মৃণাল বন্দ্যোপাধ্যায়
এ এক আজব গ্রহ।এখানে গাছেরা নেচে খেলে ঘুরে বেড়ায় আর মানুষেরা জটলা করে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে।তাদের উপরে মাধ্যাকর্ষণের এতটাই প্রভাব যে এরা এক জায়গা থেকে অন্যত্র যেতে অক্ষম।অবশ্য তার জন্যে কোনও আক্ষেপ নেই।কারণ এটাই যে এখানকার নিয়ম।এখানেও গাছেরাই সবুজ এবং মানুষেরা পৃথিবীর মতোই। এখানেও গাছেরাই শালোকসংশ্লেষ পদ্ধতিতে খাদ্য উংপন্ন করে। গাছেদের শিশুরা মানুষের দুহাত ধরে ঝোলে, কোলে ওঠে, গান শোনে। আর তার বিনিময়ে তাদের মায়েরা সেই মানুষটিকে তার শাখায় ঝুলে থাকা ফল খেতে দেয়।বয়স্ক মানুষদের যখন বার্ধক্য হেতু গায়ে শক্তি থাকেনা গাছেদের শিশুদেরকে বহন করার মতো, তখন গাছেরাও তাদেরকে নিজেদের ফল খেতে অনুমতি দেয়না। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই অশক্ত মানুষদের ধীরে ধীরে মৃত্যু ঘটে।
এই আজব গ্রহটা আমাদের সৌর পরিবারেরই একটি সদস্য।পৃথিবী আমাদের সূর্যের যে পাশে অবস্থান করছে একদম তার সরাসরি বিপরীত দিকে পৃথিবীরই সম ভরের এবং পৃথিবীর মতোই আহ্নিক ও বার্ষিক গতি সম্পন্ন, বলতে পারো যেন পৃথিবীরই সমান্তরাল প্রতিবিম্ব। কিন্তু একই গতি যুক্ত এবং একই আকার আকৃতি বিশিষ্ট হওয়ার জন্যে এবং তাপিও বিকিরণ অতিরিক্ত কম হওয়ায় পৃথিবী থেকে দৃষ্টিগোচর নয়, ঠিক যেরকম চাঁদের উল্টো দিকটাও পৃথিবীতে বসে দেখা সম্ভবপর নয়।
এখানে একটাই সুবিশাল ভূখণ্ড এবং তার ঠিক মাঝখান দিয়ে প্রবাহিত হয়ে যাওয়া একটাই চওড়া নদী,যার দুপাশে একটাই মহাসাগর। অবশ্য এই নদীটিরই দুপাশে দীর্ঘ পথ জুড়ে অজস্র শাখানদী। এই প্রত্যেকটি নদীতেই জলের পরিমাণ খুবই কম। গাছেরা এই নদীগুলির লবনাক্ত জল পান করে প্রয়োজন মতো তাদের শেকড় নদীর জলে চুবিয়ে । মানুষেরা উদ্ভিদদের থেকে যে ফল পায় তাদের বাচ্চাদের কোলে নিয়ে গান শোনানো বা দু-হাতে বহন করে ঝোলানোর বিনিময়ে, সেই ফল থেকেই তাদের প্রয়োজনীয় তৃষ্ণা মিটে যায়। মানুষেরা যেহেতু চলাফেরা করেনা তাই তাদের অতিরিক্ত জল পিপাসাও পায় না।
মাটি বলে কোনকিছুই নেই এখানে। তাই চাষাবাদও হয়না। অবশ্য হওয়ার প্রয়োজনিয়তাই নেই কারণ মানুষ এখানেও খাদ্যাভ্যাসে সম্পূর্ণভাবেই উদ্ভিদ নির্ভর। আর যেহেতু খাদ্যটা সবাই উদ্ভিদের থেকেই শ্রমের বিনিময়ে পেয়ে যায় তাই এখানে কোনও অফিস-কাছারি,স্কুল-কলেজ, দোকান, বাজার-হাট, মন্দির-মসজিদ এসবের কোনটাই নেই। এখানে জন্তু জানোয়ার বলতে পাখি, কীটপতঙ্গ এবং জলচর প্রাণীরা আছে। এবং সবথেকে বড় কথা এইখানে হিংস্রতা বা নিষ্ঠুরতার বালাই নেই, কারণ এখানে বসবাসকারী সমস্ত প্রাণীকুলই শাকাহারি। জলচর বিভিন্ন