ছবি - সংগৃহীত
দহন
অশোক দাশ
তাপদগ্ধ ধরিত্রীর বুকে তীব্র দহন জ্বালা। আগুনের হলকা যেন পুড়িয়ে দিচ্ছে সব সবকিছু। ফুটিফাটা মাঠ, শুষ্ক খাল বিল পুকুর। পানীয় জলের নলকূপে জল নেই। এ এক তীব্র অশনি সংকেত। গাছপালা বন বনানী জলের অভাবে ঝিমুচ্ছে শুকিয়ে যাচ্ছে।
এই খরতাপে দিন আনা দিন খাওয়া মানুষগুলো কাজ করে চলেছে প্রিয়জনের মুখে একমুঠো অন্ন তুলে দেয়ার জন্য। মিজানুর তাদেরই মত একজন দিনমজুর। বয়স তার প্রায় ষাটের কাছাকাছি।সে রাজমিস্ত্রির জোগাড়ে। সুদূর মুর্শিদাবাদ থেকে হাওড়ার প্রতন্ত্য গ্রামে এসেছে কাজ করতে।এই গরমে শরীর তার একদম বইছে না। ইঁটের বোঝা মাথায় নিয়ে বাঁশের ভারায় উঠতে উঠতে হঠাৎ মাথা ঘুরে পড়ে যায়। এবং অচৈতন্য হয়ে পড়ে। সকলেই তাকে ধরাধরি করে ছায়া ঘেরা জায়গায় নিয়ে আসে মাথায় জল ঢালতে থাকে। ডাক্তার আসে এবং মিজানুর কে দেখে বলেন সব আশা শেষ, হিট স্টকে সে মারা গেছে।
সরকারি সতর্কবার্তা আগাম আবহাওয়ার খবর পারে না গরিব মানুষের পেটের দহন কে নিবৃত্তি করতে।সব হাতে কাজ, কাজের নিরাপত্তা, যতদিন না সুনিশ্চিত হয় ,ততদিন মিজানুরের মত অসংখ্য হতভাগ্য গরিবকে অকালে এ পৃথিবী থেকে বিদায় নিতে হবে।
প্রকৃতির ওপর নির্মম যথেচ্ছ অত্যাচারের ফলে আবহাওয়া জলবায়ু ভারসাম্যের প্রভাব সবেমাত্র পড়তে শুরু করেছে। মানুষ সচেতন না হলে আগামী দিনে মানুষই নিজের কবর রচনা করবে।
---------------------------------------
অশোক দাশ
ভোজান, রসপুর, হাওড়া, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত।