলানো বালিশ বার করে তার ওপরে রাখলো। ওরা এখনও সার্চ লাইট জ্বালায় নি। ঠিক হলো রাত দশটায় জ্বালাবে। একটু কথাবার্তা বলে ঘর থেকে বেরলো। বেরোবার আগে ফ্যানটা নিভিয়ে দিল। লাইট জ্বালান রইলো। ওরা আগে একটা দশকর্মা ভান্ডারে গিয়ে একটা মাটির ধুনুচি ধূপ ধুনো ছোবা কিনলো, পাশের দোকান থেকে দুটো দেশলাই আর অনেকটা শুকনো লংকা কিনলো। তারপর আর একটা স্টেশনারি দোকানে গিয়ে একটা দু ব্যাটারির টর্চ কিনে ঘরে ফিরলো সাড়ে আটটা। চাবি লাগিয়ে ঘর খুলতেই সেই অচেনা গন্ধটা নাকে এলো। কেমন একটা যেন চামসে গন্ধ। কাল বিলম্ব না করে সুদীপ ছাদের সার্চ লাইট দুটো আগে জ্বালিয়ে দিল। ওদিকে বিমল চট্ করে শুকনো লংকার প্যাকেট ছিঁড়ে কিছু শুকনো লংকা বার করে, কাগজ ছিঁড়ে, ওর ওপরে শুকনো লংকা রেখে দেশলাইয়ের কাঠি জ্বালিয়ে কাগজটা ধরিয়ে দিল। পরে পেছন দিকের অন্ধকার ঘরে ঠেলে দিল লংকা পোড়ার বিকট গন্ধে দুজনেই কাশতে লাগলো। ওদিকে পেছন দিক থেকে কে বলছে, ' আঁমাকে তাঁড়াতে চাঁস? আঁমি যাঁবো নাঁ কিঁছুতেই। বিমল চট্ করে এক পা ঢুকে লাইট জ্বালিয়ে দিল। অমনি আঁ আঁ আঁ আঁ শব্দ একটা আবছা ছায়ামূর্তি ছটফট করতে দেখা গেল। সেই ছায়ামূর্তি চিৎকার করে উঠলো আর বলতে লাগলো আঁমি যাঁব নাঁ নাঁ নাঁ নাঁ নাঁ। ওদিকে সুদীপ ধুনুচি জ্বালিয়ে ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন করে দিল। বিমল আবার কিছু শুকনো লংকা পোড়া দিল। ছায়ামূর্তিটা ছটফট করতে করতে রান্নাঘরে ঢুকলো। বিমল পা টিপে টিপে রান্নাঘরের বাঁ দিকের বাইরের সুইচটা জ্বালিয়ে দিল। ছায়ামূর্তিটা এবার সাঁ করে বাইরে বেরিয়ে উল্টো দিকের বাথরুমে অত্যন্ত হাওয়ার বেগে বাথরুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিল। ভেতর থেকে চিৎকার করে বলতে লাগলো,
- ' আঁমার বাঁড়ী তোঁরা দঁখল কঁরতে চাঁস, কিঁছুতই আঁমি তাঁ হঁতে দেঁব নাঁ বুঁঝলি? যাঁ তোঁরা চঁলে যাঁ এঁখান থেঁকে। যাঁ যাঁ যাঁ।"
খুব মুশকিলে পড়ে গেল সুদীপ আর বিমল। ভাবছে ঐ আত্মাটা ওখানেতো রাখা যায় না। যখন তখন ওখান থেকে বেরিয়ে কি কান্ড করবে কে জানে। তবে এইটুকু বোঝা গেল যে ওদের যেখানে ভয় পাওয়ার কথা যেই ব্যাপারটা নিয়ে ওরা ভীত ছিল এখন সেই ভয়টা অনেকটা হলেও চলে গেছে আত্মাটা নাছোড়বান্দা হলেও সুদীপ বিমলদের থেকে আড়ালে থাকতে চাইছে। কিন্তু ওটাকে ওখান থেকে বার করবে কি করে। বিমল হঠাৎ বলে ওঠে, 'দাঁড়াও দেখা যাক, তুমি শুকনো লংকা আর দেশলাই