প্রাণীরা গাছেদেরকে নানারকমের খেলা এবং কসরত দেখায় এবং তার বিনিময়ে উপস্থিত গাছেরা তাদের দিকে পাতা, ফুল, ফল ছুড়ে দেয়। যেটা জলচর প্রাণীরা খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে। এই অদ্ভুত পৃথিবীতে সবাই সবার উপকারে একে অপরের পরিপূরক হয়ে যুগের পর যুগ ধরে বিচরণ করছে পরস্পরের বন্ধুর মতো। এখানে সবটাই বৃক্ষদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এবং প্রত্যেকটি বৃক্ষেরই প্রত্যেকটি পাতা ঘন সবুজ কারণ এখানে কোনও ধুলো নেই। এখানেও মেঘ তৈরি হয় এবং সেই মেঘ থেকে বৃষ্টি হয়, তবে বজ্রবিদ্যুতের বালাই নেই। কারণ এখানে আগুন জ্বালানোর বিদ্যা কারোর জানা নেই। আর সেটাই স্বাভাবিক, কারণ পুড়িয়ে বা রান্না করে খাওয়ার তো প্রয়োজন নেই। এছাড়া কোনরকম শিল্প বা কলকারখানাও নেই এবং যানবাহনেরও কোনও প্রয়োজন নেই। ফলে পুরোপুরি দূষণ মুক্ত নির্মল পরিবেশ। গড় তাপমাত্রা পৃথিবীর থেকে বেশ অনেকটাই কম। কারণ বাতাসে কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাস খুবই নগন্য। প্রচুর পরিমাণে গাছপালার উপস্থিতি, পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত এবং বাতাসে আয়নের অনুপস্থিতি এই সমান্তরাল পৃথিবীকে দারুণভাবেই বসবাসের অনুকূল করে তুলেছে। এখানে মানুষের বসবাস যোগ্য বাসস্থানের প্রয়োজন হয়না। মানুষ এখানে গোটা জীবন পৃথিবীর গাছেদের মতো এক জায়গায় দাড়িয়ে থাকে। ফলে আসবাবপত্রেরও কোনও দরকার নেই স্বাভাবিক ভাবেই। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে বৃক্ষের প্রাধান্য বা আধিক্যের কারণ। আমাদের পৃথিবীতে মানুষ বড্ড বেহিসাবি, অহংকারী এবং নির্দয়। নিজের সুখ সুবিধার মাত্রাতিরিক্ত চাহিদায় মানুষ নিজেকেই নিজের শত্রু বানিয়েছে। অন্যান্য প্রাণীদেরও যে অনুভূতি আছে, যন্ত্রণা আছে, প্রেম, প্রীতি, ভালোবাসা আছে, পৃথিবীর মানুষেরা কোনকালেই সেটা বুঝতে চায়নি। মানুষ ঈশ্বরকে সামনে রেখে তাঁর ছায়ায় নিজেকেই ঈশ্বরতুল্য হিসেবে দেখতে পছন্দ করে। আর সেইজন্যই ঈশ্বরের কাছ থেকে আশীর্বাদের বদলে অভিশম্পাত প্রাপ্ত হয়। ঈশ্বর বা ঐশ্বরিক শক্তি নিজের ইচ্ছায় প্রকৃতিকে সাজিয়ে দিয়েছেন। এখানে প্রত্যেকটি জীবের জন্যেই থাকা খাওয়ার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা বা আয়োজন রয়েছে। কিন্তু তা তুলনামূলকভাবে অধিকতর বুদ্ধি সম্পন্ন অহংকারী মানুষের পছন্দ নয়। সে চায় এই পৃথিবীর সবকিছুই নিজের অধিকারে রাখতে এবং এই ক্ষমতার প্রতি লোভ মানুষকে আরো উশৃঙ্খল বানিয়েছে এবং নিজের ক্ষতি বা পক্ষান্তরে এই আমাদের পৃথিবীরই আশু বিনাশ ডেকে নিয়ে আসছে।
