ছবিঋণ- ইন্টারনেট।
নববর্ষের আনন্দ
কেতকী বসু
সারাদিনের ব্যাস্ততায় ক্যালেন্ডারের পাতা দেখতে ভুলেই গিয়েছে সায়ন্তিকা।ইংরেজি ক্যালেন্ডার ,তাই বাংলায় সাল ,আর তারিখটা মনে থাকে না।চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতেই ভালো করে দেখলো দেওয়ালে ঝোলানো ক্যালেন্ডারের পাতাটা।
কি আশ্চর্য কাল ই পয়লা বৈশাখ বাংলা নতুন বছরের শুরু ,১৪৩১ তখনই সায়ন্তিকা তড়িঘড়ি বর কে ফোন করতে যাবে এমন সময় পাশের বাড়ির অনুর মা এসে হাজির।" দিদি কালকের জন্যে একটু নিম পাতা দেবেন ,"
মনে পড়ে গেলো কাল তো নিজেরও দরকার ।
সকাল বেলা নিম আর হলুদ মাখতে হয়। সেই ছোটো বেলা থেকে মা,কতো যত্ন করে মাখিয়ে দিতেন ,এখন বিয়ের পর ছেলে, বর ,শ্বশুর,শ্বাশুড়ি সবার জন্যে নিজেই শিলে বেটে তৈরি করে দেয়।
ভালই হলো নিজের জন্যে একটু বেশি করে পেড়ে নিল।
এবার আয়োজন, ঠাকুরের নতুন জামা কাপড় কিনতে হবে।ফল,ফুল,মিষ্টি সব কিছুর একটা মস্ত লিস্ট বানিয়ে ফেললো।তারপর বরকে ফোন করে হোয়াটস অ্যাপ এ পাঠিয়ে দিল।
এবার একটু নিশ্চিন্ত হয়ে বসল সায়ন্তিকা,
আর ভাবতে লাগলো ,নববর্ষের দিনে কি কি রান্না করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেবে।
তারপর বিকেল হলেই গোষ্টের মেলা দেখতে যাওয়া।এক সুন্দর অনুভূতি।
এক এক করে মনে পড়ে যাচ্ছে,বাবার হাত ধরে মেলায় যাওয়া, রধাবল্লোভ ,শ্যাম সুন্দর,মদন মোহন,গোপীনাথ,আরো কত ঠাকুর একসাথে মিলিত হয় আর তারই উপলক্ষে মেলা।কথিত আছে নবর্ষের দিন সব ঠাকুরের অধিবেশন হয়। সারা বছরের পরিকল্পনা হয় ।আর সমস্ত পড়ার ঠাকুর একজায়গায় মিলিত হয়ে।বিশাল বড় মাঠে সব ঠাকুরের একসাথে আড্ডা।
এবারও যাবে ঠাকুর দেখতে,
ওই দিন সবার সাথে দেখা হয় ,চেনা অচেনা মানুষ একজায়গায় হয়।বিশাল বড় মেলা।
বাবা চলে যাওয়ার পর থেকে ছেলেকে নিয়েই যায় প্রতিবছর।এই সব ভাবতে ভাবতে কলিং বেলের আওয়াজ,কর্তা মশাই এসে গিয়েছেন দুহাত ভর্তি বাজার।ছেলেও ছুটে আসে,বাবার হাতে বাজার,আর তাই দেখে চিৎকার করে বলে ওঠে মা কাল নববর্ষ,মেলায় নিয়ে যাবে তো ?,আনন্দে আত্মহারা ওরা সবাই,নতুন বছেরের নববর্ষের উত্তেজনা,বাঙালি হৃদয়ে চিরকালীন চির আনন্দের উৎসব,১লা বৈশাখ।
======================
Ketaki Basu
97/3 Haridash Dutta road
Post.joynagar Majilpur
dist.24pgs (s)
West Bengal