প্রদীপ কুমার দে
ছয়বছরের ওস্তাদের থেকে পাঁচগুণ বেশী শব্দ হাঁকানোর মালকিন হল এ জন্মের সর্বজ্ঞানময়ী আমার সাতজন্মের গার্জেন মুক্তি!
ঘুম ভেঙে থেকেই জ্বালা যন্ত্রণার শেষ নেই। একে পুত্রের অন্যায় আবদার আর তার সাথে সমান তালে তাল ঠোকা ওই ওস্তদেরই গর্ভধারিণী মুক্তির ওজর।
অনেক গুনে আমি রাখাল এই সবজান্তা গুনের অধিকারিণীর সাথে গাঁটছড়ার বাঁধার অধিকার হরণ করতে পেরেছি, হরধনু ভঙ্গ না করেই।
চিৎকার কাকে বলে,
-- হেলেদুলে অফিসের নামে গিলে উদর ভরে এবার বের হচ্ছো হও কিন্তু সবার কথা মনে রেখে সব জিনিস কিনে ঘরে ঢুকবে ...
-- রোজই তো আনছি, সকাল বিকাল।
-- তাতে কি আমার মাথা কিনে নিয়েছো নাকি? আমাকে আনার সময় মনে ছিল না, বছর বছর বাড়বে?
-- বাজে কেন বকো? কি আনতে হবে বলো?
-- ওস্তাদের ভাত রুটিতে অরুচি। ম্যাগী, প্যাস্ট্রী, পাস্তা, পিৎজা, মাটন রোল, চিকেনবার্গার, ক্যাডবেরী, কোল্ডড্রিংক্স ....
যা যা আছে সব এনে ফ্রিজে রাখো। মা হয়ে ছেলে খাবে না এ আমি সহ্য করতে পারবো না, তোমার মতোন ....
-- তাবলে এসব খাওয়া কি ঠিক? তুমি ঘরে খাবার তৈরী করে দাও?
-- আমি কি চাকরানী না কি? অতো সময় নেই। আমার নিজের ব্যাপার আছে। ও এইসবই খেতেই ভালবাসে, তা ছাড়া তুমি আর কতটুকু জানো, পড়েছিলে তো সেই বস্তা পচা সরকারি স্কুলে এইসব খাবারে অনেক প্রোটিন ভিটামিন আছে,.মেলা বকো না এখন যাও ..
যেমন বাপ মা তেমন তার ছেলে ... রাখাল, তো মাথায় গরুর বুদ্ধি!
অফিস যাবো কি, মাথা ঘুরছে ....কত কথা মনে আসছে ... হয়তোবা দুঃখে!
ছোটবেলায় একদিন আমিও ভাত ডাল তরকারি দিয়ে মেখে খেতে চাইছিলাম না। বায়না করছিলাম মাছের জন্য , -- মা, আর কিছু নেই?
-- না, বাবা আজ এই দিয়েই খেয়ে নে ...
আমিও বায়না করছি। মা ও বুঝাচ্ছে। আমি চেঁচামেচি শুরু করতেই মা এসে এমন কিল মারলো পিঠে, আমি শ্যায়েস্তা হয়ে গেলাম এক মিনিটেই।
তারপর?
হা - হা - হা -
তারপর মা কোলে বসিয়ে আদর করে সেই ডাল তরকারি মাখা ভাত মুখে তুলে দিল ... আহাঃ যেন অমৃত!