নতুন এই পৃথিবীতে ঈশ্বরের কোনও অস্তিত্ব নেই। সবকিছুই প্রকৃতির দ্বারাই নিয়ন্ত্রিত। আমাদের পৃথিবীর মতো সবকিছু মানুষের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত বা নির্ধারিত নয়। এখানকার সমাজ ব্যবস্থায় হিংসা, দ্বেষ, স্বার্থপরতা, হানাহানি এই শব্দগুলোর কোন অস্তিত্বই নেই।
তাহলে এই পৃথিবীতে শুধুমাত্র কি সুখই বিরাজ করে? দুঃখের কোনও স্থান নেই? কিন্তু সুখের দোসর হিসেবে দুঃখ না থাকলে কি চলে? সেটা যে প্রকৃতির নিয়মকে লঙ্ঘন করা হবে। আর সেটা কখনই সম্ভব নয়।
এখানে জীবন বড়ই বৈচিত্রহীন একঘেয়ে। এখানে মানুষেরা গান গায়, কিন্তু খালি গলায় কোন বাদ্যযন্ত্র ছাড়াই।ফলে বেশিক্ষণ শুনলে একঘেয়ে লাগে, শ্রুতি মাধুর্য হারিয়ে যায়। এখানে প্রত্যেকটি মানুষই গায়ের রঙ এবং আচার আচরণে অভিন্ন। ফলে কারোরই আলাদা করে কোনও পরিচয় নেই। এদেরকে নামে কেউ চেনে না, সংখ্যায় চেনে। এখানে দৈহিক মিলনের সুখ নেই কারণ মানব শিশুও জন্মায় উদ্ভিদ শিশুর মতোই অযৌন জননের মাধ্যমে। এখানকার আকাশেও একটিই চাঁদ, কিন্তু তার ঘূর্ণন গতি তার গ্রহরই মতো হুবহু এক।অর্থাৎ তিনশ পয়ষট্টি দিনে একবার তার গ্রহকে সে প্রদক্ষিণ করে। ফলে তার এই অদ্ভুত বৈশিষ্ট্য এবং অবস্থানের জন্য তার শরীরে কখনই সূর্যের আলো পড়েনা। সবসময়র জন্যেই অমাবস্যা। তাই পূর্ণিমার শোভা থেকে এখানকার আকাশ এবং বাসিন্দারা বঞ্চিত।
এখানে চলে ফিরে বেড়ানো গাছেদের মাধ্যমেই মানুষেরা একে অপরের সাথে গন্ধ বিনিময় করে, ভাব ভালোবাসার গন্ধ। কারণ এক অঞ্চলের মানুষের বক্তব্যকে অন্য মনুষ্য গোষ্টির কাছে নিয়ে গিয়ে ব্যাক্ত করার ক্ষমতা তাদের গাছেদের নেই কারণ তারা নির্বাক।
এখানকার পৃথিবীতে কোন পাপ নেই। ফলে পাপের থেকে পরিত্রান বা মুক্তি পাওয়ার জন্যে কোনরূপ ঈশ্বর ভজনারও প্রয়োজন নেই। এবং ঈশ্বরের অস্তিত্বহীনতার জন্যে ঈশ্বর পুত্রদের জন্মগ্রহণ করারও বালাই নেই। তাই ধর্ম-অধর্ম কিংবা ধার্মিক-অধার্মিকের ব্যাখ্যা বা উপস্থিতি নিস্প্রয়োজন। আর যেখানে ধর্ম নামক অনুঘটকের উপস্থিতি নেই সেখানে বিক্রিয়ারত বা বিক্রিয়াজাত কোনো পদার্থ বা অস্তিত্বের মধ্যেই নিজের মাহাত্ম্য বা মান্যতাকে প্রশ্রয় দিয়ে নাম যশ কামানো বা সেটা বলপূর্বক আদায় করার ঘৃণ্য অভিসন্ধিও নেই। ফলে 'শত্রু' , এই শব্দটা এখানকার অভিধানের অন্তর্গত নয়। এখানে সবাই সবার বন্ধু এবং মানুষেরা যেহেতু গমন ক্ষমতার অধিকারী নয় ফলে মানুষের যে বিভিন্ন জটলা বা একত্রিত সমাবেশ রয়েছে ছড়িয়ে ছিটিয়ে, সেখানে তাদের নিজেদের মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই কোনও সমস্যা বা দ্বন্দ্ব