একদম রেডী করে রাখ। ওকে বাথরুম থেকে বার করতে পারলেই তুমি সঙ্গে সঙ্গে শুকনো লঙ্কা গুলো জ্বালিয়ে দেবে। দুপাশে জানলাই খোলা আছে, ও যদি বেরিয়ে যায় তুমি সংগে সংগে একটা জানালা বন্ধ করে দেবে আমি আর একটা করে দেব।' বলে সে টর্চ হাতে বাথরুমের দিকে এগিয়ে গেল। সাহস আছে বটে বিমলের। বিশ্বনাথ বাবুর বড় ছেলের নাম ছিল নাকি সুশীল। ভীষণ ভাল লোক ছিলেন নাকি তিনি। আত্মাটা যে তারই তার ঠিক নেই।'
বিমল দরজায় কান লাগায়,বলে, ' সুশীলদা, আমরা বিশ্বনাথবাবুর কাছ থেকে এই বাড়ী ভাড়া নিয়েছি । আরো দুজন আসবে। তখন বাড়ীটা আরও আলোকিত হয়ে উঠবে। বিশ্বনাথবাবু আমাদের বলেছেন আমার বড়ো ছেলে সুশীল অত্যন্ত ভাল ছেলে ছিল, সবাই ওকে খুব ভালবাসতো। আপনারা ওকে খুব ভাল করে বলবেন এ বাড়ী ছেড়ে দিতে। আর বলবেন যে আমি ওকে এখান থেকে চলে যেতে বলছি, কারণ ওনারা এখানে এসেছেন আমাদের এবং আমাদের শহর ও গ্রামের উন্নতি করার জন্য। তোকে তাই এই বাড়ী ছেড়ে চলে যেতে হবে, লক্ষ্মী এবার যা।'
দড়াম করে দরজা খুলে গেল। টর্চ জ্বালাল বিমল। সুদীপও শুকনো লংকা পোড়া দিল। দুহাতে মনে হয় চোখ ঢেকে একটা আবছা মূর্তি বাথরুম থেকে শোঁ করে বেরিয়ে উড়ে গিয়ে জানলা দিয়ে বেরোতে বেরোতে বলতে বলতে গেল,
- ' আঁমি চঁললাম আঁর আঁসবো নাঁ আঁ আঁ আঁ, ওঁরে বাঁ বাঁ কঁত আঁ লোঁ .......... আঁমি পাঁলাই............।'
আপাতত হাঁফ ছেড়ে বাঁচল বিমল সুদীপ। আপাতত কেন, কারণ তেনাদের ঠিক বিশ্বাস নেই কিনা। দুজনেই সপাটে জানালা দুটো বন্ধ করে দিলো। ঘরের মেঝেতে বসে পড়লো ওরা। কদিন যা পরিশ্রম গেছে ওদের তাই পরিশ্রান্ত হয়ে পড়েছে দুজনে। ম্লান হেসে সুদীপ বিমলের উদ্দেশ্যে বললো,
- ' তোমাকে আমি কি বলে ডাকি তাই ঠিক করতে পারছি না। বন্ধু বলবো, না গুরু বলবো। তুমি আন্দাজে ছায়ামূর্তিকে এমন গুছিয়ে মিথ্যে কথাগুলো বললে, আমি তো ভাই একদম অবাক হয়ে গেছি। তারপর সে আত্মাটা সেগুলো সত্যি ভেবে চলে গেল। তাও নাকি চিরদিনের জন্য। তবে তোমাকে গুরু বলবো নাতো কি? বিমল, সত্যি তোমার এলেম আছে।'
- ' আচ্ছা ঠিক আছে। আমরা গায়ের ছেলে তো তাই এসবের একটু আধটু অভিজ্ঞতা আছে। নাও চলো, রাত হয়ে গেছে, শুতে হবে তো।'
- 'হ্যাঁ চলো। কাল আবার বেরোতে হবে তো।'
- ( সমাপ্ত ) -
From :-
------------
Dipak Kumar Paul (9007139853),
DTC Southern Heights, Block-8, Flat-1B,
Diamond Harbour Road,
Kolkata - 700104.
-----------‐----------‐-----