প্রথম দেখা
ঋতম পাল
তখন সবে সবে শীত আসছে, বাইরে উত্তুরে হাওয়া বইছে। ভোরের কুয়াশা মাখা কলকাতা জুড়ে এখন যেন শুধুই প্রেমের মরশুম। এরকম একটা মরশুমেই শুরু হয়েছিল নিধি আর দীপ্ত র সম্পর্কের গল্প।
সোশ্যালমিডিয়া থেকেই ওদের দুজনের প্রথম আলাপ শুরু। প্রথম প্রথম ম্যাসেজ থেকে ঘন্টার পর ঘণ্টা ফোনকল, নিজেদের অজান্তেই ওরা একে অপরের অনেকটা কাছের হয়ে গেছিলো।
সময়টা ছিলো ডিসেম্বরের মাঝ সপ্তাহ। নিধি আর দীপ্তর প্রথম দেখা। আর প্রথম দেখা মানেই ময়দান।
নিধি:- হ্যালো....কীরে, আর কতক্ষণে আসবি তুই?
দীপ্ত:- হ্যাঁ বলো.... এইতো এসেই গেছি প্রায়, আর মিনিট পনেরো লাগবে.... একটু্ অপেক্ষা করো আসছি।
নিধি:- উফ্, প্রায় ঘন্টাখানেক ধরে বসে আছি, আর এখনো পনেরো মিনিট! তুই আয় তোর হচ্ছে....।
দীপ্ত:- (ভয়ের স্বরে) না মানে ইয়ে....
কিছুক্ষণ পর নিধির একটা অদ্ভুত অনুভূতি হয়, পিছন থেকে এসে কেউ যেনো ওকে ফিসফিস করে বলছে- "হ্যালো নিধি ম্যাডাম।"
নিধি:- একটু ভয় পেয়ে... ওহ্ তুই, এতক্ষণে আসার সময় হলো, কতক্ষণ ধরে অপেক্ষা করছি.... আরো কতো কী বলতে থাকে।
কিন্তু দীপ্ত একদৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখছে নিধিকে, সত্যি কী অপূর্ব লাগছে নিধিকে।
দীপ্ত:- আচ্ছা সরি, এইখানে দাঁড়িয়েই সব কথা বলবে?চলো।
এরপরে গল্প করতে করতে ওরা হাঁটতে থাকে। ওদের দুজনের মধ্যে যেনো পাহাড় সমান কথা জমে আছে। এরপর পার্কস্ট্রিটে ঘুরতে যাওয়া, ট্রামলাইনের ওপর দিয়ে হেঁটে যাওয়া, গঙ্গার পাড়ে ঝালমুড়ি, শেষে ধোঁয়াওঠা গরম চা সবমিলিয়ে সুন্দর একটা প্রেমের আবেশের সৃষ্টি হয়েছিল।
অবশেষে ভিক্টোরিয়ার সামনে এসে দীপ্ত হলুদ গোলাপ হাতে নিয়ে নিধিকে নিজের মনের কথা বলে, নিধিও মনে মনে সেই প্রস্তাবে রাজি হয় কিন্তু লজ্জাতে আর কিছু বলে উঠতে পারেনা। এরপর দীপ্ত হলুদ গোলাপটা নিধির খোঁপায় আটকে দিয়ে বলে- " আই লাভ ইউ নিধি।"
দীপ্ত আর নিধির প্রেম তথা তাদের প্রথম দেখার সাক্ষী হয়ে থাকলো গোটা তিলোত্তমা, সাক্ষী থাকলো ট্রামলাইন, সাক্ষী থাকলো ময়দান, সাক্ষী থাকলো গঙ্গার পাড়, সাক্ষী হয়ে থাকলো ভিক্টোরিয়া।
============================
নাম:- ঋতম পাল
ঠিকানা:- ৫/২/H/১, কাশীপুর প্রাণনাথ চৌধুরী লেন।
কলকাতা :- ৭০০০০২