নেই। এখানকার মানুষেরা জন্ম থেকে মৃত্যু পযর্ন্ত একভাবে অবস্থানগত পরিবর্তেণের সুযোগ উপলব্ধ না থাকার দরুন নিজেদের জায়গাতেই বাড় বৃদ্ধি এবং বিনাশ ঘটে। ফলে বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে চাক্ষুস যোগাযোগ না থাকার জন্যে পারস্পরিক তুলনামূলক চুলচেরা বিশ্লেষণ কিংবা প্রতিযোগিতা বা প্রতিদ্বন্দ্বিতার বাতাবরণ সৃষ্টি হওয়ারও কোনো অবকাশ নেই। ফলে শান্ত, ঝগড়া বিবাদ হীন নির্মল সুন্দর ও স্বর্গীয় পরিবেশ।
এখানে মানুষদের এক একটি জটলায় সাধারণত পঞ্চাশ থেকে সত্তর জনের মতো উপস্থিত থাকে। তুমি ইচ্ছা করলে এগুলোকে মানুষের ছোটখাট বন বলতে পারো। এখানে প্রত্যেক জোড়া মানুষের মাঝখানে কম করে সাত ফুট দূরত্ব থাকে। কারণ মানুষেরা আমাদের মতোই শোয়া, বসা সবই করতে পারে। কিন্তু পা নাড়িয়ে চলাফেরা করতে অক্ষম, কারণ তলার পাথুরে ভূমির সাথে শিরা এবং ধমনীর মাধ্যমে সংযুক্ত থাকে। আর এখান থেকেই প্রয়োজনীয় লোহা প্রয়োজন মতো শোষন করে রক্তকে পরিশুদ্ধ করে শরীরকে চনমনে এবং রোগ মুক্ত রাখে। পাথরের মধ্যে যে ঔষধি নির্যাস বা তেল থাকে সেগুলোও শরীরকে সুস্থ ও সবল রাখতে প্রভূত সহায়তা করে। ফলে চিকিৎসা শাস্ত্র বা বিজ্ঞানেরও আলাদা করে প্রয়োজনীয়তা নেই। এখানে মানুষের গড় আয়ু পৃথিবীর মানুষদের তুলনায় প্রায় তিনগুন।
তিনশ তিরিশ নম্বর এরকমই একটি মানুষের বনের একটি একান্ন বছরের সদ্য যুবতি মেয়ের গন্ধ তিনশ বাহাত্তর নম্বর মনুষ্য বনের চুয়ান্ন বছর বয়সের সদ্য যুবক ছেলেটির খুব ভালো লেগে যাওয়ায় দুই জঙ্গল পরিবারের মধ্যে চাপা উত্তেজনার পারদ একেবারে তুঙ্গে। দুপক্ষেরই সবাই চাইছে যত শীঘ্র সম্ভব দুজনের মধ্যে একটা সুসম্পর্ক গড়ে উঠুক এবং তাদের দুজনের মধ্যে স্বাভাবিক অযৌন জননের মাধ্যমে নতুন মনুষ্য সন্তানের জন্ম ঘটুক। বহুদিন এই দুই মনুষ্য বনের কোনও নতুন সদস্য জন্মগ্রহণ করেনি। বাকি যেসব সদস্যরা আছে তাদের সবাই হয় এখনো যৌবনে পদার্পণ করেনি, নয়তো প্রত্যেকেরই সন্তান প্রাপ্তি ঘটে গেছে। এখানে নিয়মের খুবই কড়াকড়ি। কোনো মানুষই একবারের বেশী বাচ্চা নিতে পারবে না। একবারে একটি বা দুটি যাই হোক কিন্তু সুযোগ একবারই। কারণ এরপরে প্রেমময় গন্ধ শরীর থেকে আর নির্গত হবেনা ফলে কারোর প্রেমে পড়ার সুযোগও এক জীবনে দ্বিতীয়বার আর আসবে না। অর্থাৎ প্রজনন ঋতু বলে কিছু না থাকলেও এক জীবনে একবারই অযৌন জননের তৃপ্তি লাভ সম্ভব। সুতরাং উত্তেজনার পারদ যে গগন চুম্বি হবে সেটা বলাই বাহুল্য।
কিন্তু সমস্যা অন্য জায়গায়। কারণ একটি গাছকে এই দায়িত্বনেওয়ার জন্যে প্রথমে অনুরোধ করতে হবে।এবার সে হাওয়ায় উড়ে বেয়াল্লিশ কিলোমিটার দূরে গিয়ে ছেলেটির জনন কোষের গন্ধ যুবতি মেয়েটির শরীরের গন্ধাশয়ে স্থাপন করবে, এটা বেশ একটা ভালো রকমের কায়িক পরিশ্রমের ব্যাপার। এবারের মধ্যবর্তী দূরত্বটা বড্ড বেশী হয়ে যাওয়াটাই মূল চিন্তার কারণ। মেয়েদের ওখান থেকেও কোন গাছকে দায়িত্বদেওয়াও সম্ভব নয় কারণ সেক্ষেত্রে সেই গাছটিকে দুবার আসা যাওয়া করতে হবে। তাতে করে বাজনার থেকে খাজনা বেশী। এইধরনের কাজে গাছেদেরকেও রাজি করানোটা খুবই দুঃসাধ্য কারণ প্রায় প্রত্যেকেরই ছোট বাচ্চা আছে। আর ছোট বাচ্চার পক্ষে অতটা দূরত্ব অতিক্রম করা প্রায় অসম্ভব। তাহলে কি এই গ্রহে আজ থেকে ভালোবাসার মৃত্যু হবে? মেয়েটি এও বলেছে যে এই পবিত্র প্রেম সার্থকতা না পেলে সে আত্মহত্যা করবে। অথচ এই গ্রহে আত্মহত্যা সুলভ এইধরনের প্রচেষ্টা আজ পর্যন্ত কাউকেই অবলম্বন করতে দেখা যায়নি। তাহলে এখন উপায়? তাহলে পাপ অনুভূতি কি এই গ্রহেও প্রবেশ করবে একটা নিষ্পাপ ভালোবাসার অপমৃত্যুর মধ্য দিয়ে?
ঐ এলাকার সমস্ত গাছপালা এবং মানুষ সহ সমস্ত প্রাণীরাই এই পরিস্থিতি থেকে পরিত্রানের উপায় খুঁজে পেতে অতি তৎপর হয়ে উঠলো। কারণ এই পৃথিবীর সমস্ত প্রাণীদের মধ্যে এতদিনের যে সুদৃঢ় আত্মীয়তার বন্ধন তা কেউই চায়না বিঘ্নিত হোক। আর ভালোবাসার মতো একটা পবিত্র ব্যাপার তো কোনভাবেই নয়। সমগ্র বিশ্বে এই একটাই বন্ধন পরস্পরকে কাছে আসতে শিখিয়েছে। নিজেদের অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখার স্বপ্ন দেখিয়েছে পরবর্তী প্রজন্মের মধ্য দিয়ে। সুতরাং এই স্বপ্নকে কোনভাবেই মরতে দেওেয়া যাবেনা। আর একবার যদি পাপ ঢুকে যায় তবে এই পথ ধরে আরও বিভিন্ন ধরনের পাপ প্রতিনিয়ত ঢুকতেই থাকবে। ফলে কালে দিনে এই স্বর্গ তুল্য গ্রহও নরকে পরিণত হতে বেশি সময় নেবেনা।
অনেক ভেবেচিন্তে একটা মিলিত সমাধান সূত্র অবশেষে খুঁজে পাওয়া গেলো। এবং সেটি হলো জলপথে ডলফিন ছেলের ভালোবাসার গন্ধ মেয়েটির কাছাকাছি পৌঁছে দেবে। সেখান থেকে উড়ুক্কু গাছ সেই পবিত্র গন্ধ নিয়ে গিয়ে যুবতি মেয়েটির গন্ধে মিশিয়ে দেবে। সৃষ্টি হবে এক নয়া ইতিহাস।
সবাই যদি এইভাবে নিজস্ব অহংকার বা আভিজাত্য ভুলে হাতে হাত মিলিয়ে একে অপরের আপদে বিপদে পাশে থাকার জন্যে অন্তর থেকে অঙ্গীকারবদ্ধ থাকে তাহলে কোনোকিছুই অসম্ভব নয়।
আমাদের পৃথিবীর মানুষ কবে যে এই প্রকৃত সত্যটা উপলব্ধি করবে সেটা আমাদের তৈরি করা একক ঈশ্বরই হয়তো শুধুমাত্র বলতে পারবে।
--------××××××××--------
ঠিকানাঃ
MRINAL BANDYOPADHYAY,
KAMPA PURBAPARA,
VILL. AND P.O. KAMPA,
DIST. 24 PGS (NORTH),
WEST BENGAL,
INDIA,
PIN. 743193;
Mb. 9748815168.